কাতারের ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে ইমাম ও মোয়াজ্জিন পদে লোক নিয়োগ দেওয়া হবে। আগ্রহী প্রার্থীরা এই লিংকে যেয়ে নিম্নের শর্তাবলি পূরণ করে আবেদন করার সুযোগ পাবেন।
অনলাইনে আবেদন করার নিয়ম ও আবেদনের সময় যা যা লাগবে-
১. পাসপোর্টর কপি ( মেয়াদ নূন্যতম ৬ মাস থাকতে হবে)।
২. কোরআনে কারিমের হাফেজ হওয়ার সার্টিফিকেট।
৩. সর্বশেষ পড়াশোনার যোগ্যতা ও সব বিষয়ের সার্টিফিকেট।
৪. এক কপি কালার ছবি ও আরবিতে জীবন বৃত্তান্ত ই-মেইল অ্যাড্রেসও দিতে হবে।
৫. MP3 ফরম্যাটে ২/৩ মিনিটের কোরআন তেলাওয়াত রেকর্ড করে সাবমিট করতে হবে।
৬. কাতারি মোবাইল নম্বর। (কাতারে অবস্থানরত পরিচিত কারও নম্বর দিলেই হবে।)
৭. আবেদনের সময় বয়স ২০ থেকে ৪৫ এর মধ্যে হতে হবে।
৮. সব ধরনের ডকুমেন্ট- বিশেষ করে পাসপোর্ট কপি, স্ক্যানার দিয়ে স্ক্যান করে সাবমিট করতে হবে।
৯. অনলাইনে আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পর, আবেদনকৃত লিংকের মাধ্যমে লিখিত পরীক্ষার সময়সূচি জানানো হবে।
১০. পরীক্ষা দিতে কাতারে আসা-যাওয়ার যাবতীয় ব্যায়ভার প্রার্থীকে বহন করতে হবে।
১১. পরীক্ষা সাধারণত মহররম ও শাবান মাসের মধ্যে হয় (তবে পরিক্ষা এখনও চলমান।)
পরিক্ষার জন্য নির্ধারিত কিতাব
১. ইমাম ও মোয়াজ্জিনের জন্য সম্পূর্ণ কোরআন৷
২. ফিকহ (منار السبيل في شرح الدليل للضويان) من باب الطهارة الى نهاية باب الحج للإمام ) পবিত্রতার অধ্যায় থেকে হজ অধ্যায়ের শেষ পর্যন্ত ইমামের জন্য এবং মোয়াজ্জিনের জন্য কিতাবুত তাহারাত থেকে জানাজা অধ্যায়ের শেষ পর্যন্ত।
৩. আকাইদ- أعلام السنةالمنشورة কিতাব সম্পূর্ণ।
পরীক্ষা ও নিয়োগ আবেদন
পরীক্ষা দুই পর্বে হবে, লিখিত ও মৌখিক।
১. লিখিত পরিক্ষার এক সপ্তাহ পরে মৌখিক পরীক্ষা হবে।
২. মৌখিক পরিক্ষায় পবিত্র কোরআন থেকে মোট ৫ টি প্রশ্ন থাকবে, প্রতিটি প্রশ্নের উওর এক পৃষ্ঠা করে শোনা হবে পাশাপাশি ফিকাহ ও আকাইদুল ইসলামিয়া থেকে প্রশ্ন থাকবে।
৩. পরিক্ষায় অকৃতকার্য হলে ৬ মাস পর আরও একবার সুযোগ দেওয়া হবে। (তবে এখন একাধিকবার সুযোগ দিচ্ছে)
ইমাম-মুয়াজ্জিনদের সুযোগ-সুবিধা
১. বেতন: মুয়াজ্জিনদের জন্য 1043$ = ৩ হাজার ৮০০ কাতারি রিয়াল (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৮৯ হাজার ৩০০ টাকা)।
২. আবাসন (তিনটি কক্ষ : হল, তিনটি বাথরুম, রান্নাঘর)।
৩. পানি ও বিদ্যুৎ বিলের জন্য ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণে দেওয়া হবে।
৪. ফ্যামিলি ভিসার ক্ষেত্রে স্ত্রী ও ২ সন্তানের (১৮ বছরের কম হলে) ইকামার খরচ সরকার বহন করবে। দুই সন্তানের বেশি-১৮ এর ওপরে বয়স হলে মাথাপিছু ৫০০ রিয়াল করে ইক্বামা বাবদ পরিশোধ করতে হবে।
৫. কাজে যোগদাননের তিন মাস পর ঋণের জন্য আবেদন করার সুযোগ থাকবে, যার পরিমাণ হবে- মূল বেতনের ৫ গুণ। এটা পরিশোধ করা যাবে চার বছরে। প্রতি মাসে ৫০০ বা ১০০০ রিয়াল করে বেতন থেকে কেটে নেওয়া হবে। কোনো লাভ নেওয়া হবে না (তবে আপাতত বন্ধ)।
৫. খুতবা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে বেতন ১০০০ এবং হিফজ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে ১৫০০ রিয়াল করে বেতন বৃদ্ধি করা হবে।
৬. বেতনসহ বার্ষিক ৪০ দিনের ছুটির টাকা ও দেওয়া হবে।
৭. এককালীন ১০ বছরের পেনশন থাকবে।
৮. সরকারি স্কুলে বাচ্চাদের পড়ানো ফ্রি।
এছাড়া ধীরে ধীরে আরও বেতন ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো হবে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ থেকে সর্বপ্রথম ১৯৯০ সালে সরকারিভাবে ইমাম-মোয়াজ্জিন নেওয়া শুরু করে কাতার। প্রায় দুই দশক ধরে রাজধানী দোহাসহ কাতারের বিভিন্ন শহরের মসজিদে সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন বাংলাদেশিরা। বলা চলে, কাতারের মোয়াজ্জিন ও ইমামদের অধিকাংশই বাংলাদেশি।
২০১৭ সালে নিয়োগের পর ২০১৯ সালেও বাংলাদেশি ইমাম-মোয়াজ্জিন নিয়োগ দিয়েছে দেশটি। এবারও শতাধিক ইমাম-মোয়াজ্জিন নেবে বিশ্বের অন্যতম ধনী এই দেশ।