মক্কা মোকাররমা (সৌদি আরব) থেকে: কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একাউন্টস এন্ড বাজেটিং বিভাগের উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) জাকির হোসেন হজে এসে তিক্ত অভিজ্ঞতা নিয়ে দেশে ফিরছেন।
তিনি কেবল এক নন, তার মতো ১শ' ৬০ জন হাজী পবিত্র হজপালন করেছেন প্রচণ্ড দুর্ভোগ আর অবর্ণনীয় যন্ত্রণায়।
ন্যূনতম সেবা তো দূরের কথা, তাদের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে ব্যবসা করেছে নামে বেনামে থাকা হজ এজেন্সি।
মিনায় এক ইঞ্চি জায়গা পাননি। আরাফাতের ময়দানে ছোটাছুটি করেও তাঁবুতে ঠাঁই মেলেনি। গাইড তো দূরের কথা, অসহায় পরিস্থিতির মাঝেও দেখা পাননি এজেন্সির কোনো প্রতিনিধির।
বাংলাদেশ হজ মিশনে হাজীদের লিখিত এসব অভিযোগের শুনানি করতে গিয়েই কেঁচো খুঁড়তে গিয়ে সাপ বেড়িয়ে আসে।
অভিযুক্ত এহসান ট্রাভেলস নামের হজ এজেন্সির (রাবেয়া ম্যানশন, ১৫৬ ফকিরাপুল, ঢাকা) মালিককে তলব করে জানা গেলো- এই এজেন্সি ভাড়ায় খাটানো হয়।
মোনাজ্জেম পরিচয়ে আসা আবু বকর সিদ্দিক (৩৩) জানান, তিনি বার্ষিক তিন লাখ টাকার বিনিময়ে এজেন্সি ভাড়া নিয়ে ব্যবসা চালান। লক্ষীপুর জেলার কমলনগর থানার উত্তর মার্টিন গ্রামের নুরু মোল্লার ছেলে আবু বকর সিদ্দিক।
স্যার! আসলে আমি লাইসেন্সের মালিক না। নিজ নামে হজ এজেন্সির লাইসেন্স বের করার চেষ্টা করছি, পাইনি এখনো। এজেন্সি ভাড়া নিয়ে ব্যবসা করছি- সাফ জানান আবু বকর সিদ্দিক।
বাংলাদেশ ব্যাংক কর্মকর্তা জাকির হোসেন জানান, তিনিসহ বেশ কয়েকজন ব্যাংকার জন প্রতি ৪ লাখ ৯০ হাজার টাকা দিয়ে হজে এসেছেন। এত টাকায় খরচ করলে তো হজে ভিভিআইপি সেবা পাওয়ার কথা। উপরন্ত এত অভিযোগ। কেন?
হজ মিশনে প্রশাসনিক দলের প্রধান, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হাফিজুর রহমানের প্রশ্নে আবু বকর সিদ্দিক বলেন, স্যার! আমি কোনো টাকা নেইনি। যা খরচ তা ব্যয় করছে ক্যারামতিয়া ট্রাভেলস। যেহেতু আমার ভাড়া করা কোম্পানির নামে হাজীদের এনেছি, তাই আমাকে জনপ্রতি ৫ হাজার টাকা করে দিতে বলেছি। কিন্তু ৩ হাজার টাকা করে দেবে বলে জানানো হয়েছে।
‘এটা তো স্রেফ দালালি, বাটপারি। যে কারণে হাজীরা এত কষ্ট করছেন। এসব দালালি আর বাটপারি চলতে পারে না। এর ফয়সালা ঢাকায় হবে- ক্ষোভের সঙ্গে জানান হজ মিশনে প্রশাসনিক দলের প্রধান ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হাফিজুর রহমান।
পরে তিনি সাংবাদিকদের জানান, হাজীদের ওপর অত্যচার করে কোনেরা এজেন্সি পার পাবে না। গতবার ১৯১টি এজেন্সির বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে। তন্মধ্যে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ৬১টি এজেন্সির লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে, ২৫টি এজেন্সির কার্যক্রম স্থগিত করে তাদের জামানত বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।