উত্তর আফ্রিকার রাষ্ট্র আলজেরিয়া। দেশটির রাষ্ট্রীয় ভাষা আরবি ও রাজধানীর নাম আলজিয়ার্স। ১৩২ বছর ফ্রান্সের উপনিবেশ থাকার পর ১৯৬২ সালে স্বাধীনতা লাভ করে আলজেরিয়া। মুসলিম ও আরব এ দেশটির স্বাধীনতা সংগ্রামে অন্তত ১০ থেকে ২০ লাখ আলজেরীয় নাগরিক মৃত্যুবরণ করেন। তাই আলজেরিয়াকে বলা হয় মিলিয়ন শহীদের দেশ।
৯৯ শতাংশ মুসলমানের দেশ আলজেরিয়া আয়তন বিবেচনায় আফ্রিকা, আরব বিশ্ব ও ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের বৃহত্তম এবং পৃথিবীর দশম বৃহত্তম দেশ। দেশটির আয়তন ২৩, ৮১, ৭৪১ বর্গকিলোমিটার।
বেশ কয়েক বছর ধরে আফ্রিকার দ্বিতীয় বৃহত্তম এই দেশটিতে দিন দিন ইসলামি মূল্যবোধের চর্চা বাড়তে ছিলো বলে খবর পাওয়া যাচ্ছিল। আলজেরিয়ায় দিন দিন বাড়ছে মসজিদের সংখ্যা। বোরকাবৃত অবস্থায় চলাফেরা করতে অভ্যস্ত হয়ে উঠছেন নারীরা। অ্যালকোহলিক পানীয় বিক্রির দোকানগুলো ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু ইসলামি মূল্যবোধের এই যাত্রা কিছুটা বাধাগ্রস্থ হলো সরকারের সাম্প্রতিক এক সিদ্ধান্তে।
বৃহস্পতিবার (১৮ অক্টোবর) কর্মক্ষেত্রে নেকাব নিষিদ্ধ করেছে দেশটি। আলজেরিয়ার প্রধানমন্ত্রী আহমেদ ওহাইয়া এ নির্দেশ দেন।
নেকাবের নিষিদ্ধের নির্দেশ জারির সময় দেশটির কর্তৃপক্ষ জানায়, কোনো ব্যক্তিকে শনাক্তকরণে সমস্যার কারণে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
‘কর্মচারীদের কর্তব্য ও সরকারি কর্মকর্তাদের পোশাক রীতি’ শিরোনামে সরকার এক ডিক্রি প্রকাশ করে। সেখানে বলা হয়, কর্মক্ষেত্রে নারীদের নিয়মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া বাধ্যতামূলক হওয়ার কথা বলা হয়েছে। সেখানে পোশাকের ব্যাপারে কঠোর কিছু নিয়ম ব্যাপারেও বিভিন্ন নির্দেশ লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। এছাড়া যে ধরনের পোশাক পরে সরকারি চাকরি বাধাগ্রস্ত হয় তা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ।
মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ হলেও আলজেরিয়ার অধিকাংশ নারী নেকাব পরেন না। তবে সরকারের এমন সিদ্ধান্তে তারা নাখোশ। সরকারের এমন সিদ্ধান্তে বিতর্ক শুরু হয়েছে। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, নেকাব কীভাবে নারীদের কাজের ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করবে?
কর্মক্ষেত্রে নেকাব নিষিদ্ধের আগে আলজেরিয়ার সরকার পরীক্ষার সময় নারী শিক্ষার্থীদের স্কার্ফ পরার ওপরও নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল।
তাদের যুক্তি হচ্ছে, স্কার্ফের সুযোগ নিয়ে কেউ পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন করতে পারে।