সেপ্টেম্বরের শুরুতেই করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন নিয়ে আসছেন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা। মে থেকে আগস্ট মাসের মধ্যেই এক মিলিয়ন ডোজ ভ্যাকসিন উৎপাদন করতে সক্ষম বলেও জানিয়েছেন তারা।
শুক্রবার (১৭ এপ্রিল) জেনার ইনস্টিটিউট ও অক্সফোর্ডের বিজ্ঞানীরা আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফকে এ কথা জানিয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও ব্রিটেনের প্রধান বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা স্যার প্যাট্রিক ভ্যালেন্স বারবার বলেছেন, একটি নিরাপদ ভ্যাকসিন তৈরিতে কমপক্ষে ১২ থেকে ১৮ মাস সময়ের প্রয়োজন। সেখানে অক্সফোর্ডের এ দলটি সেপ্টেম্বরের শুরুতেই ভ্যাকসিনটি তৈরি করবে বলে জানিয়েছে।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনার ইনস্টিটিউটের পরিচালক প্রফেসর অ্যাড্রিয়ান হিল বলেন, একবার আমাদের ভ্যাকসিনটির কার্যকারিতা অর্থাৎ পরীক্ষার ফলাফল পেলেই সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রায় এক মিলিয়ন ডোজ সরবরাহ করতে পারব। যেহেতু করোনাভাইরাস এখন মহামারি আকার ধারণ করেছে। এজন্য এ বছরের শেষেই বিশ্বজুড়ে কমপক্ষে ১০ কোটি ভ্যাকসিনের প্রয়োজন হবে।
এ ভ্যাকসিনটি ভাইরাসটির জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে কারণ এটি একটি ডোজ থেকে শক্তিশালী প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ভ্যাকসিনোলজির অধ্যাপক সারা গিলবার্ট গবেষকদের একটি দলকে একটি ভ্যাকসিন তৈরিতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন, যা বিশ্বকে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে রক্ষা করবে। গবেষণা অনুযায়ী আমরা ৮০ ভাগ সাফল্যের বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী। পরীক্ষার ওপর ভিত্তি করে এটুকু বলতে পারি, করোনার ভ্যাকসিন সফলভাবে তৈরি করতে পেরেছি আমরা।
চলতি মাসের শুরুর দিকে মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস বিশ্ব নেতাদের একত্রিত হওয়ার জন্য এবং কীভাবে ভ্যাকসিন তৈরি ও বিতরণ করা হবে তা পরিকল্পনা শুরু করার জন্য জরুরি আহ্বান জানিয়েছিলেন। রোগীদের চিকিৎসা ও ভ্যাকসিন সরবরাহের ক্ষেত্রে যেন দেরি না হয়ে যায় এর পরিকল্পনাও করেন তিনি।
অসলো-ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান কোয়ালিশন ফর এপিডেমিক প্রিপারেশন ইনোভেশনসের (সিপিআই) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রিচার্ড হ্যাচেট বলেন, বেশিরভাগ জি-২০ দেশগুলির ভ্যাকসিন উৎপাদন ক্ষমতা নেই।
জেনার ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক হিল বলেন, মিলিয়ন বা তারও বেশি ভ্যাকসিন উৎপাদনে অক্সফোর্ডের এ গবেষণা দলকে ব্রিটেন, ইউরোপ, ভারত ও চীন সহায়তা করবে। যদি ভ্যাকসিন সফল হিসেবে প্রমাণিত হয় তবে দলটি অবিলম্বে ইনোকুলেশন প্রোগ্রামটি চালু করতে ‘জরুরি ব্যবহারের অনুমোদনের জন্য’ আবেদন করবে। তবে আমরা কখনই নিশ্চিত করে বলতে পারি না যে ভ্যাকসিনটি কাজ করবে। কিন্তু আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি ভ্যাকসিনটি খুবই শক্তিশালী।
আরও পড়ুন- ক্লোরোকুইন ওষুধে কি করোনা নিরাময় সম্ভব?
করোনার চিকিৎসায় চার ওষুধ নিয়ে কাজ করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা
করোনার প্রতিষেধক আবিষ্কার কতদূর?
৫ মাস চলছে, করোনাভাইরাস সম্পর্কে যা জানাল বিজ্ঞানীরা
ফাইজার-বায়োএনটেক’র চুক্তি, এপ্রিলেই ভ্যাকসিনের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল
রেমডেসিভির ওষুধে দ্রুত সুস্থ হচ্ছেন করোনা রোগী