দয়াময় আল্লাহতায়ালা বিভিন্ন উসিলায় তার বান্দাকে ক্ষমা করতে চান। তিনি ক্ষমা করতে ভালোবাসেন। বান্দাকে শুধু সেই ক্ষমা পাওয়ার জন্য কোরআন-হাদিসের নির্দেশিত পথে নিজেকে পরিচালিত করতে হবে। নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিভিন্ন সময় সাহাবায়ে কেরামকে এমন কিছু আমলের কথা বলেছেন, যেগুলো গোনাহমাফকারী।
দুই ওমরার মাঝের গোনাহ মাফ
আমাদের দেশের অনেক মধ্যবিত্তেরও ওমরা পালনের তওফিক হয়। অনেক মানুষ রয়েছেন, যাদের হজের সামর্থ্য নেই, কিন্তু কষ্ট করে ওমরার টাকা যোগাড় করে ফেলেন। বহু কষ্টে জমানো অর্থ দিয়ে তারা বায়তুল্লাহ জিয়ারতের তৃষ্ণা মেটান, পূরণ করেন বুকের মাঝে লালিত দীর্ঘদিনের স্বপ্ন।
আর যে সব ধনীদের আল্লাহতায়ালা বায়তুল্লাহর মহব্বত দান করেছেন, তারা তো বছরের বিভিন্ন সময় ছুটে যান বায়তুল্লাহয়। তেমনি যারা আরবের বাসিন্দা বা বায়তুল্লাহর প্রতিবেশী তারাও। যাকে আল্লাহতায়ালা অর্থ বা সুযোগ কিংবা সামর্থ্য দিয়েছেন সঙ্গে আল্লাহর মহব্বতও দান করেছেন সে কি বারবার বায়তুল্লাহর জিয়ারত না করে পারে?
তাছাড়া ওমরার মাধ্যমে আল্লাহতায়ালা গোনাহ মাফ করেন। এক উমরা তার পূর্ববর্তী ওমরার মাঝের গোনাহগুলো মিটিয়ে দেয়।
সাহাবি হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘এক ওমরা পূর্ববর্তী ওমরার মাঝের গোনাহগুলোর কাফফারা হয়ে যায়।’ -সহিহ বোখারি : ১৭৭৩
বায়তুল মাকদিসে নামাজের উদ্দেশ্যে গমন
বায়তুল মাকদিস। মুসলিমের প্রথম কেবলা। মসজিদে হারাম কেবলা হওয়ার পূর্বে নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং সাহাবিরা ষোলো-সতেরো মাস এদিক ফিরে নামাজ আদায় করেছেন। -সহিহ মুসলিম : ৫২৫
মসজিদে হারামের পরই আল্লাহতায়ালার ইবাদত-বন্দেগির উদ্দেশ্যে এ মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে। -সহিহ মুসলিম : ৫২০
পবিত্র মেরাজের সময় এখান থেকেই নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ঊর্ধ্বজগৎ ভ্রমণ শুরু হয়েছে। -সহিহ মুসলিম : ১৬২
এছাড়াও বায়তুল মাকদিসের রয়েছে আরও অনেক ফজিলত ও মর্যাদা। কেউ যদি কেবল নামাজের উদ্দেশ্যে বায়তুল মাকদিসে যায় তাহলে সদ্য ভূমিষ্ঠ শিশুর ন্যায় সে গোনাহ থেকে পবিত্র হয়ে যায়।
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেছেন- হজরত সোলায়মান আলাইহিস সালাম যখন বায়তুল মাকদিসের নির্মাণকাজ সমাপ্ত করলেন তখন আল্লাহর কাছে তিনটি বিষয় চাইলেন- এক. আমাকে এমন ফয়সালার যোগ্যতা দিন, যা আপনার ফয়সালার অনুগামী হয়। দুই. আমাকে এমন রাজত্ব দান করুন, যেমন রাজত্ব আর কাউকে দেওয়া হবে না। তিন. যে ব্যক্তি কেবল নামাজ আদায়ের উদ্দেশ্যে এ মসজিদে আসবে সে সদ্যভূমিষ্ঠ নিষ্পাপ শিশুর মতো গোনাহমুক্ত হয়ে যাবে।
নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তার দুটি আরজি তো কবুল করা হয়েছে; তিনি এ প্রথম দুটি লাভ করেছেন। আর আমি আশা করি, তার তৃতীয় আরজিও কবুল করা হয়েছে। -সুনানে ইবনে মাজাহ : ১৪০৮