করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসায় ম্যালেরিয়ার ওষুধ হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের পরীক্ষামূলক ব্যবহার বন্ধ রাখতে বলেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউেএইচও)।
সম্প্রতি এক গবেষণায় হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের ব্যবহারের ফলে মৃত্যুঝুঁকি বৃদ্ধি পায় এমন রিপোর্ট আসে। এরপর পর কোভিড-১৯ রোগীর চিকিৎসা সুরক্ষার কথা বিবেচনায় নিয়ে সংস্থাটি সোমবার (২৬ মার্চ) এই সিদ্ধান্ত জানিয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান তেদরোস আধানোম গেব্রোয়াসুস বলেন, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের প্রয়োগ কতটা নিরাপদ, তা পর্যবেক্ষণ চলছে, তার আগ পর্যন্ত বিশ্ব সংস্থা এই ওষুধটির পরীক্ষামূলক ব্যবহার স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে অন্যান্য বিকল্প ওষুধগুলোর ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চলছে, তা চলতে থাকবে।
এছাড়াও এর আগে এই ওষুধ সেবনের ফলে অনেকের হার্টের গুরুতর সমস্যা দেখা দিতে পারে বলে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা এফডিএ সতর্ক করেছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের পরামর্শের পরও বারবার ম্যালেরিয়ার প্রতিষেধক ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়েছেন। এমনকি ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, করোনাভাইরাস থেকে দূরে থাকতে তিনি নিয়মিতই হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন সেবন করেন।
গত সপ্তাহে মেডিকেল জার্নাল দ্য ল্যানসেটের একটি সমীক্ষায় বলা হয়েছে, হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসায় কোন উপকারে আসে না। এটি সেবনের ফলে মৃত্যুর ঝুঁকি বেশি।
এই ওষুধটি ম্যালেরিয়া এবং আর্থ্রাইটিসের রোগের জন্য কার্যকর। তবে কোভিড-১৯ রোগের চিকিৎসার জন্য নিরাপদ নয়।
করোনার চিকিৎসার হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের ব্যবহারের ফলে ১৮ শতাংশ, ক্লোরোকুইনে ১৬ দশমিক ৪ শতাংশ এবং এই গ্রুপের অন্য ওষুধে ৯ শতাংশ রোগী মারা গেছেন। অ্যান্টিবায়োটিকের সংমিশ্রণে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন বা ক্লোরোকুইনের দিয়ে চিকিৎসা করা রোগীদের মৃত্যুর হার আরও বেশি ছিল।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার জরুরি কর্মসূচির প্রধান ডা. মাইক রায়ান বলেন, সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের ব্যবহার স্থগিত রাখার এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সূত্র: বিবিসি ও রয়টার্স