মোদি মানেই চমক! মোদি মানেই ম্যাজিক! ভারতের রাজনীতির অঙ্গনে ‘মোদি ম্যাজিক’ শব্দটি এখন বহুল ব্যবহৃত।
আর সেই ম্যাজিক নিয়ে রোববার (২৭ অক্টোবর) ঝটিকা সফরে অবরুদ্ধ কাশ্মীরে হাজির হয়েছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ভারতের সংবিধান থেকে অনুচ্ছেদ ৩৭০ ও ৩৫ (এ) মুছে ফেলার পর প্রথমবারের মতো বিরোধপূর্ণ এই অঞ্চলে হাজির হন ভারতের সরকার প্রধান।
জুম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের পর উপত্যকায় পাকিস্তানিদের সঙ্গে প্রতিনিয়ত সংঘর্ষে লিপ্ত হচ্ছে ভারতীয় বাহিনী। গত কয়েকমাসে কমপক্ষে ৬০ জন ভারতীয় সেনা সীমান্তে বন্দুকযুদ্ধে মারা গেছে। কিন্তু লাইন অব কন্ট্রোলে দায়িত্বরত সেনারা এক ইঞ্চিও ছাড় দেবেনা পাকিস্তানিদের। এটাই তাদের পণ।
অন্যদিকে অবরুদ্ধ কাশ্মীর নিয়ে প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ভারতকে কোণঠাসা করতে ব্যস্ত। কখনো তারা সফল, কখনো ব্যর্থ। এমন পরিস্থিতিতে কাশ্মীরে নিয়োজিত ভারতীয় সেনাদের পাশে উপস্থিত হয়ে মোদি আবারো ঘোষণা দিলেন-কোনো ছাড় নয়।
রাজৌরীতে উপস্থিত হওয়ার তথ্য নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পোস্টে নিশ্চিত করে মোদি বলেন, জুম্মু কাশ্মীরের রাজৌরী জেলায় আমাদের বাহাদুর সেনাদের সঙ্গে দিওয়ালি উদযাপন করেছি।
ভারতে আজ দিওয়ালি উদযাপিত হচ্ছে। দিওয়ালিতে পরিবার থেকে দূরে থাকা সেনাদের সঙ্গে উৎসবের আনন্দভাগ করে নিতে সরাসারি রাজৌরীর আর্মি বিগ্রেড হেডকোয়ার্টারে চলে যান মোদি। সেখানে নিয়োজিত সেনাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন তিনি। সেনাদের নিয়ে দিওয়ালি উদযাপনও করেন। তাদেরকে মিষ্টিমুখ করান বলেও জানান কর্মকর্তারা।
মোদি টুইটারে বলেন, বাহাদুর এসব সেনাদের সঙ্গে মিথস্ক্রিয়ার সুযোগ পাওয়া সব সময় আনন্দের।
সেনাদের সঙ্গে আলাপকালে, আকাশচুম্বী সেবার জন্য ভারতের জনগণের পক্ষ থেকে আমি তাদেরকে ধন্যবাদ জানাই। তাদের সতর্ক পাহারা ও বীরত্ব দেশকে নিরাপদ রেখেছে।
রাজৌরী থেকে ফেরার পথে মোদি পাঠানকোটেও যাত্রা বিরতি করেন। সেখানে বিমান বাহিনীর ঘাঁটিতে বিমান সেনা ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
প্রধানমন্ত্রীকে হঠাৎ কাছে পেয়ে সেনারাও বেশ উল্লসিত হয়ে পড়ে। সেনাদের একজন বলেন, ‘ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা হবে এটা কল্পনাতেও ছিল না। অথচ তার জন্যই দিওয়ালিটা স্মরণীয় হয়ে গেল।
মোদির সফরকে চমক হিসেবে বর্ণণা করে তিনি বলেন, ‘তার সঙ্গে দেখা হওয়ার পর আমরা অনেক খুশি ও গর্বিত।
এই নিয়ে তৃতীয়বারের মত নরেন্দ্র মোদি সেনাদের সঙ্গে নিয়ে দিওয়ালি আনন্দ ভাগাভাগি করে নিলেন। ২০১৪ সাল থেকে তিনি এটা করে চলছেন। সে সময় প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার পরই লাদাখের সিয়াচেন প্রদেশে নিয়োজিত সেনাদের সঙ্গে দিওয়ালি উদযাপন করেছিলেন।
২০১৭ সালে উত্তর কাশ্মীরের গুরেজ সেক্টরে নিয়োজিত সেনাদের নিয়ে দিওয়ালি উদযাপন করেন।
২০১৫ সালের দিওয়ালির সময় তিনি পাঞ্জাব সীমান্ত পরিদর্শনে যান। পরের বছর তিনি হিমাচল প্রদেশে যান যেখানে ভারত-তিব্বত সীমান্ত পুলিশদের সঙ্গে এক ঘাঁটিতে দিওয়ালি উদযাপন করেন। পরের বছর উত্তরাখণ্ডের ভারত-চীন সীমান্ত সংলগ্ন বরফাচ্ছাদিত ভূখণ্ডে সেনা ও সীমান্ত পুলিশ নিয়ে উৎসব পালন করেন।