কয়েক বছর আগে এক রমজানে মক্কার মসজিদুল হারামে তার সঙ্গে দেখা। তখন ইফতারের সময়। আল্লাহর ঘরের ঐতিহ্যানুসারে লাখো মুসুল্লি রোজা নিয়ে দস্তরখানায় অপেক্ষারত।
আরবি ভাষায় দস্তরখান বা দস্তরখানা (শব্দটি ফারসি)-এর নাম ছুফরা। ছুফরায় রুটি, দই, খেজুর রাখা হয় ইফতারের জন্য। আমরা ছিলাম বিশাল মসজিদ কমপ্লেক্সের সাফা-মারওয়া অংশে। সেখানে এক বাংলাদেশি ইফতার সামগ্রী বিলাচ্ছেন।
অবাক হলাম এজন্য যে, সাধারণত ইফতার সৌদি রাজকীয় সরকার বা আরব শেখগণ দিয়ে থাকেন। বাংলাদেশির উদ্যোগ দেখে খুশি হলাম।
সেবার রমজান শেষ ঈদ পালন করি পবিত্র মক্কা নগরে। ঈদের দিন রাতে মক্কার বাঙালি আবাসিক এলাকা নাক্কাসায় গেলাম দাওয়াত খেতে এবং সেখানে সেই ভদ্রলোককে পেলাম, যিনি ইফতার সরবরাহ করছিলেন।
তার নাম আকবর আলী। বাড়ি রাজশাহী। ঢাকা ও রাজশাহীতে আত তাইয়্যেরা ট্রাভেলস চালান। বললেন, 'আল্লাহ মেহমানদের খেদমত করে করে আমি শূন্য থেকে কোটিপতি হয়েছি। হাজিদের সেবা করাই আমার জীবনের লক্ষ্য। ফলে আমি সুযোগ পেলেই তাদের খেদমতে হাজির হই।'
প্রাতিষ্ঠানিক বিশেষ পড়াশোনা নেই আকবর আলীর। কিন্তু বাস্তব জীবন থেকে প্রভূত জ্ঞান অর্জন করে তিনি স্বশিক্ষিত হয়েছেন। উত্তরবঙ্গের রাজশাহী, পাবনা, দিনাজপুরে স্কুল, কলেজ, ভোকেশনাল ও পলিটেকনিক গড়েছেন। ঘুরেছেন প্রায়-পুরো পৃথিবী।
বার্তা২৪.কমকে তিনি বলেন, 'আমার কিছুই ছিল না। আল্লাহর মেহমানদের পেছনে মেহনত করে আমি সব কিছু পেয়েছি। অতএব আমার শক্তি, সম্পদ আল্লাহর পথে, মানুষ ও মানবতার কল্যাণে ব্যয় করাই আমার কর্তব্য।'
আকবর আলীর স্বপ্ন হলো, বাংলাদেশের সব সামর্থ্যবান মানুষ যেন হজ করতে পারেন। তিনি মাসে ১০০০ হাজার টাকার কিস্তিতে সঞ্চয় গড়ে অল্প টাকায় মানুষকে হজে গমনে উদ্বুদ্ধ করছেন। ব্যাপক সারাও পেয়েছেন তিনি। এই লক্ষ্যে কাজ করতে গিয়ে তিনি 'হজ আপনার খেদমত আমাদের' শীর্ষক প্রণোদনা ছড়িয়ে দিচ্ছেন।
বার্তা২৪.কমকে আকবর আলী বলেন, দালাল বা মধ্যসত্ত্বভোগীদের এড়িয়ে হজ করা উচিত। তাহলে কম টাকায় হজ করা যায়। জেনে-বুঝে আমল করলে তার আনন্দ ও তৃপ্তি অনেক গভীরভাবে উপলব্ধি করা যায়।
তিনি স্পষ্ট ভাষায় দাবি করেন, 'হজ নিয়ে আমি ব্যবসা করি না। কখনো করতে চাই না। আমি হাজিগণের খেদমত করতে চাই। যে কেউ কোনো সাহায্য বা পরামর্শের জন্য যোগাযোগ করলে আমি তাদেরকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।'
তার ঠিকানা, আত তাইয়্যেরা ইন্টারন্যাশনাল, ৩০/এ, নয়া পল্টন, সাততারা সেন্টার (৮ম তলা), ভিআইপি রোড, ঢাকা। ফোন: ০১৮১৯৭৬০০৬৫