ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরাইলি সেনাদের নির্যাতনের ভয়াবহতা আবারও প্রকাশ্যে এসেছে। ইসরায়েলি সেনাদের লেলিয়ে দেওয়া কুকুরের আক্রমণে মারা গেছেন ডাউন সিনড্রোমে আক্রান্ত তথা এক শারীরিক ও বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী তরুণ।
মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট আইয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়, অমানবিক এ ঘটনা ঘটেছে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার সুজাইয়াতে।
শুক্রবার (১২ জুলাই) প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২৪ বছর বয়সী মোহাম্মদ বাহর পরিবারের সঙ্গে থাকত। তিনি ডাউন সিনড্রোমে আক্রান্ত ছিল। সাধারণত ডাউন সিনড্রোমে আক্রান্তদের শারীরিক, মানসিক বিকাশের অভাব থাকে। তারা স্বাভাবিক মানুষের মতো জীবনযাপনে অক্ষম।
ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন মোহাম্মদ বাহরের মা নাবিলা আহমেদ। তিনি বলেন, গত ২৭ জুন থেকে সুজাইয়াতে দখলদার ইসরায়েলের সেনারা ব্যাপক হামলা চালায়। ওই দিন থেকে নিজেদের বাড়িতে লুকিয়ে ছিলেন তারা। এর মধ্যে একদিন বাড়িতে প্রবেশ করে ইসরায়েলি সেনারা। এসেই প্রথমে একটি কুকুরকে বাড়ির ভেতরে ছেড়ে দেয়। ওই কুকুরটি মোহাম্মদকে কামড়ে ধরে ছিন্নভিন্ন করে ফেলে।
আপেক্ষ করে মোহাম্মদ বাহরের মা বলেন, প্রতিবন্ধী হওয়ার পরও মোহাম্মদকে ছেড়ে দেওয়া হয়নি। এর বদলে বাড়ি থেকে সবাইকে বের করে দিয়ে তাকে আলাদা একটি রুমে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই সময় সেই রুম থেকে প্রচণ্ড চিৎকার করছিলেন মোহাম্মদ। চিৎকার শোনা ছাড়া আর কিছুই দেখতে পারেননি তার মা।
দখলদার ইসরায়েলিরা সুজাইয়া থেকে চলে যাওয়ার পর গত বুধবার মোহাম্মদের পরিবার দ্রুত তাদের বাড়িতে যান। সেখানে গিয়ে দেখতে পান বাড়িতে পড়ে আছে মোহাম্মদের গলিত মরদেহ। মোহাম্মদের মুখমণ্ডল খাচ্ছিল পোকামাকড়ে। যা ছিল হৃদয়বিদারক।
নাবিলা আহমেদ আরও বলেন, মোহাম্মদ এতটাই অবুঝ ছিলেন যে, তাকে খাইয়ে দিতে হতো। এমনকি তার ডায়াপারও পরিবর্তন করে দিতে হতো। সে ছিল এক বছর বয়সী শিশুর মতো।