পবিত্র হজ কিংবা ওমরাহ উপলক্ষ্যে মক্কা ও মদিনা সফরের যারা গিয়েছেন, তারা জানেন, সে সময় নবীপ্রেমে আপ্লুত একটি নাতে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরবের ঘরে ঘরে, পথে প্রান্তরে শোনা যায়। শিশু-কিশোরদের কণ্ঠে গীত সে গান মাইকে, ক্যাসেট প্লেয়ারে সারা দিনই পরিবেশিত হয়। যার প্রথম লাইন: "ত্বালা’ আল বাদরু 'আলাইনা", তার বাংলা অর্থ হলো "পূর্ণিমার চাঁদ আমাদের কাছে এসেছে"।
"ত্বালা’ আল বাদরু 'আলাইনা" আরবি ভাষার একটি ঐতিহ্যবাহী ও সুপ্রাচীন ইসলামি গান, যাকে ইসলামি পরিভাষায় 'নাশিদ' বলা হয়ে থাকে। হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন আল্লাহর নির্দেশে মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত করেন, তখন মদিনার লোকজন, যাদের আনসার বলা হয়, তারা এই গান/গজল গেয়ে তাঁকে তাদের মধ্যে সাদরে বরণ করে নিয়েছিলেন।
উল্লেখ্য, এই ইসলামিক গানটি/গজলটি ১৪০০ বছরেরও বেশি পুরনো এবং ইসলামি সংস্কৃতির একটি অনন্য নিদর্শন রূপে এখনও অটুট। বস্তুত
মহানবী হজরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ১২ রবিউল আউয়াল দুনিয়াতে শুভাগমন করেন। নবীর মুবারক দায়িত্ব বা রিসালাতের মহামিশনের সফলতা পরিপূর্ণ করেন তিনি। ইসলামি সাম্যের সমাজ প্রতিষ্ঠার সূচনা যে হিজরত, তা-ও সংঘটিত হয়েছিল এ মাসেই। আবার এই মাসেরই ১২ তারিখে আখেরি নবীর তিরোধান বা ওফাত হয়েছিল।
"ত্বালা’ আল বাদরু 'আলাইনা" আরবি ভাষার এই ঐতিহ্যবাহী ও ঐতিহ্যবাহী ইসলামি গান বা 'নাশিদ'-এর অর্থ ও মর্মবাণী অপূর্ব। নবীপ্রেমের ঝর্ণাধারা প্রবাহিত গানের প্রতিটি কথা ও শব্দে।
আরবি গানটি নিম্নরূপ:
"তা’লা আল বাদরু আলাইনা
মিন ছানি’য়া তিল –ওয়া’দা
ওজাবাশ শুক’রু আলাইনা
মা দা আ লিল্লাহি দা
আইয়্যু হা’ল মাব উ’ছু ফিনা
জি’তা বি’ল-আম্রিল -মু’তা
জি’তা শার’রাফ তা’ল-মদিনা
মারহাবান ইয়া খাইরা দা"
গানটির বঙ্গানুবাদ নিম্নরূপ:
"পূর্ণিমার চাঁদ আমাদের উপর(কাছে) এসেছে
ওয়া'দা‘ উপত্যকা থেকে (যে উপত্যকা দিয়ে হযরত মুহাম্মাদ (দ.) মদিনায় প্রবেশ করেন)
এবং তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা আমাদের অবশ্য কর্তব্য
যতদিন আল্লাহর অস্তিত্ব/আল্লাহকে ডাকার মত কেউ থাকবে;
ওহ, আমাদের পথ প্রর্দশক আজকে আমাদের মধ্যে
যিনি (আল্লাহর পক্ষ থেকে )আদেশ/উপদেশ নিয়ে এসেছেন, যার প্রতি আমাদের কর্ণপাত করতে হবে;
আপনি এই শহরের জন্য প্রশংসা/মর্যাদা বয়ে নিয়ে এসেছেন
স্বাগতম আপনাকে, যিনি আমাদের সঠিক পথ দেখাবেন/সঠিক পথ সম্বন্ধে বলবেন।"