বাস জ্বালিয়ে দিলো খোদ দিল্লি পুলিশ!

ভারত, আন্তর্জাতিক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম | 2023-08-30 08:30:42

নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে দিল্লির জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে রোববার (১৫ ডিসেম্বর) আশপাশের এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। শিক্ষার্থীদের এই বিক্ষোভ দমন করতে নামে দিল্লি পুলিশ। এসময় পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ওপর লাঠিচার্জ ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে। সহিংসতার সময় গাড়ি ভাঙচুর ও আগুন জ্বালিয়ে দেওয়ার ঘটনাও ঘটে।

এদিকে বিক্ষোভকারীদের ওপর পুলিশি হামলার বিভিন্ন ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এসব ভিডিওর একটিতে দিল্লি জামিয়া নগরে জ্বলন্ত একটি বাসে জার দিয়ে সাদা তরল পদার্থ সদৃশ কিছু ছিটিয়ে দিতে দেখতে পাওয়া যায় এক পুলিশ সদস্যকে।

ভিডিওটি প্রকাশের পর দিল্লি পুলিশের বিরুদ্ধে নিন্দা ঝড় উঠেছে। কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন সরকারের ইন্ধনে দিল্লি পুলিশ এমন আচরণ করছে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন দিল্লির উপ-মুখ্যমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী মনিশ সিসোদিয়া। বাসে আগুন জ্বালানো ও নারীদের শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার তিনটি ছবি টুইটারে শেয়ার করেছেন তিনি।

ছবির সাথে হিন্দি ভাষায় ওই টুইট বার্তায় সিসোদিয়া লিখেন, 'দেখুন এই ছবিটি…কে বাস ও কারে আগুন জ্বালাচ্ছে…বিজেপি যে ঘৃণ্য রাজনীতি করে তার প্রমাণ এই ছবি। বিজেপি নেতারা কি এর উত্তর দিতে পারবে?'

দিল্লি পুলিশ নিয়ন্ত্রণ করে কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে সব কাজের জবাবদিহিতা করে দিল্লি পুলিশ। কেন্দ্রীয় সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বিজেপির সভাপতি অমিত শাহ। দিল্লিতে সরকার চালাচ্ছে বিজেপির সমালোচনাকারী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের দল আম আদমি পার্টি।

তবে বাসে পুলিশ সদস্যের আগুন লাগানোর বিষয়টি অস্বীকার করেছে দিল্লি পুলিশ। পুলিশের জনসংযোগ কর্মকর্তা স্থানীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভিকে জানিয়েছে, 'আপনাকে পুরো ভিডিওটি দেখতে হবে। বাসটিতে বাইর থেকে আগুন জ্বলছিলো। পুলিশ পানি দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করছে।'

পুলিশের জনসংযোগ বিভাগ থেকে আরও বলা হয়, 'আমরা যখন বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করছিলাম, তখন (জামিয়া ইসলামিয়া) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতর থেকে পাঁথর ছুঁড়ে মারা হচ্ছিলো। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে আমরা কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়ে মারি। এটা খুবই ভয়াবহ পরিস্থিতি ছিলো।'

বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া দক্ষিণ-পূর্ব দিল্লির উপ-পুলিশ কমিশনার চিন্ময় বিসওয়াল মনিশ সিসোদিয়ার অভিযাগকে মিথ্যা হিসেবে উল্লেখ করেন।

জামিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে, তাদের অনুমতি ছাড়াই জোরপূর্বক ক্যাম্পাসে ঢুকে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেছে পুলিশ।

তবে, পুলিশের অভিযানের পক্ষে সাফাই গেয়ে চিন্ময় বিসওয়াল বলেন, 'সেখানে দেড় থেকে দুই হাজারের বেশি মানুষ ছিলো। তারা শিক্ষার্থী না স্থানীয় আমরা বলতে পারি না।' প্রথমে শান্তিপূর্ণভাবে তাদের থামাতে চেষ্টা করলেও বিক্ষোভকারীরা আগ্রাসী ও সহিংস হয়ে ওঠে বলে দাবি করেন তিনি।

চিন্ময় বিসওয়াল জানান, পুলিশ জোর করে তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে নিয়ে যাওয়ার সময় উন্মুক্ত সড়কে সহিংসতা শুরু হয়।

আরো পড়ুন: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিক্ষোভ, চলছে ধরপাকড়

এ ঘটনায় বহুসংখ্যক শিক্ষার্থী ও বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হয়। আহতদের একজনকে স্থানীয় হাসপাতলে নিবীড় পরিচর্যা কেন্দ্রে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

এদিক রোববারে বাসে আগুন দেওয়া ও শিক্ষার্থীদের হামলার অভিযোগ দিল্লি পুলিশ অস্বীকার করার দিনই এক ভিডিওতে উত্তরপ্রদেশের আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে পার্কিং করা মোটর সাইকেল ভাঙচুর করতে দেখা গেছে পুলিশকে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর