করোনা ঠেকাতে ইতালির ৬০ মিলিয়ন মানুষ ঘরবন্দী

ইউরোপ, আন্তর্জাতিক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-24 18:07:18

প্রাণঘাতী করোনভাইরাসের বিস্তার রোধে দেশের সব মানুষ অর্থাৎ ৬০ মিলিয়ন মানুষের ঘরের বাইরে বের হওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ইতালি সরকার। সেল্ফ কোয়ারেন্টাইনের (নিজস্ব কোয়ারেন্টাইন) অংশ হিসেবে দেশবাসীর ওপর এ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হলো।

একই উপায়ে চীনে এ মহামারী মোকাবিলায় বড় অগ্রগতির ইঙ্গিত দেওয়ায় মঙ্গলবার (১০ মার্চ) দেশবাসীর ওপর নজিরবিহীন এ বিধিনিষেধ আরোপ করল ইতালি।

করোনা ঠেকাতে কোয়ারেন্টাইন ব্যবস্থার অংশ হিসেবে দেশব্যাপী সবাইকে বাড়িতেই থাকতে এবং জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ভ্রমণ না করতে বলা হয়েছে।

ইতালিতে করোনাভাইরাসে (কভিড-১৯) আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এজন্য এর আগে রোববার (৮ ফেব্রুয়ারি) দেশটির লোম্বার্ডি অঞ্চল, উত্তর ও পূর্ব অঞ্চলের ১৬ মিলিয়ন মানুষকে বাধ্যতামূলকভাবে নিজস্ব কোয়ারেন্টাইনে অর্থাৎ নিজ নিজ ঘরে থাকার আদেশ দেয় দেশটির সরকার। ওই সিদ্ধান্ত দেশটির মূল আর্থিক কেন্দ্র মিলান ও পর্যটনের জন্য বিখ্যাত ভেনিসেও কার্যকর।

ইতালিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর হারও উদ্বেগজনক। এতে প্রাণ গেছে ৪৬৩ জনের এবং নয় হাজার ,১৭২ জন সংক্রামিত হয়েছেন। ইতালির প্রাণহানির হার দেশব্যাপী পাঁচ শতাংশ এবং লোম্বার্ডিতে এ হার ছয় শতাংশ। যা ধারণার চেয়েও অনেক বেশি। অন্যান্য স্থানে করোনায় প্রাণহানির হার তিন-চার শতাংশ।

দেশটিতে করোনা ছড়িয়ে পড়ার হারও অনেক বেশি। যেমন রাজধানী রোমের আশেপাশের অঞ্চল লাজিওতে একদিনে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ১০২ হয়েছে। অবস্থা বেগতিক হওয়ায় সোমবার রাতের এক বৈঠকে নিষেধাজ্ঞার আওতা বাড়িয়ে সারা দেশের মানুষের ঘরের বাইরে যাওয়া নিষিদ্ধ করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মঙ্গলবার থেকে ৩ এপ্রিল পর্যন্ত সবাইকে ঘরেই অবস্থান করতে হবে। 

জাতীয় স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটসের সংক্রামক রোগের প্রধান ডা. জিওভান্নি রেজ্জা ইতালিতে করোনায় মৃত্যুর উচ্চ হারের কারণ হিসেবে বলছেন, বিশ্বে জাপানের পরে ইতালিতেই প্রবীণদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে যাদের মৃত্যু হয়েছে, তাদের মধ্যে মধ্যবয়সীর সংখ্যা ৮০।

করোনার প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে ইতালি আগেই সরকার জিম, পুল, জাদুঘর, স্কি রিসোর্ট ও সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছে। করোনায় ইউরোপের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ ইতালি। দেশটির সরকারের বিভিন্ন কার্যক্রম নেওয়া সত্ত্বেও শনিবার ইতালিতে ভাইরাসের সংক্রমণের প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে।

ইতালির রাজনৈতিক নেতা নিকোলা জিঙ্গারেতিও করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। করোনা মোকাবিলায় অবসরপ্রাপ্ত চিকিৎসকদের আবার নিয়োগ দিচ্ছে ইতালি সরকার।

এদিকে গত ২১ ফেব্রুয়ারি ইতালির এক যুবকের দেহে করোনা পাওয়ায় তাকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে রাখা হয়। কিছুটা সুস্থ হয়ে ওঠায় ৩৮ বছর বয়সী ওই ব্যক্তিকে প্রথমবারের মতো সেখান থেকে সরিয়ে আনা হয়েছে। এতো শঙ্কার মাঝেও করোনার বিরুদ্ধে ছোট এ বিজয় উদযাপন করছেন ইতালির চিকিৎসকরা।

এ সম্পর্কিত আরও খবর