আন্তর্জাতিক বিচারিক আদালতে মিয়ানমার রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে গণহত্যার অভিযোগের মুখোমুখি হওয়া অং সান সু চির জন্য ভক্তরা তার সফরের খরচ তুলতে শুরু করেছে।
শুধু তাই নয় এ বিচারে মিয়ানমারকে নৈতিক সমর্থন দিতে দেশটির বিভিন্ন প্রান্তে সুচির সঙ্গে সেনাবাহিনীর নেতাদের ছবি সম্বলিত বিলবোর্ড স্থাপন করা হয়েছে। বেশ কিছু জায়গায় সমর্থক সমাবেশ, বিলবোর্ড এবং অনলাইনে পাশে থাকার কথা ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।
গত সপ্তাহে প্রায় এক হাজার সমর্থক মনোয়োয়া শহরের একটি সমাবেশে এসেছিল এবং তারা আরও নৈতিক সমর্থন দেওয়ার পরিকল্পনা করছে। প্রচারের অংশ হিসেবে বিলবোর্ড স্থাপন করা হচ্ছে।
এমন একটি বিলবোর্ডে দেখা যায়, পূর্ব মিয়ানমারের একজন নাগরিক বলছেন, আমরা আপনার সঙ্গে আছি’, নিচে সামরিক নিয়োগপ্রাপ্ত তিন মন্ত্রীর সঙ্গে সু চির হাস্যোজ্জ্বল ছবি, পেছনে রয়েছে আন্তর্জাতিক বিচারিক আদালতের ছবি।
এ বিচার প্রক্রিয়ায় সমর্থন দিতে মিয়ানমার নাগরিকদের জন্য একজন ট্র্যাভেল অপারেটর হেগেতে পাঁচ দিনের সফরের আয়োজন করছে। ২১৫০ মার্কিন ডলারের এ প্যাকেজের মধ্যে ভিসা ও পরিবহন খচর অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। সামাজিক প্রভাবশালী ব্যক্তি এবং সুপরিচিত টিভি উপস্থাপকসহ প্রায় ২০ জন এরই মধ্যে এ প্যাকেজ নিতে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন।
২৯ বছর বয়সী একজন সমর্থক বলেছেন, আমি বিশ্বাস করি, এটি নাগরিক হিসেবে আমাদের দায়িত্ব। এটি গুরুত্বপূর্ণ যে বিশ্ব জানুক দেশবাসী পুরোপুরি তার (সু চি) পেছনে রয়েছে।
রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে আন্তর্জাতিক বিচারিক আদালতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গাম্বিয়ার দায়ের করা মামলার শুনানির জন্য ১০ ডিসেম্বর থেকে ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত দিন নির্ধারণ করা হয়েছে।
প্রথম ধাপে ১০ ডিসেম্বর শুনানি করবে গাম্বিয়া। আর ১১ ডিসেম্বর শুনানি করবে মিয়ানমার। দ্বিতীয় ধাপে দুই দেশই শুনানিতে অংশগ্রহণ করবে। আর এ শুনানি সরাসরি প্রচার হবে।
আফ্রিকার মুসলিম রাষ্ট্র গাম্বিয়া গত ১১ নভেম্বর রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যা এবং জেনোসাইড কনভেনশন ভঙ্গের অভিযোগে আন্তর্জাতিক বিচারিক আদালতে (আইসিজে) মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করে।
মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১৬ সাল থেকে পরিকল্পিতভাবে রোহিঙ্গাদের নিধনের জন্য অভিযান পরিচালনা করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। আর ২০১৭ সোল থেকে ক্লিয়ারেন্স অপারেশনের নামে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যা চালায় মিয়ানমার। যারা এ গণহত্যার সঙ্গে জড়িত, ট্রাইব্যুনালে তাদের শাস্তির দাবি করা হয়েছে মামলায়। যদিও মিত্র চীন, ভারত, রাশিয়া এবং জাপান এ বিষয়ে নীরব ছিল।