পরীক্ষামূলকভাবে তৈরি করা ওষুধ রেমডেসিভির করোনাভাইরাস রোগীর উপর প্রয়োগে দ্রুত কাজ করছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ফার্মাসিটিক্যাল প্রতিষ্ঠান গিলিয়াড সায়েন্সেস। প্রতিষ্ঠানটি জানায়, ওষুধটি কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে কার্যকর।
বুধবার (২৯ এপ্রিল) গিলিয়াড সায়েন্সেস একটি বিবৃতিতে জানায়, আমরা বুঝতে পারছি পরীক্ষাটি তার প্রাথমিক ট্রায়ালের শেষ পর্যায়ে এসেছে। গবেষণা পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান জাতীয় অ্যালার্জি এবং সংক্রামক রোগ ইনস্টিটিউট খুব শিগগিরই কোন একটি ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে তথ্য সরবরাহ করবে।
প্রাথমিক ট্রায়ালে রেমডেসিভির প্রয়োগে কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত রোগীর উন্নতি হয়েছে। করোনাভাইরাসের প্রভাবে বিশ্বে যখন ২ লাখ ১৮ হাজার মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে এবং বৈশ্বিক অর্থনীতি প্রায় স্থবির হয়ে পড়েছে, সেই মুহূর্তে রেমডেসিভিরের এই ফলাফল কোন ধরনের স্বীকৃত ডাটা ছাড়া উপস্থাপন করা মুশকিল।
প্রথম দিকে শিকাগো হাসপাতালের রোগীদের ফলাফলের ভিত্তিতে বলা হয়, রেমডেসিভির প্রত্যাশার চেয়েও ভালো কাজ করছে। রেমডেসিভির প্রয়োগ করা রোগীদের অধিকাংশ সুস্থ হয়ে বাড়ি চলে গেছেন। তাদের সুস্থ হতে ৬ থেকে ১০ দিন সময় লেগেছে।
তবে গত বৃহস্পতিবার (২৩ এপ্রিল) ওষুধটি নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তাদের এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, চীনে ২৩৭ জন আক্রান্তের ওপর করোনা চিকিৎসা নিয়ে একটি পরীক্ষা চালানো হয়। যাদের মধ্যে দেড় শতাধিক রোগীকে রেমডেসিভির দেওয়া হয়। কিন্তু দেখা গেছে, ওষুধটি তাদের ওপর কাজ করছে না। বরং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করছে।
রেমডেসিভিরের কার্যকারিতা নিয়ে সম্পূর্ণ গবেষণার প্রভাব শীঘ্রই প্রকাশ করা হবে। গিলিয়াড জানিয়েছে, তারা এই সপ্তাহের শেষেই যুক্তরাষ্ট্র থেকে পাওয়া ফলাফল প্রকাশ করবে যার মধ্যে শিকাগোর ফলাফল আগেই জানানো হয়েছিল। তার পরপরই চীন থেকে পাওয়া পরীক্ষামূলক গবেষণার তথ্য প্রকাশ করবে।
এদিকে পরীক্ষামূলক ওষুধ প্রয়োগ বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, গবেষণার ফলাফল এই ওষুধের কার্যকারিতা সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা দেওয়ার পরিবর্তে জল আরো ঘোলা করবে।
ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ) অনুমোদিত বিভিন্ন ওষুধ কার্যকারিতার ফলাফল তদন্তকারী ও ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের প্রধান কর্মকর্তা স্টিভেন নিসেন বলেন, যদি সব রোগী এই ওষুধ না পায় তাহলে এর বৈজ্ঞানিক মূল্যই নেই’।
তিনি আরো বলেন, এই গবেষণা যেভাবে পরিকল্পনা করা হয়েছে তা একেবারে অকার্যকর এবং এফডিএ করোনাভাইরাস চিকিৎসার জন্য এর অনুমোদন দিতে পারে না।
উল্লেখ্য, গত ফেব্রুয়ারিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা গিলিয়াডের রেমডেসিভির ওষুধের ব্যাপারে আশা প্রকাশ করে জানায়, এটি কোভিড-১৯ থেকে মুক্তি দিতে পারে।
আরও পড়ুন- ক্লোরোকুইন ওষুধে কি করোনা নিরাময় সম্ভব?
গরমে কমবে করোনার সংক্রমণ, দাবি মার্কিন গবেষকদের
করোনার চিকিৎসায় চার ওষুধ নিয়ে কাজ করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা
করোনার প্রতিষেধক আবিষ্কার কতদূর?
৫ মাস চলছে, করোনাভাইরাস সম্পর্কে যা জানাল বিজ্ঞানীরা
ফাইজার-বায়োএনটেক’র চুক্তি, এপ্রিলেই ভ্যাকসিনের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল