থাইল্যান্ডের ফি ফি দ্বীপপুঞ্জ ভ্রমণপিপাসুদের একটি পছন্দের গন্তব্য। নীল স্বচ্ছ জলরাশি, স্নরকেলিং এবং স্কুবা ডাইভিংয়ের জন্য দ্বীপটি বিখ্যাত। ফি ফি দ্বীপপুঞ্জ ছয়টি ছোট ছোট দ্বীপে ফি ফি ডন, ব্যাম্বু দ্বীপ, বিদা নোক, ফি ফি লেই, ইয়াং দ্বীপ এবং বিদা নাই-এর সমন্বয়ে গঠিত। মানুষজন সাধারণত হাফ ডে, ডে ট্রিপ বা প্রাইভেট বোট ভাড়া করে এই দ্বীপগুলোর সৌন্দর্য উপভোগ করে থাকে।
ফি ফি দ্বীপপুঞ্জে সারা বছর গড় তাপমাত্রা থাকে ২৪ থেকে ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। নভেম্বর থেকে এপ্রিলের মাঝামাঝি পর্যটন মৌসুম। দ্বীপটি ছোট হওয়ার কারণে কোনো গণপরিবহনের ব্যবস্থা নেই, তাছাড়া সবকিছুই হাঁটার দূরত্বে। এই দ্বীপে থাই মুসলিম জনগোষ্ঠী বেশি।
দ্বীপটির আয়তন ১২.২৫ কিলোমিটার। প্রতিবছর প্রায় পাঁচ লাখ পর্যটক এই ছোট্ট দ্বীপ ভ্রমণ করেন। এখানে প্রতিদিন সন্ধ্যার পরে মুসলিম পরিবারের লোকজন হরেক রকম খাবার পর্যটকদের কাছে বিক্রি করে থাকে। এই দ্বীপে মুসলিম স্ট্রিট ফুড বেশ জনপ্রিয়।
স্থানীয় আইন এবং ফি ফি আইল্যান্ডে হালাল খাবার নিশ্চিত করতে বেশ কিছু শর্ত পালন করতে হয়। সেই সঙ্গে খাদ্য প্রস্তুতকারীকে অবশ্যই খাবারের উপাদানগুলোর উত্স হালাল এবং হালাল সার্টিফিকেটপ্রাপ্তদের কাছ থেকে সংগ্রহ করতে হয়। এমনকি পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রেও এগুলো অ-হালাল পণ্য থেকে পৃথক করে বহন করতে হয়। এ ছাড়া খাদ্যপণ্য প্রস্তুত, প্রক্রিয়াকরণ, প্যাকেজিং ও পরিবহনের সময় পণ্যটি অবশ্যই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন এবং যেকোনো অ-হালাল উপাদান থেকে মুক্ত হওয়া আবশ্যক।
ফি ফি আইল্যান্ডের দ্বীপে মুসলিম স্ট্রিট ফুড প্রস্তুতের ক্ষেত্রে যেহেতু খাদ্যপণ্যের কঠোর নৈতিক মান বিবেচনা করা হয়, তাই অনেক লোক নিজেরা মুসলিম না হওয়া সত্ত্বেও এসব হালাল খাদ্য গ্রহণ করেন। তাদের বিশ্বাস, হালাল খাদ্য অনেক স্বাস্থ্যগত সুবিধা প্রদান করে। যেহেতু হালাল খাবারে, খাদ্য নিরাপত্তা এবং স্বাস্থ্যবিধির ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়। তাই এসব খাবারে খাদ্য দূষণের হার কম।
ফি ফি দ্বীপে মুসলিম স্ট্রিট ফুড জনপ্রিয় হওয়ার কারণ সম্পর্কে বিভিন্ন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এখানে পশুদের ভালো যত্ন নেওয়া হয় এবং স্বাস্থ্যকর এবং পরিষ্কার ফিড দিতে হয়। কৃষকরা অ্যান্টিবায়োটিক এবং কোনো রাসায়নিক ব্যবহার করতে পারেন না। যেসব মুসলিম খাবার তৈরি করেন, তারাও এই নিয়ম কঠোরভাবে পালন করেন।
দ্বীপে কোনো অসুস্থ প্রাণী জবাই করার অনুমতি নেই, তাই রোগমুক্ত ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন প্রাণীর গোশত ব্যবহার করা হয় খাবার প্রস্তুতের ক্ষেত্রে। ইসলামিক জবাই পদ্ধতিতে, মৃতদেহ থেকে রক্ত সম্পূর্ণরূপে বের হয়ে যায়। হালাল গোশত শুধুমাত্র স্বাস্থ্যকরই নয়, এর স্বাদও ভালো। কারণ এটি রক্তের অনুপস্থিতির কারণে এটিকে দীর্ঘতর সতেজ রাখে, এটি ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধী করে তোলে।