ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে সুইডেনকে বিবেচনা করা হয় সবচেয়ে প্রগতিশীল দেশ হিসেবে। কারণ দেশটি শরণার্থী আর উদ্বাস্তুদের সাদরে গ্রহণ করতো। ২০১৫ সালে ১ লাখ ৬৩ হাজার অভিবাসীকে আশ্রয় দেয় দেশটি। ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে জনসংখ্যা অনুসারে এটা ছিল সর্বোচ্চসংখ্যক অভিবাসী গ্রহণের ঘটনা।
সুইডেনে ৯ সেপ্টেম্বর সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে ৭ জন মুসলিম সংসদ সদস্য হিসেবে বিজয়ী হয়েছেন। তন্মধ্যে পাঁচজন নারী। বিজয়ীদের ৬ জন কুর্দি মুসলিম, অন্যজন সোমালিয়ান বংশোদ্ভূত সুন্নি মুসলিম লায়লা আলি আলমি।
বিজয়ী অন্য ৬ সদস্য হলেন- সুইডেন ডেমোক্র্যাটসের সারা সেপ্পালা, লিবারেল পার্টির গুলান আফগি, লেফটিস্ট পার্টির আমিনা কাকাবাভে, রোজা গোকলো হেইদেইন, সোস্যাল ডেমোক্র্যাটসের সারকান কোসা, লাওয়েন রিদর ও কাদির কাসিরকা।
আমেরিকার স্টেট ডিপার্টমেন্টের এক হিসাবে বলা হয়েছে, সুইডেনে বর্তমানে প্রায় ৬ লাখ মুসলমান বসবাস করছেন। সম্প্রতি আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৯৯৮ সালে সুইডেনে ৩.২১ শতাংশ মুসলিম ছিল। কিন্তু ২০১৪ সালে এসে এ সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণে পৌঁছে। ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, অন্য ধর্মাবলম্বীরা যে হারে ইসলাম গ্রহণ করছে, এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে ২০৩০ সালের মধ্যেই সুইডেনে মোট জনসংখ্যার ৪০ শতাংশ হবে মুসলিম।
নির্বাচিত নারী সদস্যের মাঝে লায়লা আলি আলমি একমাত্র হিজাবধারী সদস্য। সে হিসেবে বলা চলে, দ্রুততম সময়ের মধ্যে দেখা যাবে- সুইডেনের পার্লামেন্টে হিজাব পরা এক সদস্য বক্তব্য রাখছেন, পার্লামেন্টের বিভিন্ন বিতর্কে অংশ নিচ্ছেন। লায়লার বয়স মাত্র ৩০।
লায়লা আলি আলমির পরিবার সোমালি। তার বয়স যখন মাত্র দুই, তখন তার পরিবার দেশের গৃহযুদ্ধ থেকে বাঁচতে পালিয়ে সুইডেন চলে আসে। অভিবাসী বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে জড়িত লায়লা উচ্চ শিক্ষা নিয়েছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্কে। সেপ্টেম্বরের নির্বাচনে লায়লা অভিবাসীদের পক্ষে জোরালো অবস্থান নিয়ে বিস্ময়করভাবে বিজয়ী হন।
নির্বাচনের বিজয় প্রসঙ্গে লায়লা আলি বলেছেন, আমি গ্রিন পার্টির সদস্য। নির্বাচনী প্রচারণার সময় আমার বিরুদ্ধে যে বর্ণবাদী প্রতিক্রিয়া দেওয়া হয়েছে তাই আমাকে বিজয়ী হতে সহায়তা করেছে। আমি নির্বাচিত হয়ে এমপি হই ওই বর্ণবাদীরা আসলে তা চায়নি। এ জন্য তারা প্রস্তুত ছিল না।
-গার্ডিয়ান অবলম্বনে