মসজিদের মাইক ধর্মীয় কাজ ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না। জুমার খুতবায় ইসলামের প্রকৃত ব্যাখা তুলে ধরতে হবে। ওয়াজ মাহফিলে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের নজরদারি করতে হবে। ফেসবুক ও ইউটিউবসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নজরদারি করতে হবে, যারা উন্মাদনা সৃষ্টি করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চায়, তাদের চিহ্নিত করে প্রয়োজনে আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে।
রোববার (১৪ নভেম্বর) ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় পরিচালিত ‘ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সচেতনতা বৃদ্ধিকরণ’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ‘আন্তঃধর্মীয় সংলাপে’ প্রধান অতিথির বক্তব্যে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান এমপি এসব কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, দুর্গাপূজার সময় রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য পরিকল্পিতভাবে কুমিল্লার ঘটনা ঘটিয়েছে একটি অপশক্তি। আগামীতে কুমিল্লার ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটতে দেওয়া যাবে না। এ বিষয়ে সমাজের প্রতিটি ধর্ম, শ্রেণি ও পেশার মানুষকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে।
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ধর্মকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না। একটি গোষ্ঠী নির্বাচনকে সামনে রেখে ধর্মকে টেনে এনে রাজনীতি করে এ দেশে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চাইছে। তাদের এ উদ্দেশ্য সফল করতে দেওয়া হবে না।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ধর্মীয় নেতৃবৃন্দকে তাদের আলোচনায় পারস্পরিক সহমর্মিতা, সহনশীলতা এবং অন্য ধর্মের প্রতি উদারতার বিষয়েগুলোকে নিয়ে আসতে পারেন। পাশাপাশি শিক্ষা কার্যক্রমে ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সহনশীলতার চর্চা বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে।
ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার, ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনোয়ার, ঝিনাইদহ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কনক কান্তি দাস, ঝিনাইদহ পৌরসভার মেয়র সাইদুল করিম মিন্টু, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের ঝিনাইদহ জেলা শাখার সভাপতি নারায়ণ চন্দ্র বিশ্বাস, সাধারণ সম্পাদক সুরেশ সমাদ্দার।
পরে বিকেলে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী চুয়াডাঙ্গায় জেলা প্রশাসনের আয়োজনে জেলা প্রশাসকের সভাকক্ষে আয়োজিত সংলাপ অনুষ্ঠানেও প্রধান অতিতি হিসেবে যোগ দিয়ে বক্তব্য রাখেন।
জেলা প্রশাসক মো. নজরুলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংলাপে আরও বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার মো. জাহিদুল ইসলাম, দামুড়হুদা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলী মনসুর বাবু, ইসলামিক ফাউণ্ডেশন খুলনা বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক মো. ফজলুর রহমান, সাবেক পাবলিক প্রসিকিউটর এড. শামসুদ্দোহা, চুয়াডাঙা পুরোহিত ব্রাহ্মণ ঐক্য পরিষদের সভাপতি দেবেন্দ্রনাথ দোবে বাবুলাল, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ চুয়াডাঙ্গার সভাপতি ডা. মার্টিন হিরক চৌধুরী, সাংবাদিক শাহ আলম সনি, মাওলানা বশির উদ্দিন, মাওলানা মুফতি জুনাইদ আল হাবিবী প্রমুখ।
সংলাপে জনপ্রতিনিধি, সরকারি কর্মকর্তা, সাংবাদিক, বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ ও প্রতিনিধিগণ সেমিনারে অংশগ্রহণ করেন।