পবিত্র ওমরা পালনে যেয়ে বাংলাদেশে ফেরেনি ৭৪ জন যাত্রী। ১৩টি এজেন্সির মাধ্যমে তারা এ বছর ওমরা পালন করতে সৌদি আরবে গিয়েছিলেন। ধর্ম মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্টরা আশঙ্কা করছেন, দেশে না ফেরা এসব ওমরা যাত্রী সৌদি আরবে গিয়ে কর্মসংস্থানের জন্য পালিয়ে যেতে পারেন। এসব যাত্রীর মধ্যে রোহিঙ্গা থাকতে পারেন বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এ কারণে ১৩টি এজেন্সিকে আগে এক দফা কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করেছিল ধর্ম মন্ত্রণালয়। কিন্তু তাদের জবাবে সন্তুষ্ট না হওয়ায় আবারও এক মাসের সময় দিয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। অন্যথায় তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ার করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।
গত ২৩ সেপ্টেম্বর ধর্ম মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সৌদি আরবে ওমরা পালনে গিয়ে ৭৪ জন ব্যক্তি ফিরে আসেননি। এ কারণে সে সময় ২৯টি এজেন্সিকে শোকজ করে ধর্ম মন্ত্রণালয়। সাত কার্যদিবসের মধ্যে তাদের জবাব দিতে বলা হয়। শোকজ নোটিশ পেয়ে অনেকে এরই মধ্যে ফিরে এসেছেন। আবার অনেক এজেন্সি তাদের জবাব দেয়।
জবাবে এজেন্সিগুলো জানায়, যাত্রীদের কেউ কেউ অসুস্থ হয়ে সৌদি আরবের হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, কেউবা মারা গেছেন, আবার কেউবা আটক হয়ে জেলে আছেন ইত্যাদি। কিন্তু তাদের জবাবের পক্ষে কোনো প্রমাণপত্র দাখিল না করায় রোববার (২১ অক্টোবর) আবারও ১৩টি এজেন্সিকে নোটিশ দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব আব্দুল্লাহ আরিফ মোহাম্মদ স্বাক্ষরিত নোটিশে বলা হয়, ১৪৩৯ হিজরি/২০১৮ খ্রিস্টাব্দে হজ মৌসুমে এসব এজেন্সির ওমরা যাত্রী বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন করেনি। যা জাতীয় হজ ও ওমরা নীতি ১৪৩৯ হিজরি/২০১৮ এর ২১.২.৪ অনুচ্ছেদের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। সুতরাং বর্ণিত এজেন্সির ওমরা যাত্রীদের আগামী ১ মাসের মধ্যে বাংলাদেশে ফিরিয়ে এনে প্রমাণকসহ মন্ত্রণালয়কে অবহিত করার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো। অন্যথায় জাতীয় হজ ও ওমরা নীতি ১৪৩৯ হিজরি/২০১৮ অনুযায়ী এসব এজেন্সির বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অভিযুক্ত এজেন্সিগুলোকে এক মাসের মধ্যে যাত্রী ফেরত আনার জন্য বলা হয়েছে। এ ব্যাপারে ৩শ’ টাকার একটি নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে একটি অঙ্গীকারনামা এক সপ্তাহের মধ্যে জমা দিতে বলা হয়েছে।
অভিযুক্ত এজেন্সিগুলো হলো- বলাকা ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরসের (ওমরা লাইসেন্স নম্বর ৭২) যাত্রী ৪৮ জন, খন্দকার এয়ার ইন্টারন্যাশনালের (২১৪) যাত্রী ৪, রুখসানা ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরসের (৪১০) যাত্রী ৭, ক্যামাসিয়া ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলসের (৪২৪) যাত্রী ৪, ক্যাপলান ওভারসিস লিমিটেডের (০৭) যাত্রী ১, কাজী এয়ার ইন্টারন্যাশনালের (১৬) যাত্রী ১, সানফ্লাওয়ার এয়ার লিংকার্সের (২০) যাত্রী ২, এয়ার বাংলা ইন্টারন্যাশনালের (৬৭) যাত্রী ১, আদেব এয়ার ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরসের (২৭৭) যাত্রী ২, আল মাকাম ট্রাভেলসের (৪০৯) যাত্রী ১, আবাবিল ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরসের (৪৬৩) যাত্রী ১, আহমেদ এয়ারওয়েজ সার্ভিসের (৪৯৮) যাত্রী ১ ও ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরস সল্যুশনের (৫০৭) যাত্রী ১ জন রয়েছেন।
যাত্রী ফিরে না আসায়, অভিযুক্ত এজেন্সিগুলো হজ ও ওমরা নীতি ১৪৩৯ হিজরির (২০১৮ সালে) ২১.২.৪ ধারা লঙ্ঘন করেছে। হজ নীতিমালা অনুসারে কোনো এজেন্সি কোনো যাত্রী ফেরত আনতে ব্যর্থ হলে যাত্রী প্রতি পাঁচ লাখ টাকা জামানত বাজেয়াপ্ত হবে। একাধিক যাত্রী থাকলে প্রতিজনের জন্য পাঁচ লাখ টাকা হারে জামানত বাজেয়াপ্ত হবে।