যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে হালাল খাবারের বেচাবিক্রি বৃদ্ধি পেয়েছে। সম্প্রতি সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার এক উপদেষ্টার সঙ্গে দখলদার ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ প্রসঙ্গে হালাল খাবারের দোকানের এক কর্মীর বাগবিতণ্ডা হয়। সেই ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পরই হালাল খাবারের চাহিদা বেড়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। এখন নিয়মিত ক্রেতার পাশাপাশি অনেকে প্রথমবারের মতো এসব খাবার কিনে খাচ্ছেন।
আরব নিউজ সূত্রে জানা যায়, হয়রানির ভিডিও প্রকাশের পর নিউ ইয়র্কের হালাল ফুড কোর্টে আগের চেয়ে বিক্রয় বেড়েছে। নতুন ও পুরনো ক্রেতারা অর্ডার দিতে সারিবদ্ধ হয়ে আছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকে টেবিলে বসে একসঙ্গে খাবার খাচ্ছে এবং একে অপরের সঙ্গে গল্প করছে। কার্টের স্বত্বাধিকারী স্যাম জানিয়েছেন, তার দোকানের বেশির ভাগ ক্রেতাই ইহুদি। তবে সবার মধ্যে সাংস্কৃতিক আদান-প্রদানের মাধ্যমে তাদের সম্পর্ক সুদৃঢ় রয়েছে।
এদিকে নিউ ইয়র্কের ম্যানহাটানে হালাল খাবার দোকানের কর্মচারী মুস্তফা ইসলাম। তার সঙ্গে মুসলিমবিদ্বেষমূলক বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন ওবামা প্রশাসনের সেই কর্মকর্তা। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আরব দোকানগুলোর হালাল খাবারের সমর্থনে বিক্ষোভ করেছেন নিউ ইয়র্কের অধিবাসীরা।
তারা হালাল খাবার দোকানের সেই কর্মচারীর জন্য তহবিল সংগ্রহ শুরু করেছে। গো ফান্ড মি-এর মাধ্যমে গত সপ্তাহ পর্যন্ত সাড়ে তিন হাজার মার্কিন ডলার সংগৃহীত হয়।
কর্মচারীকে হয়রানি করা ওবামা প্রশাসনের সাবেক সেই কর্মকর্তার নাম স্টুয়ার্ট সেলডোভিটজ। তিনি ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিল সাউথ এশিয়ার ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ছিলেন। দোকানের কর্মচারীর সঙ্গে বাগবিতণ্ডার একপর্যায়ে তিনি কোরআন মাজিদ অবমাননা করেন এবং ফিলিস্তিনের চার হাজার শিশু হত্যা যথেষ্ট নয় বলে জানান।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার সেই ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে ঘৃণামূলক অপরাধের অভিযোগে তাকে আটক করে নিউ ইয়র্কের পুলিশ।
কাউন্সিল অন আমেরিকান-ইসলামিক রিলেশনের তথ্য মতে, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ শুরুর পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আরব ও মুসলিমবিরোধী মনোভাব অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। অ্যান্টি-ডিফেমেশন লিগের তথ্য মতে, গত বছরের একই সময়ের তুলনায় এ বছর ৭ অক্টোবরের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে এ ধরনের ঘটনা ৩৮৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।