কানাডায় প্রথমবারের মতো অ্যান্টি ইসলামফোবিয়া কর্মকর্তা হিসেবে আমিরা এলগাওয়াবিকে নিয়োগ করেছে। দেশটির মুসলিম জনগোষ্ঠীকে বিদ্বেষপূর্ণ হামলা থেকে রক্ষার জন্য এই উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, পুলিশের হিসাবমতে, ২০২১ ও ২০২২ সালে জি-৭ভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে কানাডাতেই মুসলিমদের ওপর হামলা হয়েছে সবচেয়ে বেশি। ওই সময়ে মুসলিমদের ওপর যত হামলা হয়, তার ৭১ ভাগই ছিল ইসলামবিদ্বেষী আক্রমণ।
কানাডায় ইসলামফোবিক হামলার সবচেয়ে বড় ঘটনা ঘটে ২০২১ সালের আফজাল পরিবারের ওপর। পাকিস্তানি ওই পরিবারটি পরিকল্পিত হামলার শিকার হয়। হামলাকারী নাথানিয়েলের বিরুদ্ধে খুন এবং সন্ত্রাসবাদ সংশ্লিষ্ট অভিযোগ আনা হয়েছে।
কানাডায় ইসলামফোবিক হামলা বাড়ার প্রেক্ষাপটেই পদটি সৃষ্টির তাগিদ সৃষ্টি হয়। বিভিন্ন সংস্থা পরিস্থিতি মোকাবেলায় এগিয়ে আসে।
আমিরা কেবল ইসলামফোবিয়ার ব্যাপারে সচেতনতাই বাড়াবেন না, সেই সঙ্গে বিভিন্ন সম্প্রদায় এবং কর্তৃপক্ষের সঙ্গে লিয়াজোঁর দায়িত্বও পালন করবেন। মুসলিমদের উদ্বেগের বিষয়গুলো কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে উত্থাপন করবেন।
আমিরা কানাডার সাংবাদিক। তাছাড়া মানবাধিকার কর্মী হিসেবেও তার পরিচিতি রয়েছে। তার মা-বাবা মিসরীয়। তার বাবা ছিলেন প্রকৌশলী। তার বয়স যখন ২, তখন তিনি তার মায়ের সঙ্গে কানাডায় অভিবাসন করেন।
কানাডায় ইসলাম ধর্ম সবচেয় দ্রুতগতিতে প্রসার লাভ করছে বলে একটি পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়। ১৯৯৬ সালের পর থেকে মুসলিমদের সংখ্যা তিনগুণ হয়েছে বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে কানাডার একটি পরিসংখ্যান।
দ্য ওয়েস্টার্ন স্ট্যান্ডার্ড এক প্রতিবেদনে বলা হয়, কানাডায় দীর্ঘ সময়ে উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় পরিবর্তন হয়েছে। সমাজে এর প্রভাব সুদূর প্রসারী।
১৯৯৬ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত গত ২৫ বছরে কানাডার বিভিন্ন ধর্মীয় গোষ্ঠীর সামষ্টিক পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, মুসলিম জনসংখ্যা শতকরা ১ দশমিক ১ থেকে বেড়ে ৩ দশমিক ৭ হয়। ইহুদি জনসংখ্যা শতকরা ১ দশমিক ১ থেকে কমে ১ হয়। শিখ জনসংখ্যা শূণ্য দশমিক ৭ থেকে দ্বিগুণ হয়ে ১ দশমিক ৪ হয়। হিন্দু জনসংখ্যা শূণ্য দশমিক ৫ থেকে বেড়ে ১ দশমিক ৭ হয়।
উইকিপিডিয়ার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে কানাডার মোট জনসংখ্যার পরিমাণ প্রায় ৩ কোটি ৫৮ লাখ ৮১ হাজার ৬৫৯ জন। তন্মধ্যে দেশটির মুসলিম জনংখ্যার পরিমাণ ৩.২ শতাংশ অর্থাৎ ১১ লাখ ৪৮ হাজার ২১৩ জন।