সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদের বইমেলায় হিজরি প্রথম শতাব্দীতে লিখিত পবিত্র কোরআনের একটি পাণ্ডুলিপিসহ অন্যান্য দুর্লভ পাণ্ডুলিপি দেখতে ভিড় জমিয়েছেন দর্শনার্থীরা। রিয়াদ আন্তর্জাতিক বইমেলায় কিং ফাহাদ ন্যাশনাল লাইব্রেরির প্যাভিলিয়নের ছয়টি দুর্লভ ঐতিহাসিক পাণ্ডুলিপিই যেন এবারের মেলার মূল আকর্ষণে পরিণত হয়েছে।
সৌদি প্রেস এজেন্সি জানিয়েছে, প্রদর্শনীতে থাকা পুরোনো সংগ্রহের অন্যতম হলো- ১০০৯ হিজরিতে লিখিত কোরআন মাজিদের পাণ্ডুলিপি। ওই পাণ্ডুলিপির মার্জিনে ফার্সি ব্যাখ্যা রয়েছে।
অন্য দুর্লভ সংগ্রহগুলো হলো, হিব্রু ভাষায় রচিত ১২৭৪ হিজরির ইবনে আল-কাইয়িম আল-জাওজিয়ার ‘আল-কাফিয়াহ আশ-শাফিয়াহ’র একটি পাণ্ডুলিপি।
১৯৮৩ সালে কিং ফাহাদ ন্যাশনাল লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করা হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকে গ্রন্থাগারটি পুরোনো পাণ্ডুলিপি সংগ্রহ সংরক্ষণ এবং তা প্রচারে মনোনিবেশ করেছে। বর্তমানে এটি একটি জাতীয় প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে, যেখানে ৬ হাজারের বেশি বিরল মূল পাণ্ডুলিপি রয়েছে।
বিপুলসংখ্যক পাঠক-দর্শকের উপস্থিতি ও নানা বৈচিত্র্যের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের জন্য রিয়াদ বইমেলার বিশেষ পরিচিতি রয়েছে। এখানে আরবি ভাষাভাষী ছাড়াও আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক অনেক প্রকাশনা সংস্থা অংশগ্রহণ করে থাকে।
সৌদি আরবের কিং সৌদ বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৬ সেপ্টেম্বর শুরু হয়েছে, চলবে আগামী ৫ অক্টোবর পর্যন্ত। এবারের মেলায় ৩০টিরও বেশি দেশ থেকে ২ হাজারের বেশি প্রকাশনা সংস্থা অংশগ্রহণ করছে। পুরো মেলায় রয়েছে ৮০০টিরও বেশি প্যাভিলিয়ন।
রিয়াদ আন্তর্জাতিক বইমেলা সাহিত্য, প্রকাশনা ও অনুবাদের সঙ্গে যুক্ত পেশাজীবীদের জন্য একটি সাংস্কৃতিক প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করে। বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে এখানে এসে নিজেদের চিন্তাভাবনা ও সংস্কৃতির বিনিময় করেন গুণীজনেরা, সমর্থন জানান প্রকাশনাশিল্পের প্রতি, উৎসাহ জোগান পাঠাভ্যাসে। পাঠক ও উৎসুকজনের মধ্যে সাম্প্রতিকতম সাহিত্যকর্ম ও বইয়ের পরিচিতি তুলে ধরারও এক সুযোগ এ বইমেলা।
এ বছর বইমেলার ‘সম্মানীয় অতিথি’ দেশ কাতার। সৌদি সাংস্কৃতিক মন্ত্রণালয় বলেছে, কাতারকে এ বইমেলার ‘সম্মানীয় অতিথি’ রাষ্ট্র করার বিষয়টি বন্ধুপ্রতিম এ দুই দেশের মধ্যকার শক্তিশালী ভ্রাতৃত্বের বন্ধনেরই প্রতিফলন। এটি সৌদি আরব ও কাতারের মধ্যে ঐতিহাসিক যোগাযোগ এবং সাংস্কৃতিক বিনিময় ও সহযোগিতার ওপরও গুরুত্বারোপ করছে।