দশ বছর ধরে হ্যান্ডমাইকে নামাজের আহ্বান বৃদ্ধ মোসলেমের

নামাজ, ইসলাম

মাসুম বিল্লাহ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, গাইবান্ধা | 2024-11-12 17:31:35

গ্রাম-গঞ্জের হাট-বাজারসহ মানুষ সমাগমের স্থানে সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম পদ্ধতিতে নামাজের জন্য তাগাদা দেন এবং আহবান জানান হ্যান্ডমাইকে। হেঁটে হেঁটে মুসলমান ভাই-বোনদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বিগত ১০ বছর ধরে নামাজের এই আহবান জানাচ্ছেন ৬৪ বছর বয়সী মোসলেম উদ্দিন প্রধান নামের এক বৃদ্ধ।

বৃদ্ধ মোসলেম উদ্দিন প্রধানের বাড়ি গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার ভাতগ্রাম ইউনিয়নের ভগবানপুর গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের মরহুম মহিম উদ্দিন প্রধানের ছেলে।

সম্প্রতি উপজেলার ধাপেরহাটে দেখা যায়, হ্যান্ডমাইকে মানুষকে নামাজের দাওয়াত দিচ্ছেন তিনি। কখনো হেঁটে কখনো একস্থানে দাঁড়িয়ে চারদিক ঘুরে ঘুরে মুসলমান ভাই-বোনদের নামাজের আহবান জানান তিনি।

মোসলেম উদ্দিনের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ১০ বছর ধরে তিনি এ কাজ করে আসছেন। আগে তিনি ঢাকায় কাজ করতেন। কর্মজীবন শেষে বাড়ি ফিরে নিজ খরচে একটি হ্যান্ডমাইক কিনে সাধারণ মুসলমানদের নামাজের জন্য আহবান শুরু করেন।

তারা জানান, মোসলেম উদ্দিন প্রতিদিন বিভিন্ন শহর ও হাট-বাজারে হেঁটে হেঁটে নামাজের আহ্বান জানাতে থাকেন। সাদুল্লাপুর উপজেলা শহরসহ ধাপেরহাট, মীরপুরহাট, ঘোগার বাজার এবং আশেপাশের এলাকাগুলোর মানুষ তাকে মাইকিং করে নামাজের আহবানের বিষয়টি দেখতে দেখতে অভ্যস্ত হয়ে গেছেন বলেও জানান তারা।

মোসলেম উদ্দিন প্রধান বলেন, ‘কোরআনে কারিমে একবার দুইবার নয়, ৮২ বার নামাজের জন্য তাগিদ দেওয়া হয়েছে। আল্লাহতায়ালা বলেছেন, নিজে নামাজ পড় এবং অন্যকেও নামাজ পড়তে তাগিদ দাও। আল্লাহর এই বিধান মেনেই হ্যান্ডমাইকে হেঁটে হেঁটে মুসলমানদের নামাজের জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। আহবানে সাড়া দিয়ে প্রচারের সময় অনেক মানুষ আমার সঙ্গেই নামাজ আদায় করেছে, এটাই আমার স্বার্থকতা।’

এ সময় সামর্থ্য হলে হজে যাওয়ার ইচ্ছা আছে বলেও জানান বৃদ্ধ মোসলেম উদ্দিন।

ভাতগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মাহফুজার রহমান (মাফু) মোবাইল ফোনে বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘ধর্মভীরু এই ব্যক্তির নিঃস্বার্থ প্রচেষ্টা স্থানীয়দের মাঝে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে এবং বিষয়টি আমাদেরকে নামাজে উৎসাহিত করে। মানুষের কল্যাণে হেঁটে হেঁটে হ্যান্ডমাইকে নামাজের আহবানের বিষয়টি সত্যিই ইতিবাচক এবং প্রশংসার।’

উল্লেখ্য, বৃদ্ধ মোসলেম উদ্দিন একসময় পাটের ব্যবসা করতেন। কিন্তু ব্যবসায় লোকসান হলে পরে জীবিকার প্রয়োজনে ঢাকায় যান। সেখানেই মসজিদের মুসল্লিদের মাধ্যমে নামাজের অনুপ্রেরণা পান। এরপর থেকে তিনি নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করেন এবং ধীরে ধীরে আল্লাহভীরু হন। পরে গ্রামে ফিরে পথে পথে মানুষকে নামাজের আহবান জানাতে শুরু করেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর