দখলদার ইসরায়েলের হামলায় ধ্বংসপ্রায় গাজাবাসীর পক্ষে সমর্থন গড়তে তুরস্কে বিশ্বের ফার্স্ট লেডিদের শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। তুরস্কের ফার্স্ট লেডি এমিনি এরদোয়ানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ‘ওয়ান হার্ট ফর প্যালেস্টাইন’ শীর্ষক সম্মেলনে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে অংশ নেন ফার্স্ট লেডি ড. রেবেকা সুলতানাসহ সাত সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল।
এ ছাড়া আরও অংশ নেন মিসর, কাতার, আরব আমিরাত, মালয়েশিয়া, পাকিস্তান, লিবিয়া, উজবেকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান, স্কটল্যান্ড, কঙ্গো, বসনিয়াসহ মুসলিম দেশগুলোর ফার্স্ট লেডিদের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দল। তা ছাড়া আজারবাইজান, ব্রাজিল ও ভেনিজুয়েলার ফার্স্ট লেডিরা ভিডিও বার্তার মাধ্যমে সম্মেলনে অংশ নেন।
দখলদার ইসরায়েলের হামলা বন্ধসহ গাজার পক্ষে সারাবিশ্বের ফার্স্ট লেডিদের আওয়াজ তোলার আহ্বান জানিয়ে তুরস্কের ফার্স্ট লেডি এমিনি এরদোয়ান বলেন, ‘এই অঞ্চলের মাটি ইতিমধ্যে নরকে পরিণত হয়েছে। এই ভূখণ্ড শিশুদের গণকবরে পরিণত হয়েছে। এখানে কোনো প্রতিশ্রুত ভবিষ্যত বাস্তবায়ন হওয়া কখনই সম্ভব নয়।’ তিনি চলমান যুদ্ধের ৪০ দিনকে ‘লজ্জাজনক যুগ’ বলে অভিহিত করেন।
এমিনি এরদোয়ান বলেন, ‘আমরা কখনো এমন অন্ধকারাচ্ছন্ন যুগের কাছে আত্মসমর্পণ করব না। এখানে সবার জীবনের মধ্যে বৈষম্য করা হয়। যাদের অপছন্দ হয় তাদের অবমূল্যায়ন করা হয়। তাই আমি রাষ্ট্রপ্রধানদের স্ত্রীদের আহ্বান জানাব যেন তারা গাজায় নিহতদের জন্য আওয়াজ তুলেন এবং যাদের বিরুদ্ধে গণহত্যা চালানো হচ্ছে তাদের জন্য কথা বলেন।’
সম্মেলনে বাংলাদেশের ফার্স্ট লেডি ড. রেবেকা সুলতানা বলেন, ‘এই মুহূর্তে গাজায় রক্তপাত বন্ধ করা ছাড়া আমাদের আর কোনো লক্ষ্য নেই। আমরা এই মানবিক বিপর্যয়ের অবিলম্বে অবসানের লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ। এই অভিযান অবশ্যই গাজা এবং তাদের মাতৃভূমি থেকে ফিলিস্তিনিদের নিশ্চিহ্ন করার অপচেষ্টার অংশ। ফিলিস্তিনে চলমান নৃশংসতা এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের জন্য ইসরায়েলকে জবাবদিহি করার জন্য এখন আমাদের আওয়াজ তোলার উপযুক্ত সময় এসেছে। এই সহিংসতা ও সশস্ত্র সঙ্ঘাতের অবসান ঘটাতে সমন্বিত প্রচেষ্টা চালাতে হবে। তবে ফিলিস্তিনিদের একটি স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের ন্যায্য দাবির প্রতি মনোযোগ হারানো উচিত নয়।’
কাতারের ফার্স্ট লেডি শায়খা মুজা বিনতে নাসির বলেন, ‘বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, গাজায় প্রতি ১০ মিনিটে একটি শিশু মারা যাচ্ছে। এর মানে হলো, আমার বক্তব্য শেষ হলেই একটি শিশু তার জীবন হারাবে এবং আমাদের এই সেশন শেষ হতেই প্রায় ১৮টি শিশু তাদের জীবন হারাবে। এই মুহূর্তে সেখানকার বিবাদমান দুই পক্ষের মধ্যে- যাদের এক পক্ষ নির্মাণ করছে এবং অন্য পক্ষ তা ধ্বংস করছে- যারা নির্মাণ করছে তাদের সঙ্গে দাঁড়ানো ছাড়া কোনো উপায় নেই। আমরা এডুকেশন অবভ অল ফাউন্ডেশন (ইএএ)-এর মাধ্যমে গাজায় শিক্ষা সহায়তা অব্যাহত রাখব। আমরা গাজার জনগণের জন্য যা করছি তা মোটেও সেখানকার প্রয়োজন পূরণ করছে না। ইতিহাসের এই শোচনীয় এই মুহূর্তে গাজার জনগণ উম্মাহর মর্যাদার প্রতিনিধিত্ব করে।’