১২ রবিউল আউয়াল তারিখে উতপ্ত বালুকাময় আরবের অন্ধকার সমাজে আলো হয়ে এসেছিলেন মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। পাপাচার, অনাচার ও কুসংস্কারে ডুবন্ত পৃথিবীকে তিনি দিয়েছেন আলো। মানুষ ও পৃথিবীর জন্য মুহাম্মদ (সা.) হলেন মুক্তির দিশা।
শোষণ, বঞ্চনা ও নিপীড়নের দুনিয়া থেকে মানুষের মুক্তিদূত তিনি। নিজের জীবন ও কর্মের মাধ্যমে মানবতার অনুপম দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। ত্যাগ, কৃচ্ছ্রসাধন, পরহিত ও কল্যাণের প্রতীক তিনি।
ক্ষমা, মহত্ত্ব ও সান্ত্বনার অসীম আকাশের মতো শত্রুকে করেছেন মিত্র। পরাজিতকে দিয়েছেন নিরাপত্তা। প্রতিশোধের বদলে তাঁর কাছ থেকে পাওয়া গেছে আশ্রয়।
সম্পদ ও ক্ষমতা হাতের মুঠোয় চলে এলেও তা বিলিয়ে দিয়েছেন সহায়-সম্বলহীন মানুষের জন্য। নিজের জন্য বেছে নিয়েছেন কষ্টের জীবন। মানুষ ও মানবতার জন্য নবী ও নবী বংশের আত্মত্যাগ পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। পৃথিবীর সকল ধর্ম, বর্ণ, বিশ্বাসের মানুষ সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছেন তাঁকে।
জাগতিক কোনও লাভের দিকে তিনি কখনো ভ্রূক্ষেপ করেন নি। চেয়েছেন মানুষের ইহ ও পরকালীন কল্যাণ। মানুষকে মানুষের শৃঙ্খল ও দাসত্ব থেকে মুক্তি দিতে চেয়েছেন তিনি। চেয়েছেন স্রষ্টা ও সৃষ্টির মধ্যে সংযোগ স্থাপন করতে।
পথহারা মানুষ তাঁর মাধ্যমে পেয়েছে পথের খোঁজ। নিজেকে চিনেছে। মানুষ হিসাবে নারী ও পুরুষের অধিকার সমুজ্জল হয়েছে তাঁর আলোময় স্পর্শে। হানাহানির সমাজ হয়েছে প্রেমময়।
'লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ'-এর বাণী প্রচারের মাধ্যমে মানুষকে একত্ববাদের শিক্ষা দিয়েছেন তিনি। ঐশী গ্রন্থ পবিত্র কোরআনের অমীয় বাণীর পরশে এক ও অদ্বিতীয় আল্লাহর আদেশ ও নিষেধসমূহ জানিয়ে দিয়েছেন বিশ্ব মানবতাকে।
তিনি আছেন রাহমাতাল্লিল আলামিন হয়ে। আছেন পৃথিবী ও অপরাপর জগতসমূহের জন্য রহমত বা করুণাস্বরূপ। পৃথিবীতে কিয়ামত বা বিলয়প্রাপ্তি আসার পূর্ব-পর্যন্ত মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালার পক্ষ থেকে তিনি আছেন সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবী হয়ে; আছেন অনিঃশেষ আলোকবর্তিকা হয়ে।
মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি সালাম ও লক্ষ-কোটি দরুদ। বিশ্বব্যাপী বিশ্বাসী মানুষের আত্মা ও কণ্ঠ থেকে তাঁর জন্য উৎসারিত শ্রদ্ধা, ভালোবাসা ও প্রেমময় ধ্বনিসমূহ বাংলাদেশের প্রান্ত থেকে আমরাও হৃদয়ের সবটুকু উষ্ণতা দিয়ে উচ্চারণ করি: আল্লাহুমা সাল্লি আলা মুহাম্মাদ, ওয়া আলা আলী মুহাম্মাদ।