ফের রাফাহ হামলায় নেতানিয়াহুকে বাইডেনের হুঁশিয়ারি
ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস যুদ্ধবিরতির খসড়া চুক্তি মেনে নেয়ার কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে ইসরায়েলের শর্ত মানা হয়নি দাবি করে আবারও রাফাহতে হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে ফোন করে রাফাহ অভিযানের বিরোধিতা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
মঙ্গলবার (৭ মে) এই তথ্য জানিয়েছে টাইমস অব ইসরাইল।
হোয়াইট হাউজের লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, বাইডেন ফোনকলে 'রাফাহ অভিযান নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধিতার বিষয়টি আবারও পরিষ্কার করেছেন।'
রাফাহতে হামলা শুরুর আগে বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপদ অবস্থানে সরিয়ে নেওয়ার একটি গ্রহণযোগ্য পরিকল্পনা তৈরি করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র বারবার ইসরায়েলকে তাগাদা দিলেও এখনো দেশটি এই অনুরোধ রাখেনি।
সোমবার (৬ মে) হোয়াইট হাউজের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের মুখপাত্র জন কার্বি জানান, রাফার বেসামরিক মানুষ ঝুঁকিতে থাকবে এরকম কোনো স্থল অভিযানকে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন করে না। এর আগে পর্যন্ত হোয়াইট হাউজ বলছিল, রাফায় 'বড় ধরনের' অভিযানের বিরোধিতা করছে ওয়াশিংটন। বিশ্লেষকদের মতে, এবার আরও কড়া ভাষায় ইসরাইলকে হুঁশিয়ারি দিয়েছে ওয়াশিংটন।
বাইডেন প্রশাসন রাফা অভিযানের বিকল্প হিসেবে মিশর-গাজা সীমান্তে নিরাপত্তা বৃদ্ধি ও সুনির্দিষ্টভাবে হামাসের নেতাদের বিরুদ্ধে হামলার প্রস্তাব দিয়েছে। কিন্তু নেতানিয়াহু রাফা অভিযানকে অত্যাবশ্যক বলে দাবি করেছেন।
নেতানিয়াহুর মতে, হামাসকে নির্মূল করতে এই অভিযান জরুরি, কারণ রাফাহ এলাকায় হামাসের অনেক যোদ্ধা লুকিয়ে আছেন। রাফাহ শহরে হামাসের চারটি ব্যাটেলিয়ন রয়েছে, যাদেরকে ধ্বংস না করা পর্যন্ত বিজয় অর্জন হবে না।
জন কার্বি আরও জানান, ফোনকলে বাইডেন রাফাহ অভিযান নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বিশ্বাস করেন, গাজায় আটকে থাকা ইসরাইলি জিম্মিদের জীবনকে সুরক্ষিত করার সবচেয়ে ভালো উপায় হচ্ছে হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির চুক্তিতে সম্মতি দেওয়া।
তিনি বাইডেনের বরাত দিয়ে বলেন, 'আমরা জিম্মিদের মুক্ত করতে চাই। আমরা ছয় সপ্তাহের যুদ্ধবিরতি চাই এবং মানবিক সহায়তা বাড়াতে চাই। চুক্তিতে সব পক্ষ সম্মত হলে তা হবে সবচেয়ে ভালো ফলাফল'।
সোমবার হামাস চুক্তিতে সম্মতি দেওয়ার পর ইসরায়েলি সেনাবাহিনী (আইডিএফ) রাফাহ পূর্ব মহল্লাগুলো থেকে সবাইকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। এরপর বেশ কয়েক দফা বিমানহামলা চালায় আইডিএফ।
কার্বি জানান, সোমবার নেতানিয়াহুকে কল করার মূল কারণ হল সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতি চুক্তি, রাফাহ অভিযান ও গাজায় প্রবেশের কেরেম শালোম ক্রসিং বন্ধ নিয়ে আলোচনা করা।
উল্লেখ্য, উত্তর গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের সরে যেতে বলার পর সেখানকার হাজারো বাসিন্দা দক্ষিণের রাফায় আশ্রয় নেন। সেখানে এ মুহূর্তে ১০ লাখেরও বেশি বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি অবস্থান করছেন, যাদের বেশিরভাগই খোলা আকাশের নিচে তাঁবু খাটিয়ে বাস করছেন।