জাতীয় ইমাম সম্মেলনের সমাপনী মোনাজাতে ফিলিস্তিনের মুসলমানদের জন্য বিশেষ দোয়া করেছেন জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকররমের খতিব হাফেজ মাওলানা মুফতি রুহুল আমীন।
সোমবার (৩০ অক্টোবর) নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী প্রদর্শনীকেন্দ্রে ‘৫০টি মডেল মসজিদ উদ্বোধন এবং জাতীয় ইমাম সম্মেলন ও পুরস্কার বিতরণ-২০২৩’ অনুষ্ঠান শেষে তিনি লাখো ইমামকে সঙ্গে নিয়ে অশ্রুসিক্ত মোনাজাতে দখলদার ইসরায়েলের হাতে নির্মমভাবে নির্যাতিত ফিলিস্তিনের মা-বোন, শিশু ও মাজলুমদের গায়েবি সাহায্যের জন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেন।
দোয়ায় অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সৌদি আরবের মসজিদে নববির ইমাম শায়খ ড. আবদুল্লাহ বিন আবদুর রহমান আল বুয়াইজান। অনুষ্ঠানে সারাদেশ থেকে প্রায় এক লাখ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ইমাম যোগ দেন।
ধর্মপ্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অংশ নেন ধর্ম মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হাফেজ রুহুল আমিন মাদানি, জাতীয় মসজিদের খতিব মুফতি রুহুল আমিন, ধর্ম সচিব মু. আ. হামিদ জমাদ্দার, মন্ত্রী পরিষদের সদস্য, সংসদ সদস্য, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও সরকারের পদস্থ কর্মকর্তাগণ।
অনুষ্ঠানে জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ ইমাম ও বিশ্বজয়ী হাফেজদের মধ্যে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে পুরস্কার বিতরণ করেন প্রধানমন্ত্রী। পাশাপাশি ষষ্ঠ পর্যায়ে ৫০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে যোগ দেন মসজিদে নববির ইমাম ও খতিব শায়খ ড. আবদুল্লাহ বিন আবদুর রহমান আল বুয়াইজান। সম্মেলনে তার বক্তব্য উপস্থিত দর্শকদের উদ্দেশ্যে তরজমা করে শোনান ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের গবেষণা বিভাগের মুহাদ্দিস মাওলানা ড. ওয়ালীয়ুর রহমান খান।
বক্তব্যে শায়খ বুয়াইজান উপস্থিত সবাইকে সালাম জানিয়ে বলেন, সকল প্রশংসা মহান আল্লাহর। অসংখ্য অগণিত দরুদ ও সালাম নবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং তার পরিবারবর্গ ও সাহাবিদের ওপর।
বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং অন্যান্য মর্যাদাবান ব্যক্তিবর্গকে স্বাগত জানাই। আসলে আমাদের সব ভালোবাসা আল্লাহর জন্য। আজকের এই সমাবেশে আমাদের একত্রিত হওয়া এটি দ্বীন এবং ঈমানের ভিত্তিতে। মুসলিম পরিচয়ের ভিত্তিতে। এই ধারাবাহিকতায় আমি সৌদি আরব তথা মদিনা মোনাওয়ারা থেকে আপনাদের সামনে উপস্থিত হয়েছি। মদিনা মোনাওয়ারা পৃথিবীর পবিত্রতম একটি স্থান, অহি নাজিলের স্থান, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর হিজরতের স্থান। আমি সেখান থেকে এসেছি মুসলিম উম্মার এই সমাবেশে। এই মহান মাহফিল, এই সম্মেলন আমাদেরকে একত্রিত করেছে। দেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ, সম্মানিত ওলামায়ে কেরাম, হাফেজে কোরআনদের দেখে আমি কৃতজ্ঞ।
মদিনার ইমাম আরও বলেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নিজের আগ্রহে ৫৬৪টি মসজিদ নির্মাণ করেছেন; যার ৫০টি আজকে উদ্বোধন হবে। মহান এই অনুষ্ঠানে আমি উপস্থিত হতে পেরে অত্যন্ত আনন্দিত এবং গর্বিত। তার এই কাজটিকে আমাদের সবার নাজাতের জন্য আল্লাহ কবুল করুন এবং উপযুক্ত প্রতিদান দিন।
আল্লাহতায়ালা বলেন, একমাত্র তারাই আল্লাহর মসজিদসমূহ আবাদ করবে, যারা আল্লাহ ও শেষদিনের প্রতি ঈমান রাখে, নামাজ কায়েম করে, জাকাত প্রদান করে এবং আল্লাহ ছাড়া কাউকে ভয় করে না। আশা করা যায়, তারা হেদায়েতপ্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে।
আজকে হাফেজে কোরআনদের পুরস্কৃত করা হবে। নিশ্চয় এটি অত্যন্ত প্রশংসনীয় কাজ। আমি আবারো উপস্থিত সবার কৃতজ্ঞতা আদায় করছি। বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আল্লাহতায়ালা আমাদের সবাইকে কবুল করুন।