পূর্ব এশিয়ার দেশ তাইওয়ানের দিকে ধেয়ে আসছে সুপার টাইফুন কং-রে। বুধবার (৩০ অক্টোবর) দেশটি থেকে এক সতর্কবার্তায় বলা হয়, আগামীকাল বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) দ্বীপ দেশটির পূর্ব উপকূলের জনবহুল এলাকায় কং-রে আছড়ে পড়বে। এটি পুরো এলাকাজুড়ে ভারী বৃষ্টির পাশাপাশি শক্তিশালী ঝড়ের বেগে আঘাত হানবে।
বুধবার (৩০ অক্টোবর) মার্কিন গণমাধ্যম দ্য নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
মার্কিন নৌবাহিনীর যৌথ টাইফুন সতর্কীকরণ কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, এটির বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৩০০ কিলোমিটার বেগে বয়ে যাবে। এর প্রভাবে ভূমিধস হতে পারে।
কং-রে বৃহস্পতিবার বিকেলের মধ্যে স্থলনিম্নচাপে পরিণত হওয়ার আগে পর্যন্ত প্রবল বাতাস এবং ভারী বৃষ্টিপাত ২৩ মিলিয়ন লোকের দ্বীপের বিভিন্ন অংশে আঘাত হানতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এদিকে এক সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, কিছু দূরবর্তী দ্বীপে কাজ ও ক্লাস স্থগিত করেছে এবং জেলেদের তাদের নৌযানগুলোকে নিরাপদ স্থানে থাকতে নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে।
দেশটির পরিবহন মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, দূরবর্তী দ্বীপগুলিতে বুধবারের জন্য অন্তত ২৬টি ফেরি চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
তাইওয়ানের বৃহত্তম অভ্যন্তরীণ ক্যারিয়ার ইউএনআই এয়ার বলেছে, সুপার টাইফুন কং-রে-এর কারণে বৃহস্পতিবারের সব ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে।
দেশটির আবহাওয়ার পূর্বাভাস প্রদানকারী কেন্দ্রীয় আবহাওয়া প্রশাসন জানিয়েছে, কং-রে তাইওয়ানের পূর্ব ও উত্তর উপকূলীয় অঞ্চল এবং মধ্য ও দক্ষিণ অঞ্চলের পাহাড়ে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত ঘটাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
পূর্বাভাসক চ্যাং চুন-ইয়াও জানিয়েছেন, ইইলান এবং হুয়ালিয়েনের পূর্ব কাউন্টি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এখানে মঙ্গলবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত বৃষ্টিপাত ৮০০ থেকে এক হাজার ২০০ মিলিমিটার (৩১ ইঞ্চি থেকে ৪৭ ইঞ্চি) বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে।
তিনি আরও জানান, টাইফুনের আনুমানিক পথের উপর ভিত্তি করে, আমরা ইয়ালান, হুয়ালিয়েন এবং তাইতুংকে সম্ভাব্য ভূমিধস এবং ভারী বৃষ্টিপাতের আশঙ্কায় এলাকায় ধ্বংসাবশেষ প্রবাহের বিরুদ্ধে সতর্কতা অবলম্বন করার পরামর্শ দিয়েছি।
তাইতুং কাউন্টির দুটি প্রধান দ্বীপে ক্লাস এবং কাজ স্থগিত করা হয়েছে, যেখানে ঝড়ের বর্তমান গতিপথের উপর ভিত্তি করে টাইফুনটি সরাসরি আঘাত হানতে পারে বলে মনে হচ্ছে।
তাইওয়ানের দূরবর্তী দ্বীপ কিনমেন এবং চীনা বন্দর নগরী জিয়ামেনের মধ্যে ফেরি পরিষেবাও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
উপক্রান্তীয় অঞ্চল হওয়ায় দেশটিতে প্রায়ই টাইফুনের কবলে পড়ে। এর আগে চলতি মাসের শুরুতেই টাইফুন ক্র্যাথন আঘাত হানে। এতে চারজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গিয়েছিল।