সৌদি তেল স্থাপনায় হামলা: অর্ধেকের নিচে উৎপাদন

মধ্যপ্রাচ্য, আন্তর্জাতিক

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম | 2023-08-26 01:52:21

সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন আর্মকোর কোম্পানির দুইটি তেল প্রক্রিয়াজাতকরণ স্থাপনায় ড্রোন হামলা চালায় ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা। এ হামলায় তেল স্থাপনা দুটিতে আগুন লেগে যায়। ফলে দেশটির বৃহৎ এ স্থাপনা দুটি থেকে তেল উৎপাদন অর্ধেকেরও নীচে নেমে এসেছে। এর প্রভাবে আন্তর্জাতিক তেলের বাজারে কয়েক দফায় তেলের দাম বেড়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশ্লেষকরা।

রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) দ্য ওয়াশিংটন পোস্টের এ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

প্রতিবেদনে জানানো হয়, সৌদি আরবের বৃহৎ দুইটি তেল স্থাপনায় হামলার ফলে ইতোমধ্যে তেল উৎপাদন অর্ধেকের নীচে নেমে এসেছে। একদিনের ব্যবধানে তেল উৎপাদন অর্ধেকের বেশি কমে যাওয়ায় কয়েক দফায় তেলের দাম বেড়ে যেতে পারে।

শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সৌদি আরবের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে তেল স্থাপনায় ড্রোন হামলার এ ঘটনা জানানো হয়। হামলায় তেল স্থাপনা দুটিতে আগুনের সূত্রপাত হয়। স্থানীয় টিভি ফুটেজের ভিডিওতে কালো ধোঁয়া ও আগুন ছড়িয়ে পড়তে দেখা যায়।

আরও পড়ুন, সৌদি আরবের তেল স্থাপনায় ড্রোন হামলা

প্রথমে এ হামলার দায় কেউ স্বীকার না করলেও পরে ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা এ হামলার দায় স্বীকার করেন। এমনকি এ হামলার পিছনে ইরানের সমর্থন রয়েছে বলেও ধারণা করা হচ্ছে।

সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়, এ দুটি স্থাপনায় হামলা করতে কমপক্ষে দশটি ড্রোন ব্যবহার করা হয়েছে।

সৌদি আরবের পূর্ব প্রদেশ দাহরানের ৬০ কিলোমিটার দূরে আবাকাইক তেল স্থাপনার অবস্থান। এবং দাহরানের দক্ষিণ-পশ্চিমে প্রায় ২০০ কিলোমিটার দূরে খুরাইশ তেল স্থাপনার অবস্থান। খুরাইশ তেল স্থাপনা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তর তেল স্থাপনা। সৌদি আরবের আর্মকোর কোম্পানি বিশ্বের সর্ববৃহৎ তেল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান। প্রতিদিন এ প্রতিষ্ঠানটি ৭০ লাখ ব্যারেল তেল উৎপাদন করে।

এদিকে এ আক্রমণটি ছিল বিগত কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় ধরনের হামলা। এর আগে ১৯৯১ সালে উপসাগরীয় যুদ্ধের সময় সাদ্দাম হোসেনর বাহিনী কর্তৃক সৌদি তেল স্থাপনায় আক্রমণ করা হয়। এরপরই শনিবারের হুথি বিদ্রোহীদের করা এ হামলা ছিল দ্বিতীয় বৃহৎ হামলা।

এ হামলায় নাসার একটি স্যাটেলাইট থেকে সৌদি আরবের দক্ষিণ-পশ্চিমের আকাশে ঘন কালো ধোঁয়ার কুণ্ডলী দেখা যায়। যেটি দেখে মনে হয়েছিল কালো দীর্ঘ স্রোত বয়ে যাচ্ছে।

আর্মকোর এক বিবৃতিতে বলেছে হয়েছে, আক্রমণে পর ৫.৭ মিলিয়ন ব্যারেল অপরিশোধিত তেল উৎপাদন স্থগিত করা হয়েছে। এ স্থাপনা দুটি থেকে দেশটির তেল উৎপাদনের অর্ধেকেরও বেশি কমিয়ে আনতে পারে। সৌদিআরব বিশ্বব্যাপী তেল সরবরাহের প্রায় ৬ শতাংশ প্রতিনিধিত্ব করে। ফলে এমন ঘাটতি তেলের দাম প্রচুর বাড়িয়ে দিতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। আর্মকোর বিবৃতিতে কতদিন পর্যন্ত এ উৎপাদন ব্যাহত হবে তার কোনও নির্দিষ্ট সময় বলা হয়নি।

এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি বিভাগ থেকে দেওয়া এক বরাতে জানানো হয়, তেল উৎপাদন কমে গেলে প্রয়োজনে দেশের জরুরি তেল মজুদে হাত দিতে হতে পারে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে বিশ্ববাজারে তেলের দাম কয়েকগুণ বেড়ে যেতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়। 

এ সম্পর্কিত আরও খবর