লোকসভা নির্বাচনের প্রথম তিন দফাতেই ভোটের হার কম। আর এটিকে অশনি সংকেত দেখছে ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপি। বিজেপি শিবিরের আশঙ্কার কারণ, সাম্প্রতিক অতীতে একমাত্র ১৯৯৯ সালের নির্বাচন ছাড়া যতোবারই কম ভোট পড়েছে, প্রতিবারই সরকার বদল হয়েছে।
এবার যে, ২০১৪ সাল ও ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের মতো ‘মোদি হাওয়া’ বইবে না, তা আগেই টের পেয়েছিলেন বিজেপি নেতৃত্ব।
এনডিটিভি জানিয়েছে, তার উপরে প্রথম দিন দফায় মোট ২৮৩টি লোকসভা কেন্দ্রেই ভোটের কম হার বিজেপি শিবিরের চিন্তা বাড়িয়েছে।
এদিকে বিজেপি সূত্র বলছে, লোকসভার ৫৪৩টি আসনের মধ্যে অর্ধেকের বেশি আসনে ভোটগ্রহণ হয়ে গেছে। এই ২৮৩টি আসনের মধ্যে এনডিএ খুব বেশি হলে ১৫০ আসনে জিততে পারে। ফলে, চারশো পার করার সম্ভাবনা এখনও দূরের স্বপ্ন।
অন্যদিকে কংগ্রেস দাবি করেছে, প্রথম দুই দফার ভোটের মতো তৃতীয় দফায় ভোট হওয়া ৯৩টি আসনের সিংহভাগ আসন ‘ইন্ডিয়া’ জোট পেতে যাচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (৯ মে) তেলঙ্গানায় নরেন্দ্র মোদি দাবি করেন, তিন দফায় ভোটের পরে ইন্ডিয়া জোটের ফিউজ উড়ে গেছে। বিজেপির নেতৃত্বে এনডিএ জয়ের দিকে এগোচ্ছে বলেও দাবি করেছেন তিনি।
কিন্তু বিজেপি সূত্র বলছে, তৃতীয় দফায় যে ৯৩টি লোকসভা কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হয়েছে, তার মধ্যে মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ ও মহারাষ্ট্রে ভোটের হার কিছুটা বাড়লেও বিহারে ভোটের হার কমেছে। এই ৯৩টি লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে গত লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি তথা এনডিএ ৭১টি আসনে জিতেছিল।
এক্ষেত্রে বিজেপি সূত্রের বক্তব্য, ১৯৯১ সালে যখন নরসীমা রাও সরকার ক্ষমতায় আসে, তার আগে ১৯৮৯ সালে যখন বিশ্বনাথ প্রতাপ সিংহের সরকার ক্ষমতায় এসেছিল, প্রতিবারই ভোটের হার কম ছিল।
একমাত্র ১৯৯৯ সালে বাজপেয়ী সরকার যখন ১৩ মাস ক্ষমতায় থাকার পরে ফের ভোটে জিতে ক্ষমতায় আসে, তখন ভোটের হার বেশি ছিল। ২০১৪ সাল ও ২০১৯ সালেও যথেষ্ট ভোট পড়েছিল। কিন্তু, সেবার নরেন্দ্র মোদির পক্ষে প্রবল হাওয়া ছিল। এবার তা নেই। তার বদলে নির্বাচনে স্থানীয় বিষয় উঠে আসছে।
কংগ্রেসের সাংগঠনিক সম্পাদক কে সি বেণুগোপাল বলেছেন, তৃতীয় দফায় ভোটগ্রহণের পরে সসব আসন থেকে যে রিপোর্ট আসছে, তাতে স্পষ্ট, বিজেপি ঐতিহাসিক হারের মুখে পড়তে চলেছে। প্রথম দুই দফায় ভোটের পরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নিজেই হোয়াটসঅ্যাপ ইউনিভার্সিটির ভুয়ো জিনিসপত্র নিয়ে কথা বলতে শুরু করেছেন।
বেণুগোপাল আরও বলেন, ‘এ সবই মোদির মরিয়া ভাবের প্রমাণ। উনি দেখতে পাচ্ছেন, পায়ের তলা থেকে জমি সরে যাচ্ছে। এর পরে উনি আরও মিথ্যে বলবেন। বিদ্বেষ ছড়াবেন। ইন্ডিয়া পক্ষে ঢেউ উঠছে।’
বিজেপি অবশ্য আশা করছে, এখনও চতৃর্থ দফার ভোটগ্রহণ বাকি। মোদির পক্ষে হাওয়া ওঠার সময় এখনও রয়েছে।