ভ্যাকসিন তৈরির দৌড়ে এগিয়ে যারা

বিবিধ, আন্তর্জাতিক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম | 2023-08-26 18:31:30

বিশ্বে মহামারি করোনার প্রতিষেধক তৈরির দৌড়ে এগিয়ে রয়েছে পাঁচটি নামী সংস্থা। প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী, আসছে জুনেই করোনার সম্ভাব্য ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা জানা যাবে। আর সেপ্টেম্বর থেকে মানুষের শরীরে প্রয়োগ করা যাবে করোনার ভ্যাকসিন। সারাবিশ্বে ভ্যাকসিন পৌঁছে দিতে সময় লাগতে পারে আরও তিন থেকে ছয় মাস।

 

ভ্যাকসিন তৈরির দৌড়ে এগিয়ে রয়েছে যে পাঁচটি সংস্থা

মর্ডানা

জানুয়ারীতে কোভিড-১৯ এর জেনেটিক সিকোয়েন্স প্রকাশের ঠিক আট সপ্তাহের মাথায় মর্ডানার এমআরএনএ-১২৭৩ ভ্যাকসিনের প্রথম ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক ম্যাসাচুসেটস বায়োটেকনোলজি সংস্থা (মর্ডানা)। সোমবার (১৮ মে) মার্কিন বায়োটেক সংস্থা জানিয়েছে, প্রাথমিক পর্যায়ের ট্রায়ালে ৪৫ জন স্বেচ্ছাসেবকে এ ভ্যাকসিন প্রয়োগ করে। মডার্না দাবি করেছে, ভ্যাকসিন স্বেচ্ছাসেবকদের মধ্যে অ্যান্টিবডি তৈরি করেছে। ভ্যাকসিনটি আসলে মানব দেহে কাজ করে কিনা তা দেখার লক্ষে সংস্থাটি জুলাইয়ে বৃহৎ ক্লিনিকাল ট্রায়াল শুরু করার পরিকল্পনা করেছে। এছাড়াও এমআরএনএ-১২৭৩ ভ্যাকসিনে ইঁদুরের ফুসফুসে ভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার প্রমাণ পাওয়া গেছে।

ক্যানসিনো

চীনা সংস্থা ক্যানসিনো বায়োলজিক্স। ক্যানসিনোর অ্যাড৫-এনসিওভি ভ্যাকসিনের প্রথম ট্রায়াল শেষ করে তারা দ্বিতীয় ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু করেছে। ক্যানসিনো তৈরি ভ্যাকসিনটি অক্সফোর্ডের মতো ডিএনএ ভ্যাকসিন। পিপলস লিবারেশন আর্মির মেডিকেল সায়েন্স বাহিনী নিয়ে কাজ করা ক্যানসিনো প্রথম পর্যায়ের পরীক্ষার বিস্তারিত ফলাফল প্রকাশ করেনি। কেবল এটুকু বলেছে, প্রথম পর্বের ‘প্রাথমিক সুরক্ষা তথ্যের’ ভিত্তিতে দ্বিতীয় পর্যায়ের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চলছে। দ্বিতীয় পর্যায়ে প্রায় ৫০০ জন স্বেচ্ছাসেবক ট্রায়ালে অংশ নিয়েছে।

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়

যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়। তাদের তৈরি করোনার সিএইচএডিএক্স১ এনকোভ-১৯ ভ্যাকসিন। এ ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা আসছে জুনের মধ্যেই জানা যাবে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। ভ্যাকসিনটি যদি কার্যকর হয়, তাহলে সেপ্টেম্বরের মধ্যে এক মিলিয়ন ডোজ ভ্যাকসিন উৎপাদন করার লক্ষ্য নিয়ে তারা এগোচ্ছে। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্য রিজিয়াস প্রফেসর অব মেডিসিন স্যার জন বেল বলেন, ভ্যাকসিনটি নিয়ে আমরা আত্মবিশ্বাসী। কারণ এটি শক্তিশালী অ্যান্টিবডি তৈরিতে সক্ষম। ইতোমধ্যে যুক্তরাজ্যের বৃহৎ ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিন তৈরিতে অক্সফোর্ডের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে।

লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজ

ইম্পেরিয়াল এমন একটি ভ্যাকসিন তৈরি করছে যা মানুষের আগে পরীক্ষা করা হয়নি। অধ্যাপক রবিন শাটকের নেতৃত্বে দলটি ফেব্রুয়ারির প্রথম থেকেই ভ্যাকসিনটি পশুদের শরীরে পরীক্ষা করে আসছে। জুনে তারা মানবদেহে ভ্যাকসিন প্রয়োগের কথা বলেছে। প্রাথমিকভাবে সরকারি অর্থায়নে ২২.৫ মিলিয়ন ডলার পেয়েছিল গবেষণা করতে। সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটিকে অতিরিক্ত ১৮.৫ মিলিয়ন ডলার দেওয়ার ঘোষণা করা হয়েছে। এ বছরের শেষের দিকে তিনটি ক্লিনিকাল ট্রায়াল শুরু করতে সক্ষম করবে। তবে সেপ্টেম্বরের মধ্যে যুক্তরাজ্যে যে কোনো একটি কার্যকরী ভ্যাকসিন ব্যবহারের সম্ভাবনা খুব বেশি।

ইনোভিও

মার্কিন বায়োটেক সংস্থা ইনোভিও ফার্মাসিউটিক্যাল। ইনোভিও গত মাসে করোনাভাইরাসের সম্ভাব্য একটি ভ্যাকসিনের পরীক্ষামূলক প্রয়োগের অনুমতি পেয়েছে। আইএনও-৪৮০০ ভ্যাকসিনের প্রাক-মডেলগুলোতে প্রতিরোধের প্রতিশ্রুতি রয়েছে। সংস্থাটি তার প্রথম ধাপের পরীক্ষার জন্য ৪০ জন স্বাস্থ্যবান মানুষকে তালিকাভুক্ত করেছে। আশা করা যাচ্ছে, জুনেই তারা কার্যকরীতা পরীক্ষার পর্যায়ে যেতে পারে। এই ভ্যাকসিনের জন্য কোয়ালিশন ফর এপিডেমিক প্রিপারডেন্সনেস ইনোভেশনসের কাছ থেকে মোট ১৪ মিলিয়ন ডলার অনুদান পেয়েছে সংস্থাটি।

জনস হপকিনস ইউনিভার্সিটির করোনাভাইরাস রিসোর্স সেন্টারের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৪৮ লাখ ১৯ হজার ৯৫৯ জন। মৃত্যুর সংখ্যা ৩ লাখ ১৮ হাজার ৮৩৩ এবং সুস্থের সংখ্যা ১৭ লাখ ৯৫ হাজার ৯২২।

সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

এ সম্পর্কিত আরও খবর