চীনে কমিউনিস্ট শাসনের ৭০ বছর উদযাপন

এশিয়া, আন্তর্জাতিক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম | 2023-08-26 15:50:59

চীনের কমিউনিস্ট শাসনের ৭০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দেশটির তিয়েনআনমেন স্কয়ারে ট্যাংক, ক্ষেপণাস্ত্র, সামরিক বিমান ও সাঁজোয়া যানের মহড়াসহ সামরিক বাহিনীর বিভিন্ন কার্যক্রম প্রদর্শিত হয়।

১৯৪৯ সালের ১ অক্টোবর তিয়ানানমেন রোস্ট্রামে দাঁড়িয়ে দলটির চেয়ারম্যান মাও সেতুং গণপ্রজাতন্ত্রী চীন ঘোষণা করেছিলেন। সেখানে দাঁড়িয়ে পতাকা উত্তোলনের পর হাজার হাজার লোকের সমাবেশে বক্তব্য রাখেন দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং।

বিশাল এই সমাবেশের উদ্দেশ্যে প্রেসিডেন্ট বলেন, এমন কোন শক্তি নেই যা এই মহান জাতির ভিত্তিকে কাঁপিয়ে দিতে পারে। এমন কোনও শক্তি যা চীন এবং চীনের জনগণকে সামনে এগিয়ে যেতে বাধা দিতে পারে।

এরপর, শি জিনপিং তিয়েনআনমেন স্কয়ারে একটি খোলা লিমোজিনে করে সেনা ও সামরিক সরঞ্জামের সারিগুলো ঘুরে দেখেন। এসময় তিনি "হ্যালো কমরেডস" বলে সম্বোধন করলে প্যারেডের সৈন্যরা চিৎকার করে "হ্যালো চেয়ারম্যান" বলে উত্তর দেন। আবার তিনি "ভাল কাজ কমরেড" ও "কঠোর পরিশ্রমী কমরেড" বললে সেনাদল "জনগণের সেবা করুন" বলে সাড়া দেন।

দেশটির প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এর আদেশে এবারই প্রথমবারের মত সাধারণ মানুষের সামনে চীনের সামরিক ক্ষমতা প্রদর্শন করা হয়। এসময় ১৫ হাজার সেনা বিশিষ্ট মহড়ায় ৫৮০টি ট্যাংকার, ১৬০টি ফাইটার জেটসহ অনেক গোপন অস্ত্র প্রদর্শিত হয়।

কমিউনিস্ট পার্টির ৭০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত প্যারেডে প্রদর্শিত অস্ত্রের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচিত ছিল গাড়ির চালিত বিশ্বাস্য গতির পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র ডিএফ-১৭। ব্যালিস্টিক পারমাণবিক এই ক্ষেপণাস্ত্রটি তৈরি করা হয়েছে বিমানবাহী রণতরী ও শত্রুপক্ষের সামরিক ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেয়ার জন্য। মাত্র ৩০ মিনিটেই যা লক্ষ্যে নির্ভুল আঘাত হেনে যুক্তরাষ্ট্রের মতো পরাশক্তিরও প্রতিরক্ষা লাইন ধসিয়ে দিতে পারে। ক্ষেপণাস্ত্রটি একসঙ্গে কয়েকটি পরমাণু বোমা বহন করতে সক্ষম এবং বিশ্বের যেকোনো স্থানে আঘাত হানতে পারে। একইসময়ে ১০টি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুকে আক্রমণে সক্ষম এই অস্ত্রটি। সামরিক শক্তিকে ওয়াশিংটন ও বিশ্বের অন্যান্য শক্তির সমকক্ষ হওয়ার লক্ষ্যে এসব অস্ত্রকে বেইজিংয়ের বড় অর্জন হিসেবে দেখছে দেশটির অস্ত্র বিশ্লেষকরা।

দিবসটি উদযাপনের জন্য বেইজিংয়ের একটি প্রধান রাস্তার দীর্ঘ অংশ বন্ধ করে দেওয়া হয়, এবং রাস্তার পাশের বিল্ডিংগুলিতে চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। তিয়ানানমেন স্কয়ারে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানটি কেবল আমন্ত্রিত অতিথিদের জন্য উন্মুক্ত। তবে টেলিভিশনের মাধ্যমে দেশব্যাপী সরাসরি সম্প্রচারিত হচ্ছে।

এদিকে, ৭০ বছর পূর্তির এই বছরটিতেই চীনের শাসন থেকে বের হতে আন্দোলন চলছে হংকংয়ে। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপনে কমিউনিস্ট দেশটিতে অনেক আনন্দ বইলেও, বিক্ষোভে-স্লোগানে আরও ফুঁসে উঠছে স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল হংকং। স্বাধীনতার দাবিতে হংকংয়ের বিক্ষোভ আজকেও চলমান রয়েছে বলে জানা গেছে ।

উল্লেখ্য ১৯৪৯ সালের ১ অক্টোবর চিয়াং কাই-শেকের ন্যাশনালিস্ট সরকারকে পরাজয় করার মধ্যমে মাও সে তুংয়ের নেতৃত্বে চীনে কমিউনিস্ট পার্টির শাসন শুরু হয়। এই ৭০ বছর পর বর্তমানে দেশটি বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনৈতিক শক্তিতে পরিচয় লাভ করেছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর