মুসলিম পর্যটকদের আকর্ষণ করতে বিশেষ পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে থাইল্যান্ড সরকার। পাঁচ বছর মেয়াদি (২০২৩-২০২৭) এই পরিকল্পনায় মুসলিমবান্ধব আন্তর্জাতিক পর্যটন অবকাঠামো বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে দেশটি। মূলত ২০২৭ সালের মধ্যে থাইল্যান্ডকে মুসলিম পর্যটকদের অন্যতম গন্তব্যস্থল করতেই এ উদ্যোগ নেওয়া হয়। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে মুসলিম পর্যটকদের জন্য হালাল খাবার ও পণ্যের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করাসহ প্রয়োজনীয় সব সুযোগ-সুবিধার মান উন্নত করা হবে।
দেশটিতে ক্রমবর্ধমান মুসলিম পর্যটকের কথা বিবেচনা করে এই পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। ব্যাঙ্কক পোস্ট এ খবর দিয়েছে।
গত আগস্টে অনুষ্ঠিত পর্যটনবিষয়ক এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন দেশটির উপ-সরকারের মুখপাত্র রাচাদা ধনাদিরেক। তিনি বলেন, ‘মুসলিম পর্যটন বাজারের গুরুত্ব উপলব্ধি করছে সরকার। তাদের আকর্ষণ করা আমাদের দেশের পর্যটন বিভাগের অন্যতম লক্ষ্য। কারণ বর্তমানে তাদের সংখ্যা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং তাদের উচ্চ ক্রয়ক্ষমতা রয়েছে। আশা করি, আগামী সরকারও এই নীতি বাস্তবায়নে কাজ অব্যাহত রাখবে।’
তিনি জানান, গত বছর ৩০ লাখের বেশি মুসলিম পর্যটক থাইল্যান্ড ভ্রমণ করেছে। অথচ ২০১৭ সালে মুসলিম পর্যটকের সংখ্যা ছিল মাত্র আট লাখ ৭৫ হাজার ৪৩ জন।
দেশটির পর্যটন বিভাগের তথ্য মতে, একজন মুসলিম পর্যটক সাধারণত প্রায় দুই সপ্তাহ এখানে অবস্থান করে এবং এই সময়ে তারা প্রায় ছয় হাজার বাথ (প্রায় ১৭০ ডলার) ব্যয় করে।
মাস্টারকার্ড-ক্রিসেন্ট্রেটিং গ্লোবাল মুসলিম ট্র্যাভেল ইনডেক্সের প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২৩ সালে বিশ্বের মুসলিম পর্যটনের মধ্যে প্রধান গন্তব্যস্থল হবে ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়া। এরপর রয়েছে সৌদি আরব, আরব আমিরাত ও তুরস্ক।
থাইল্যান্ডের পর্যটন ও ক্রীড়া বিভাগের তথ্য মতে, গত জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত দেশটিতে প্রায় ১৯ লাখ আন্তর্জাতিক পর্যটক এসেছে, যারা ৬৮৯ বিলিয়ন বাথ নিয়ে এসেছেন।
ভ্রমণবিষয়ক পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, আধুনিক বিশ্বে মুসলিম পর্যটকদের চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
২০২২ সালে ১১০ মিলিয়ন মুসলিম বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করেছে, যা মোট পর্যটকের ১২ শতাংশ। মুসলিম পর্যটকের এই সংখ্যা আগামীতে আরো বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। ২০২৩ সালে তা বেড়ে ১৪০ মিলিয়ন ও ২০২৪ সালে ১৬০ মিলিয়ন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
মুসলিমরা থাইল্যান্ডের বৃহৎ ধর্মীয় সংখ্যালঘু। তাদের বেশির ভাগ দেশটির দক্ষিণের প্রদেশ নারাথিওয়াত, পাত্তানি, ইয়ালা ও সাতুনে বসবাস করে। দেশটিতে মুসলিমদের দুই শ বছরের সমৃদ্ধ ইতিহাস রয়েছে। আর রাজধানী ব্যাঙ্ককে ১৭০টির বেশি মসজিদ রয়েছে। হারুন মসজিদ হলো এখানকার অন্যতম প্রাচীন মসজিদ। এখানে বাহারি রকমের ঐতিহ্যবাহী হালাল থাই খাবার রয়েছে।