কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়ায় হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার পর যখন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিল না, তখন চিরশত্রু যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সহায়তা চেয়েছিল ইরান।
তবে ‘কোনও কারণে’ ইরানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র দেশটিকে সেই সহায়তা করতে পারেনি বলে জানিয়েছেন স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।
মঙ্গলবার (২১ মে) বার্তাসংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ম্যাথিউ মিলার সাংবাদিকদের বলেন, ‘রাইসির হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হওয়ার পর ইরান সরকার আমাদের কাছে সাহায্য চেয়েছিল। আমরা বলেছিলাম- আমরা সহায়তা করতে ইচ্ছুক। এটি আসলে এমন কিছু যা আমরা এই পরিস্থিতিতে যেকোনো সরকারের ক্ষেত্রেই করব। তবে শেষ পর্যন্ত মূলত লজিস্টিক্যাল কিছু কারণে, আমরা ইরানকে সেই সহায়তা প্রদান করতে পারিনি।’
এই বিষয়ে আরও বিস্তারিতভাবে তথ্য প্রকাশ করতে বা দুই দেশের মধ্যে কীভাবে যোগাযোগ করেছিল তা বর্ণনা করেননি ম্যাথিউ মিলার। কিন্তু তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন, দুর্ঘটনার মুখে পড়ার পর অবিলম্বে রাইসির হেলিকপ্টার খুঁজে পেতে সাহায্য চেয়েছিল ইরান।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, দীর্ঘ তল্লাশি অভিযান শেষে পাহাড়ি ও তুষারাবৃত এলাকা থেকে রাইসিসহ সবার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার মুখে পড়ার পর প্রধান শত্রু ইরান তাদের কাছে সহায়তা চেয়েছিল বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে ‘ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও’ সেই সহায়তা করতে পারেনি দেশটি।
১৯৭৯ সালের ইসলামী বিপ্লবের পর থেকে ওয়াশিংটনের সাথে তেহরানের কোনও কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই। মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনা এমন এক সময়ে ঘটল যখন ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে খোলামেলা সংঘর্ষের পর স্থিতিশীলতা আরও বাড়ানোর লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইরান ওমানে বেশ গোপনেই তাদের সর্বশেষ আলোচনা সম্পন্ন করেছে।
এদিকে প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির মৃত্যুতে ‘আনুষ্ঠানিক শোক’ জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘ইরান নতুন প্রেসিডেন্ট বেছে নেওয়ার সাথে সাথে আমরা ইরানের জনগণ এবং মানবাধিকার ও মৌলিক স্বাধীনতার জন্য তাদের সংগ্রামের প্রতি আমাদের সমর্থন পুনর্নিশ্চিত করছি।’
অবশ্য প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন এই শোক ও সমবেদনা প্রকাশকে রাইসির প্রতি সমর্থন হিসেবে নয় বরং বৈশিষ্ট্যসূচক মানদণ্ড হিসাবে বর্ণনা করেছে। ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের মুখপাত্র জন কিরবি সাংবাদিকদের বলেন, ‘রাইসি এমন একজন লোক ছিলেন যার হাতে প্রচুর রক্তের দাগ ছিল’।