সমাজের সব ধর্মের মানুষের মধ্যে ইসলামের পরিচিতি তুলে ধরতে বিট্রেনে ‘আমার মসজিদ ভ্রমণ করুন’ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। গত শনিবার ও রবিবার (২৩-২৪ সেপ্টেম্বর) অনুষ্ঠিত মুসলিম কাউন্সিল অব ব্রিটেন (এমসিবি)-এর ‘ভিজিট মাই মস্ক’ কার্যক্রমে দেশটির আড়াই শতাধিক মসজিদ অংশ নেয়।
এই কর্মসূচির মাধ্যমে সব ধর্ম ও বর্ণের দর্শক ইসলাম সম্পর্কে জানার সুযোগ লাভ করেন। সামাজিক সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যবোধ তৈরি করতে এ সময় দর্শনার্থীদের মধ্যে খাবার ও উপহার সামগ্রী বিতরণ করা হয়।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘হ্যাশট্যাগভিজিটমাইমস্ক’ লিখে প্রচারণা চালায় এমসিবি কর্তৃপক্ষ।
লুটন শহরের ইউকেআইএম মদিনা মসজিদে ২৫ বছর ধরে নামাজ চলছে। মসজিদটির ট্রাস্টি মাকসুদ আনোয়ার বলেন, ‘মসজিদ ভ্রমণের মাধ্যমে পারস্পরিক বোঝাপড়া সুদৃঢ় হয়। আপনি একবার একে অন্যের বিশ্বাস সম্পর্কে জানলে তা মানুষকে কাছাকাছি নিয়ে আসে। পারস্পরিক দূরত্ব দূর হয়। একে অপরের প্রতি সন্দেহ দূর হয়। মুসলিম হিসেবে মানুষকে একত্র করা এবং বার্তা পৌঁছে দেওয়া আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’
সাফোকের ব্রুমে সিদ্দিকা নওয়াজ ব্রুম মসজিদ এবং মেডিটেশন সেন্টারের ইভেন্ট কো-অর্ডিনেটরের দায়িত্ব পালন করছেন ফাতমা বোধি।
তিনি বলেন, ‘মসজিদ ভ্রমণের দিনকে মানুষ প্রশ্ন করার সুযোগ হিসেবে ব্যবহার করে। আমরা মনে করি, এই দিনে মানুষ আমাদের সম্পর্কে জানার সুযোগ পেয়েছে। স্থানীয় সম্প্রদায়ের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ার ক্ষেত্রে এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। অবশ্য আমাদের মসজিদ বছরের সব দিনই উন্মুক্ত। এখানে রান্না, কফি, মেডিটেশনসহ বিভিন্ন কার্যক্রম রয়েছে। এখানে আসা বেশির ভাগ দর্শনার্থী খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী। তারা আমাদের পরিচয়, আমাদের ধর্ম সম্পর্কে জানতে পারে।’
আল-মদিনা সেন্টারের দায়িত্বশীল রজব আলী বলেন, ‘মসজিদ শুধু এক দিন বা এক ঘণ্টা-দুই ঘণ্টার জন্য নয়। মানুষ হিসেবে আমরা সবাই একই সমাজে বসবাস করছি। মসজিদের মতো শান্তির স্থানে আমরা মিলিত হয়েছি। সাপ্তাহিক এই ছুটির দিনে প্রথমবার যারা মসজিদ ভ্রমণে এসেছেন, তারা শান্তি অনুভব করেছেন। তাই যে কেউ যখন ইচ্ছা মসজিদের ইমাম বা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের প্রশ্ন করতে পারেন।’
ইসলাম ও মুসলিমদের সম্পর্কে সবার মধ্যে ইতিবাচক মনোভাব তৈরি করতে ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রথমবার ‘ভিজিট মাই মস্ক’ উদ্যোগটি পালিত হয়। প্রথম বছরই সবার মধ্যে মসজিদভিত্তিক এই ব্যতিক্রমী কর্মসূচি ব্যাপক সাড়া ফেলে। ওই বছর ব্রিটেনের ২০টি মসজিদ এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করলেও বর্তমানে এ সংখ্যা বেড়ে তিন শর কাছাকাছি পৌঁছেছে। দিনটিতে প্রধানমন্ত্রী, সংসদ সদস্য, বিরোধীদলীয় নেতা, জ্যেষ্ঠ রাজনীতিবিদসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা স্থানীয় মসজিদ পরিদর্শন করেন।