জাদুটোনা থেকে বাঁচতে যেসব আমল করবেন

আমল, ইসলাম

ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম | 2024-06-27 17:22:01

মানুষ মানুষকে নানাভাবে কষ্ট দেয়। কেউ সরাসরি ক্ষতি করে, কেউ পরোক্ষভাবে। পরোক্ষ ক্ষতির ক্ষেত্রে ষড়যন্ত্রমূলক নানা চেষ্টা-তদবির, জাদু-টোনা অন্যতম। জাদুটোনা থেকে বেঁচে থাকতে বিভিন্ন আমলের পাশাপাশি আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসার বিভিন্ন পদ্ধতি রয়েছে ইসলামে।

যদি জানা যায় যে, জাদুকর কিছু চুল, ব্যবহৃত কাপড়ের কোনো অংশ নির্দিষ্ট কোনো স্থানে অথবা চিরুনির মধ্যে অথবা অন্যকোনো স্থানে রেখে দিয়েছে। তাহলে তা পুড়িয়ে ফেলতে হবে, যাতে জাদুর কার্যকারিতা নষ্ট হয়ে যায়।

এ ছাড়া জাদু নষ্ট করার ক্ষেত্রে ঝাড়ফুঁকের বড় ধরনের প্রভাব রয়েছে। ঝাড়ফুঁকের পদ্ধতি হচ্ছে- জাদুতে আক্রান্ত রোগীর ওপর অথবা কোনো একটি পাত্রে আয়াতুল কুরসি অথবা সুরা আরাফ, সুরা ইউনুস, সুরা ত্বহার জাদুবিষয়ক আয়াতগুলো পড়ে পানিতে ফুঁ দেওয়া। পরে সেই পানি গায়ে ছিটানো ও একটু একটু পান করা। এগুলোর সঙ্গে সুরা কাফিরুন, সুরা ইখলাস, সুরা ফালাক ও সুরা নাস পড়ে রোগীর জন্য দোয়া করা।

সাহাবি হজরত আনাস বিন মালেক (রা.) বর্ণিত, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) এই দোয়া পড়ে অসুস্থ ব্যক্তিদের ঝাড়ফুঁক করতেন। দোয়াটি হলো-

اللَّهُمَّ رَبَّ النَّاسِ أَذْهِبْ الْبَاسَ اشْفِهِ وَأَنْتَ الشَّافِي لَا شِفَاءَ إِلَّا شِفَاؤُكَ شِفَاءً لَا يُغَادِرُ سَقَمًا

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা রাব্বান নাসি উজহিবাল বাসি, ইশফিহি ওয়া আনতাশ-শাফি, লা শিফায়া ইল্লা শিফায়ুকা শিফায়ান লা ইউগাদিরু সাকামা।

অর্থ : হে আল্লাহ! মানুষের প্রতিপালক, কষ্ট দূরকারী। আমাকে আরোগ্য দিন, আপনি আরোগ্যকারী- আপনি ছাড়া কোনো আরোগ্যকারী নেই। এমন আরোগ্য দিন যেন কোনো রোগ না থাকে। -সহিহ বোখারি : ৫৭৪২

হজরত জিবরাইল (আ.) আল্লাহর নবী (সা.)-কে যে দোয়া পড়ে ঝাড়ফুঁক করেছেন- সেটাও পড়া যেতে পারে। সে দোয়াটি হচ্ছে-

بِسْمِ الله أرْقِيكَ، مِنْ كُلِّ شَيْءٍ يُؤْذِيكَ، مِنْ شَرِّ كُلِّ نَفْسٍ أَوْ عَيْنِ حَاسِدٍ، اللهُ يَشْفِيكَ، بِسمِ اللهِ أَرْقِيكَ

উচ্চারণ : বিসমিল্লাহি আরক্বিকা মিন কুল্লি শাইয়িন ইয়ুযিকা মিন শাররি কুল্লি নাফসিন আও আইনিন হাসিদিন; আল্লাহু ইয়াশফিকা বিসমিল্লাহি আরক্বিকা।

অর্থ : আল্লাহর নামে আমি আপনাকে ঝাড়ফুঁক করছি। সকল কষ্টদায়ক বিষয় থেকে। প্রত্যেক আত্মা ও ঈর্ষাপরায়ণ চক্ষুর অনিষ্ট থেকে। আল্লাহ আপনাকে আরোগ্য করুন। আল্লাহর নামে আমি আপনাকে ঝাড়ফুঁক করছি। -সহিহ মুসলিম : ২১৮৬

আরও পড়ুন

ইসলামে জাদু কেন নিষিদ্ধ

দোয়াটি তিনবার পড়ে ফুঁ দেওয়া। এ ছাড়া সুরা ইখলাস, সুরা ফালাক ও সুরা নাস তিনবার পড়ে ফুঁ দেওয়া।

যে দোয়াগুলো উল্লেখ করা হলো, এগুলো পড়ে পানিতে ফুঁ দিতে হবে। এরপর জাদুতে আক্রান্ত ব্যক্তি ওই পানি পান করবে। আর অবশিষ্ট পানি দিয়ে প্রয়োজনমতো একবার বা একাধিক বার গোসল করবে। তাহলে আল্লাহর ইচ্ছায় রোগী আরোগ্য লাভ করবে।

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, নবী কারিম (সা.) নিম্নোক্ত দোয়ার মাধ্যমে হজরত হাসান ও হোসাইন (রা.)-এর জন্য আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করতেন। তিনি বলতেন, এই দোয়ার মাধ্যমে তোমাদের পিতা (ইবরাহিম আ.) ইসমাঈল ও ইসহাকের জন্য আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করতেন। দোয়াটি হলো-

উচ্চারণ : আউজু বিকালিমাতিল্লাহিত তাম্মাতি মিন কুল্লি শায়তানিন, ওয়া হাম্মাতিন, ওয়া মিন কুল্লি আইনিন লাম্মাতিন।

অর্থ : আমি আল্লাহর পরিপূর্ণ কালেমার দ্বারা প্রত্যেক শয়তান, বিষাক্ত প্রাণী এবং প্রত্যেক কুদৃষ্টির অনিষ্ট থেকে আশ্রয় কামনা করছি। -সহিহ বোখারি : ৩৩৭১

হজরত উসমান বিন আফফান (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি সকাল-সন্ধ্যায় তিনবার এই দোয়া পড়বে, আল্লাহ তাকে সব ধরনের বিপদাপদ থেকে রক্ষা করবেন। অন্য বর্ণনায় আছে, আল্লাহতায়ালা তাকে সব ধরনের রোগব্যাধি থেকে হেফাজত করবেন। -জামে তিরমিজি : ৩৩৮৮

এ সম্পর্কিত আরও খবর