কেউ কি ভেবেছে একটি সাধারণ স্কার্ফ বিশ্ব মহামারি প্রতিরোধে কানাডার টরেন্টোতে প্রতীক হয়ে দাঁড়াবে। কিন্তু এখানে তা হয়েছে, নতুন এই বিশ্বে যেখানে ৫ জন মানুষ এক সঙ্গে হওয়াটা অবৈধ ঘোষণা করেছে, সেখানে সত্তর দশকের ফ্যাশনেবল পোশাকটি জনগণকে স্বাস্থ্য সম্পর্কে শিক্ষা দিতে এবং জীবন বাঁচাতে ব্যবহৃত হচ্ছে।
কানাডার টরেন্টোর মেডিকেল অফিসার ডা. আইলিন ডি ভিলা প্রতিদিন টরোন্টো সিটির করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে ব্রিফিং করেন। ওই সময় তিনি প্রতিদিন আলাদা আলাদা রঙ ও ডিজাইনের একটি স্কার্ফ গলায় বাঁধেন। এরপর থেকে মানুষ কোভিড-১৯ প্রতিরোধে গলায় স্কার্ফ বাঁধা শুরু করে।
সংবাদ সম্মেলন দেখে কেউ একজন টুইটারে ‘Dr. de Villa’s scarf’ লিখে একটি টুইট করেন। টুইটে ড. আইলিনের স্কার্ফের নানা ডিজাইন ও সংগ্রহের প্রশংসা করা হয়।
একদিন কনফারেন্সের শেষে গ্লোবাল নিউজের এক সংবাদকর্মী ম্যাথু বিংলে ডি ভিলাকে জিজ্ঞাসা করেন, আপনার কতগুলো স্কার্ফ সংগ্রহে আছে?
উত্তরে মৃদু হাসি দিয়ে এই চিকিৎসক বলেন, আমি সঠিক জানি না, তবে অনেক! আপনার যদি নির্দিষ্ট কোন ডিজাইনের বিষয়ে পরামর্শ থাকে, আমি তা খুশি মনে গ্রহণ করব।
টেলিভিশনে লাইভ ইন্টারভিউটা দেখেন টরন্টো র্যাপটরস এর তারকা খেলোয়াড় সারজেই ইবাকা। পরবর্তীতে জনপ্রিয় এই তারকা ড. আইলিন এবং তার টিমের সঙ্গে দেখা করেন। এ সম্পর্কে কথাবার্তা বলেন।
এ সময় আইলিনের টিমের সেকেন্ড ইন কমান্ড ডা. ভিনিতা দুবে জানান, করোনাভাইরাস বিষয়ে স্বাস্থ্যকর্মীর পরামর্শ নিতে হবে এবং সেই সঙ্গে মাস্ক না পড়ে স্কার্ফ টেনে মুখ ঢাকা যেতে পারে ।
ইবাকা সম্মতি জানিয়ে জানান, আমাদের জন্য এ সময় শরীরকে সুরক্ষিত রাখা গুরুত্বপূর্ণ। তাই স্কার্ফ পরা ফ্যাশনের থেকেও এখন বেশি কিছু।
টরেন্টো জনস্বাস্থ্য বিভাগের কার্যক্রমের প্রশংসা করে করোনারোধে ‘ঘরে থাক’র প্রচারনায় নেমে যায় র্যাপটরস টিম। ‘ঘরে থাক, গলায় স্কার্ফ পরো’-এই স্লোগানে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও পোস্ট দেন সারজেই ইবাকা। এই পোস্টটি ১ লাখ ৮৫ হাজার বার দেখা হয়।
সূত্র: দ্যা স্টার
এ প্রসঙ্গে টরেন্টোর জরুরি অপারেশন কেন্দ্রের প্রধান ম্যাথিউ পেগ টুইট করেন, ইবাকা যদি তাকে একটি স্কার্ফ দেন, তবে তিনি এটি কোভিড-১৯ এর নিউজ কনফারেন্সে পরবেন। এ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বন্ধ হওয়ার পর তার স্কার্ফটি নিলামে তুলবেন। সেই অর্থ তিনি দান করবেন।
টরেন্টোর মেয়র জন টরি বলেন, করোনার প্রাদুর্ভাব রুখতে আমরা সবকিছুই করতে পারি। ইবাকার মতো তারকারা আমাদের সাথে থাকলে এ দুর্যোগ আমরা মোকাবিলা করতে পারব। সেই সঙ্গে ড. আইলিনের স্কার্ফ এখন টরন্টোয় করোনা প্রতিরোধ আন্দোলনের প্রতীক।