ধর্মীয় সম্প্রীতি রক্ষায় সরকার সজাগ রয়েছে। ধর্মীয় উন্মাদনা তৈরি করে কেউ যেন সমাজে অশান্তি ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে সে বিষয়ে দল, মত ও ধর্ম নির্বিশেষে জনগণকে সজাগ ও ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
রোববার (১০ অক্টোবর) সকালে পটুয়াখালী জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সচেতনতামূলক প্রচার-প্রচারণার আওতায় অনুষ্ঠিত ‘আন্তঃধর্মীয় সংলাপ’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি বক্তব্যে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান এসব কথা বলেন।
প্রকৃত ধার্মিক কখনো অন্য ধর্মকে হেয় করে না। পবিত্র ধর্ম ইসলামের নাম ব্যবহার করে যারা উন্মাদনা সৃষ্টি করতে চায় তাদের বিষয়ে সরকার সজাগ রয়েছে উল্লেখ করে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী সকল ধর্মের অনুসারীদের কল্যাণে গত ১২ বছরে যে ব্যাপক উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হয়েছে তা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, এতসব উন্নয়ন কার্যক্রমের বিষয়ে জানলে সব সম্প্রদায়ের মানুষই আনন্দিত হবেন।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের চাহিদার আলোকে প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। গত ১২ বছরে সরকারের গৃহীত এ সকল প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে সকল ধর্মীয় সম্প্রদায়ের ধর্মীয় বিধি-বিধান, উৎসব ও অনুষ্ঠানাদি পালন সহজ ও উন্নত হয়েছে।
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী বলেন, সরকার বৃহত্তর ধর্মীয় জনগোষ্ঠী মুসলমানদের কল্যাণে প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে সারাদেশে ৫৬০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করছে। এ ছাড়া বর্তমান সরকার হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের স্থায়ী মূলধন ২১ কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে ১০০ কোটি টাকায় উন্নীত করেছে। এই প্রথম ‘সমগ্র দেশে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মন্দির ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন ও সংস্কার’ শীর্ষক প্রকল্পের মাধ্যমে ২৬২ কোটি ৯৫ লাখ টাকা ব্যয়ে সারাদেশে মোট ২৩৫১টি মন্দির ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের সংস্কার করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে ৫৪৭টি মন্দিরের নির্মাণ কাজ ১০০% সম্পন্ন হয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ২৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩টি কর্মসূচির অধীনে শ্রী শ্রী ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির ও শ্রী শ্রী সিদ্ধেশ্বরী মন্দির, ঢাকাসহ চট্টগ্রাম, গোপালগঞ্জ ও হবিগঞ্জ জেলায় মোট ১৯৮টি মঠ, মন্দির ও শ্মশান সংস্কারের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে ঢাকাশ্বেরী মন্দিরের উন্নয়নে আরও ১০ কোটি টাকার উন্নয়ন ও সংস্কার কাজ চলমান রয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী আরও জানান, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন এবং ব্যক্তিদের কল্যাণে পর্যাপ্ত অনুদান সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক (ভারপ্রাপ্ত) মো. হুমায়ুন কবিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় আরও বক্তব্য রাখেন- কাজী কানিজ সুলতানা এমপি, পটুয়াখালী জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান মোহন, পটুয়াখালী পৌরসভার মেয়র মহিউদ্দিন আহম্মেদ, সিভিল সার্জন মো. জাহাঙ্গীর আলম, পটুয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী আলমগীর, ইমামদের প্রতিনিধি, সাংবাদিক প্রতিনিধি প্রমুখ।
সভায় জেলার বিভিন্ন স্তরের জনপ্রতিনিধি, সরকারি কর্মকর্তাবৃন্দ, মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন পেশাজীবী শ্রেণির প্রতিনিধিবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।
এর আগে সকালে পটুয়াখালী জেলা ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত ‘ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সচেতনতামূলক প্রশিক্ষণ’ অনুষ্ঠানে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন।