নির্বাচনী প্রচারণায় সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওপর গুলি চালানো টমাস ম্যাথিউ ক্রুকস রিপাবলিকান পার্টির নিবন্ধিত ভোটার ছিলেন।
রোববার (১৪ জুলাই) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া অঙ্গরাজ্য পর্যায়ের একটি ভোট-সংক্রান্ত নথিতে দেখা গেছে, টমাস ম্যাথিউ ক্রুকসের জন্ম ২০০৩ সালের ২০ সেপ্টেম্বর। ওই নথি অনুযায়ী, তিনি ট্রাম্পের রিপাবলিকান পার্টির নিবন্ধিত একজন ভোটার।
সেই সঙ্গে ভোটার স্ট্যাটাসের ঘরে ক্রুকসকে ‘সক্রিয়’ হিসেবে লেখা হয়েছে।
শনিবার (১৩ জুলাই) যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যে নির্বচনী প্রচার সমাবেশে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে লক্ষ্য করে গুলি করা হয়। গুলির শব্দ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ট্রাম্প মঞ্চে বসে পড়েন। পরে গোয়েন্দা সংস্থার তাকে টেনে তুললে তার কান ও মুখমণ্ডল দিয়ে রক্ত ঝরতে দেখা যায়। পরে ট্রাম্প উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেন তখন ট্রাম্প মুষ্টিবদ্ধ হাত ওপরে তুলে বলে ওঠেন, ‘ফাইট, ফাইট, ফাইট!
প্রত্যক্ষদর্শী হামলার ঘটনার বর্ণনায় বলেছেন, ট্রাম্পের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সিক্রেট সার্ভিস টিম মুহূর্তের মধ্যে গুলি করে হামলাকারীর মাথা উড়িয়ে দিয়েছিল।
এদিকে দেশটির কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা (এফবিআই) জানিয়েছে, হামলাকারীর ২০ বছর বয়সী থমাস ম্যাথিউ ক্রুকস। বিবিসির খবর বলছে, হামলাকারী ক্রুকস পেনসিলভানিয়ার বেথেল পার্ক এলাকার বাসিন্দা। বাটলার থেকে এই শহরের দূরত্ব ৭০ কিলোমিটার। গুলির এই ঘটনাকে হত্যাচেষ্টা ধরে তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে সিক্রেট সার্ভিস।
এতো নিরাপত্তার মধ্যে কিভাবে এমন হামলার ঘটনা ঘটলো তা নিয়ে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওপর হামলাকারী যুবকের দিকে আগে থেকেই নজর ছিল স্নাইপারের। তাহলে কেন এই ঘটনা ঘটল? কেন আগেই শুটারকে থামানো গেল না।
মার্কিন প্রশাসন সূত্রে খবর, ট্রাম্প যেখানে দাঁড়িয়ে বক্তব্য দিচ্ছিলেন, তার থেকে মাত্র দেড়শো মিটার দূরে ছিলেন হামলাকারী। একটি এক তলা বাড়ির ছাদে উঠে গুলি চালান তিনি। জোসেফ নামের এক প্রত্যক্ষদর্শী যুবক বলেন, আমি পর পর অনেকগুলো গুলির শব্দ শুনতে পেয়েছিলাম। আমার পাশের এক ব্যক্তি গুলি খেয়ে লুটিয়ে পড়েন। তার ঠিক মাথায় গুলি লেগেছিল। আর এক মহিলাকেও দেখলাম বসে পড়তে। তার হাতে গুলি লেগেছে।
বিবিসিকে এক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, তিনি হামলাকারীকে বন্দুক হাতে এক তলা বাড়ির ছাদে উঠতে দেখেছিলেন। তিনিই চিৎকার করে নিরাপত্তা বাহিনীকে সতর্ক করেন। কিন্তু তার আগেই ট্রাম্পকে লক্ষ্য করে গুলি চালিয়ে দেন। তবে তিনি লক্ষ্যভ্রষ্ট হন।
প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, সিক্রেট সার্ভিস টিম হামলাকারীর মাথা গুলি করে। তার পর তারা হামাগুড়ি দিয়ে ছাদে উঠেছিল। হামলাকারীর মৃত্যু নিশ্চিত করতে বন্দুক তাক করেই এগোচ্ছিল টিম। কিন্তু ততক্ষণে হামলাকারীর মৃত্যু হয়েছিল।