২০২০ সালের প্রথম তিন মাসে চীনের অর্থনীতি ৬.৮ শতাংশ সঙ্কুচিত হয়েছে। ১৯৭৬ সালে সাংস্কৃতিক বিপ্লবের পর বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে আবার বিশাল অর্থনৈতিক ক্ষতির মুখে পড়ল চীন।
করোনভাইরারের বিস্তার রোধে বছরের প্রথম তিন মাসে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম এ অর্থনীতিকে ব্যাপক শাটডাউনের মুখোমুখি হতে হয়েছে। সেই সঙ্গে করোনা পরবর্তী সময়ে দেশের সব কিছু আবার পুরোপুরি চালু করার জন্য লড়াই করতে হয়েছে চীনকে।
শুক্রবার (১৭ এপ্রিল) চীনের জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরো (এনবিএস) এমন অর্থনৈতিক মন্দার তথ্য প্রকাশ করেছে। যা অর্থনৈতিক মিডিয়া গোষ্ঠী ব্লুমবার্গের বিশ্লেষকদের মাইনাস ৬.০ শতাংশ মন্দার পূর্বাভাসের চেয়েও খারাপ।
এনবিএসের তথ্যে আরও দেখা গেছে, বছরের প্রথম দুই মাসের নাটকীয় পতনের পর শুধু মার্চেই অর্থনীতি ব্যাপক চাপের মধ্যে ছিল। এ মাসে শিল্প খাত, খুচরা ও স্থায়ী সম্পদে বিনিয়োগ কমে যায় আশঙ্কাজনক হারে।
জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারির সম্মিলিত তথ্যের তুলনায় ১৩.৫ শতাংশ অর্থনৈতিক পতনের পর গত মাসে শিল্প উৎপাদন, খনন এবং উপযোগিতা ১.১ শতাংশ কমেছে।
যা ব্লুমবার্গ জরিপ অনুসারে ৬.২ শতাংশ কমার আশঙ্কার চেয়ে অনেক ভালো ছিল। তবে এর মধ্যে উৎপাদন ১০.২ শতাংশ কমেছে, যা কারখানাগুলো পুনরায় চালু হওয়ার পরও হয়তো প্রতিকূল বাতাস (হেডওয়াইন্ড) রয়ে গেছে। বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশটির কেনাকাটার মূল পরিমাপক খুচরা বিক্রিতে বছরের প্রথম দুই মাসে ২০.৫ শতাংশ ধস নামে। এ রেকর্ড পরিমাণ ধসের ধারাবাহিকতায় মার্চে খুচরা বিক্রি হ্রাস পেয়েছে ১৫.৮ শতাংশ। যা ১০.০ শতাংশের মন্দার পূর্বাভাসের চেয়েও খারাপ।
স্থায়ী সম্পদ, অবকাঠামো, সম্পত্তি, যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামাদিতে বিনিয়োগ বছরের শুরু থেকে আজ পর্যন্ত ব্যয়ের পরিমাপক। গত তিন মাসে এমন বিনিয়োগ কমেছে ১৬.১ শতাংশ। যা জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে ছিল সর্বকালের সর্বনিম্ন ২০.৫ শতাংশ। বিশ্লেষকরা ১৫.১ শতাংশ মন্দার পূর্বাভাস দিয়েছিলেন।
তবে এ পরিসংখ্যানগুলো অর্থনীতির সামগ্রীক চিত্র তুলে ধরেনি। কারণ তারা তাদের এ জরিপে চাকরি হারানো বা করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়া রোধে ভ্রমণে বিধিনিষেধ থাকায় কাজে ফিরতে পারেননি এমন অনেক অভিবাসী শ্রমিককে বাদ দিয়েছেন।
এ তিন মাসে জিডিপি (মোট দেশজ উৎপাদন ) হ্রাস নজর কেড়ে নেবে সবার। ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টি কয়েক দশক ধরে নাগরিকদের জন্য অর্থনৈতিক বিকাশ এবং ‘মাঝারি সমৃদ্ধি’র প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছে।