নতুন, অচেনা, প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের বৈশিষ্ট্য, উপসর্গ আঁচ করতে হিমসিম খাচ্ছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। উৎপত্তিস্থল চীনের উহানে পরিচালিত এক সমীক্ষার মাধ্যমে জানা গেছে অদ্ভুত ও নতুন বিবরণ।
সরেজমিনে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে গবেষকরা বলছেন, ৮০% শতাংশ করোনায় আক্রান্ত রোগী সংক্রমণের শিকার হয়েছেন এমন মানুষদের কাছ থেকে, যাদের মধ্যে আদৌ কোনো আগাম উপসর্গ বা পূর্ব-লক্ষণই ছিলনা।
চীনের সর্বাধিক আক্রান্ত উহান শহরের পুরো এলাকায় গাণিতিক পদ্ধতিতে পরিচালিত গবেষণায় প্রাপ্ত এই নতুন তথ্য করোনাভাইরাস আক্রান্তদের সম্পর্কে ধারণা পালটে দিয়েছে। এতে উপসর্গহীন মানুষেরাও যে সংক্রমণের কারণ হয়ে করোনাভাইরাস ছড়াতে পারেন, তা স্পষ্ট হয়েছে।
মঙ্গলবার (৭ এপ্রিল) উহান যখন ১১ সপ্তাহের লকডাউন শেষে স্বাভাবিক জীবনের গতি ফিরে পেয়েছে এবং চীনে করোনায় মৃত্যুর হার শূন্যে নেমে এসেছে, তখন সেখানে পরিচালিত এই সর্বসাম্প্রতিক গবেষণার বিষয়টি প্রকাশ করে বিলাতের ডেইলি মেইল।
সাংহাই জিয়োটং বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন বিভাগের পক্ষে গবেষণা টিমের নেতৃত্ব দেন হুয়ো তো জাং। তারা করোনায় আক্রান্ত ও বহনকারীদের মধ্যে প্রাথমিকভাবে উপসর্গ সুপ্ত থাকার বিষয়টির পাশাপাশি আক্রান্তদের মধ্যে ৩.৮ দিন পরে তা প্রকটভাবে প্রকাশিত হওয়ার কথাও জানিয়েছেন।
গবেষকরা মানুষের শরীরে করোনাভাইরাস আছে কিনা, তা প্যাথলজিতে পরীক্ষা করে দেখার দিকে জোর দিয়েছেন। শুধু আগাম উপসর্গ বা পূর্ব-লক্ষণ দেখে করোনা রোগী শনাক্ত করা সম্ভব নয় বলেও তারা মনে করেন। কারণ, অনেকের মধ্যেই আগাম উপসর্গ বা লক্ষণের বদলে চরম দশা চলে আসতে পারে।
মানুষের মধ্যে কাছাকাছি আসা থেকে বিরত থাকা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং কঠোরভাবে সঙ্গরোধ করাকে গবেষকরা করোনার বিস্তার ঠেকানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে চিহ্নিত করেছেন। উপসর্গহীন বা উপসর্গযুক্ত, উভয় প্রকারের আক্রান্ত মানুষের মাধ্যমে করোনা ছড়ানো ঠেকাতে এইসব প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ অত্যন্ত জরুরি বলে মত দিয়েছেন তারা।