পবিত্র কাবাঘরের কিসওয়া তথা কালো গিলাফ নিচ থেকে ওপরে তিন মিটার তুলে তাতে সাদা কাপড়ে মোড়ানো হয়েছে। কেউ বলেন, কাবাকে ইহরাম পড়ানো হয়েছে, এর মাধ্যমে হজের প্রস্তুতির স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়।
বুধবার ২২ মে (১৫ জিলকদ) প্রতিবছরের মতো এবারের হজের প্রস্তুতি হিসেবে তা করা হয়। কিন্তু প্রতিবছর এভাবে কাবার গিলাফের নিচের অংশ ওপরের তোলার কারণ কী, তা অনেকের অজানা।
মূলত হজের সময় পবিত্র মসজিদে হারামে বেশ কিছু পরিবর্তন আসে। কাবা ঘরের কালো গিলাফের কিছু অংশ ওপরে উঠিয়ে রাখা এর অন্যতম। এর বদলে একটি সাদা কাপড় ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। সেই কাপড়টি আড়াই মিটার চওড়া এবং চার দিকে ৫৪ মিটার দীর্ঘ।
কিসওয়াটি বেশ কয়েকটি পর্যায়ে উত্তোলন করা হয়। প্রথমে চারদিক থেকে কভারের নীচের অংশটি খুলে দেওয়া হয়, ফলে কোণগুলো আলাদা হয়ে যায়। তার পর নীচের দড়ি খুলে ফিক্সিং রিং থেকে সরিয়ে ওপরের দিকে টেনে তোলা হয়।
ইসলামের সূচনাকাল থেকে হজের সময় কাবার গিলাফ সুরক্ষায় এই রীতি চলে আসছে। অতীতে গিলাফের কিছু অংশ হাতের কাছে পেয়ে কিছু অংশ কেটে ফেলার ঘটনা ঘটে।
অনেকে গিলাফকে নিজের উদ্দেশ্য পূরণে সহায়ক বস্তু বলে মনে করে। অনেকে সেই কাপড়ে নিজের নাম লিখে স্বস্তিবোধ করে। অথচ এসব কাজের সঙ্গে বাস্তবতার কোনো মিল নেই। তাই হাজিদের ভিড়ের মধ্যেও গিলাফ সুরক্ষিত রাখতে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
আর খালি স্থানে সাদা কাপড় দিয়ে কাবাঘর মোড়ানো হয়। মূলত এর মাধ্যমে হজের সময় ঘনিয়ে আসার কথা স্মরণ করানো হয়। কাবার দেয়ালের সাদা কাপড় হজের পূর্বপ্রস্তুতির জানান দেয়। হজের শেষ সময় পর্যন্ত সাদা কাপড় থাকে। এরপর আগের মতো পুনরায় কালো গিলাফ নামিয়ে দেওয়া হয়।
প্রতিবছর ১৫ জিলকদ বা এর এক দিন আগে-পরে কাবার গিলাফের অংশ ওপরে তোলা হয়। এরপর থেকেই হাজিদের ভিড় ও তাওয়াফ শুরু হয়। প্রচণ্ড ভিড়েরর কারণে তখন আর গিলাফ ওপরে তোলা সম্ভব হয় না।
কাবার গিলাফ ওপরে তুলতে বুধবার রাতে নিরাপত্তা কর্মীরা পবিত্র কাবাকে ঘিরে নিরাপত্তা বলয় তৈরি করেন। এ সময় বিশেষ প্রযুক্তিগত দল কিসওয়া ওপরে উঠানোর কাজ করে। ১০টি ক্রেনের সাহায্যে ৩৬ জন কর্মী কাজটি সম্পন্ন করেন।
রীতি অনুযায়ী ৯ জিলহজ পর্যন্ত সাদা কাপড় থাকবে। এরপর হজের দিন নতুন গিলাফ লাগানো হয়।