জীবনের সবক্ষেত্রে হজরত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আদর্শের অনুসরণ-অনুকরণ করতে হবে। আইয়্যামে জাহেলিয়াতের ঘোর অন্ধকারে নিমজ্জিত আরব জাতি রাসুল (সা.)-এর আদর্শের ছোঁয়ায় নবুওয়তের মাত্র ২৩ বছরেই বিনির্মাণ করেছেন এক নতুন পৃথিবী। তাই সামাজিক অবক্ষরোধ, অন্যায়-জুলুম ও অনৈতিকতার হাত থেকে বাংলাদেশকে রক্ষা করে ইনসাফপূর্ণ, শান্তিময় ও সমৃদ্ধশালী কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় আমাদেরও রাসুল (সা.)-এর আদর্শ অনুসরণ করতে হবে জীবনের সকলক্ষেত্রে।
শুক্রবার (৫ নভেম্বর) দিনব্যাপী রাজধানীর কাজী বশির মিলনায়তনে জাতীয় সিরাত সম্মেলন, পুরস্কার বিতরণ, বিশ্বজয়ী হাফেজ-কারিদের সংর্বধনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই এসব কথা বলেন।
পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, পরকালের নাজাতের জন্য ব্যক্তি জীবনের সর্বক্ষেত্রে রাসুল (সা.)-এর আদর্শ অনুসরণ ও বাস্তবায়ন করাই হচ্ছে- প্রকৃত মুমিন-মুসলমানের কাজ। রাসুল (সা.)-এর জীবনাদর্শ প্রতিষ্ঠা করতে পারলে সমাজে শান্তি ও সম্প্রীতি গড়ে তোলা সম্ভব। বিশ্বব্যাপী অশান্তি ও দূর্দশাগ্রস্ত জাতিকে সঠিক পথে পরিচালনা করতে হলে, নবীর আদর্শ প্রতিষ্ঠার কোনো বিকল্প নেই। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় হজরত রাসুল সাল্লাল্লাহু সালামের আদর্শই একমাত্র সমাধান। রাসুল (সা.) কেবল মুসলমানদের নেতা ছিলেন না বরং তিনি সব মানুষের নেতা ছিলেন। সবার স্বার্থ তিনি নিশ্চিত করেছেন।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত জাতীয় সিরাত সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রিন্সিপাল মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানি, মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, দলের শরিয়া বিষয়ক উপদেষ্টা মুফতি ওমর ফারুক সন্ধিপী।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সিরাত সম্মেলনে বিষয়ভিত্তিক আলোচনায় অংশ নেন দৈনিক ইনকিলাবের সহ-সম্পাদক মাওলানা উবায়দুর রহমান খান নদভি, দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, দৈনিক নয়াদিগন্তের সহ-সম্পাদক মাওলানা লিয়াকত আলী, ঢাকা মহানগর উত্তর সভাপতি প্রিন্সিপাল মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ, লেখক ও গবেষক মাওলানা যাইনুল আবিদীন, বারিধারা কেন্দ্রীয় মসজিদের খতিব মাওলানা সাইয়্যেদ জুলফিকার জহুর, শেখ ফজলুল করীম মারূফ, ছাত্রনেতা নুরুল করীম আকরাম।
সম্মেলন পরিচালনা করেন জয়েন্ট সেক্রেটারী ডা. শহিদুল ইসলাম ও মাওলানা জিয়াউল আশরাফ।
সিরাত সম্মেলনে ৬ দফা প্রস্তাবনা পেশ করেন শেখ মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। প্রস্তাবনায় বলা হয়, ১. বিশ্ব মানবতার মুক্তিদূত হজরত মুহাম্মদ (সা.) শেষ নবী এবং সর্বোচ্চ সম্মানীয় ব্যক্তি। বাংলাদেশের সংবিধানে তা সংযুক্ত করা। ২. আল্লাহ, রাসুল ও ইসলামের অবমাননারোধে সুনির্দিষ্ট আইন প্রণয়ন। ৩. খতমে নবুওয়ত অস্বীকারকারী কাদিয়ানীদের অমুসলিম ঘোষণা করা। তবে সংখ্যালঘু হিসেবে তাদের বসবাসের সুযোগ থাকবে। ৪. জাতীয় জীবনের সর্বত্র সিরাতুন্নবী (সা.) অনুসরণের লক্ষে জাতীয় সিরাত একাডেমি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়া। ৫. জাতীয় শিক্ষাক্রমের সর্বত্র সিরাত পাঠ বাধ্যতামূলক করা। ৬. সম্মেলন থেকে দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের প্রতি খতমে নবুওয়ত অস্বীকারকারী কাদিয়ানীদের যাবতীয় পণ্য বর্জন করা আহ্বানও জানানো হয়।