ভারতের আধ্যত্মিক গুরু ‘কল্কি ভগবান’র বিভিন্ন আশ্রমে হানা দিয়ে হিসাব বহির্ভূত ৫০০ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে আয়কর বিভাগ। এসময় হিসাব বহির্ভূত নগদ ৯৩ কোটি টাকা উদ্ধার হয়েছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ‘এনডিটিভি অনলাইন’এ খবর প্রকাশ করেছে।
খবরে বলা হয়, শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) ধর্মগুরু ‘কল্কি ভগবান’-এর প্রতিষ্ঠিত ৪০টি প্রতিষ্ঠানে এ অভিযান চালানো হয়। তার আশ্রমে ১৮ কোটি টাকার মূল্যের নগদ মার্কিন ডলার উদ্ধার হয়েছে। বাজেয়াপ্ত হয়েছে ৮৮ কেজি সোনা, যার মূল্য ২৬ কোটি টাকা এবং ১ হাজার ২৭১ ক্যারেটের হিরে। সব মিলিয়ে মোট ৫০০ কোটি টাকার হিসাব বহির্ভূত সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছেন আয়কর অফিসাররা।
সংবাদমাধ্যমটি আরও জানায়, চেন্নাই, হায়দ্রাবাদ, ব্যাঙ্গালোর ও অন্ধ্র প্রদেশের ভরদ্বাজপালেমে তার অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে এখনো অভিযান চলছে।
এনডিটিভি বলছে, ব্যাঙ্গালোর ও ভরদ্বাজপালেমে আবাসিক এলাকায় ‘কল্কি ভগবান’ একেশ্বরবাদ, দর্শন ও আধ্যত্মিক প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। বিদেশে তিনি তার প্রচারণা চালাতেন। চীন, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও সিঙ্গাপুর থেকে শিষ্যরা এ প্রশিক্ষণে অংশ নেন। তাদের কাছ থেকেই নগদ মার্কিন ডলার পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
সংবাদমাধ্যমটি জানায়, ভারত ও বিদেশে একাধিক রিয়েল স্টেট, কনস্ট্রাকশন ও স্পোর্টস কোম্পানির নিয়ন্ত্রণ ও দেখভাল করতেন ‘কল্কি ভগবান’। তার আশ্রম ও কোম্পানির ব্যাংক হিসেবে দেখভালের দায়িত্বে ছিলেন স্ত্রী পদ্মাবতী এবং ছেলে এনকেভি কৃষ্ণ।
‘কল্কি ভগবান’র আসল নাম বিজয় কুমার। শুরু থেকেই তার আত্ম্যাধিক বিষয়ে ঝোঁক ছিল। নব্বইয়ের দশকে তিনি নিজেকে কৃষ্ণের দশম অবতার ‘কল্কি’ হিসাবে ঘোষণা করেন। গত তিন দশকে মতাদর্শ প্রতিষ্ঠা করে নিজেকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে যান।
এক সময় তিনি ভারতের বীমা কোম্পানি এলআইসির কেরানি পদে কর্মরত ছিলেন। আশির দশকের মাঝামাঝি তিনি চাকরি ছেড়ে দিয়ে খোলেন ‘জীবাশ্রম’ নামের একটি স্কুল। শিষ্যদের আধ্যাত্মিক পাঠ দিতেন সেখানে। ক্রমে তার শিষ্যের সংখ্যা বাড়তে থাকে। চিত্তুরে ‘ওয়াননেস’ নামে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ও প্রতিষ্ঠা করেন কল্কি ভগবান। অনেক সেলিব্রেটি এবং বড় ব্যবসায়ীও তার শিষ্য বনে যান।