যাত্রীদের মধ্যে একমাত্র মুসলিমদের হালাল ফুড দেওয়া হবে এয়ার ইন্ডিয়ার উড়োজাহাজে। ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের দেওয়া হবে তাদের পছন্দমত খাবার।
এমনটাই ঘোষণা দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। হালাল খাবার ছাড়াও যাত্রীদের জন্য দেওয়া হয় ডায়াবেটিক মিল, গ্লুটেন-ফ্রি মিল, নন ভেজ মিল, ভেগান মিল, জৈন মিল। রয়েছে হিন্দু মিলের ব্যবস্থাও।
বেশ কিছুদিন ধরেই ভারতের কিছু উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠন ফ্লাইটে পরিবেশিত খাবার নিয়ে নানা প্রশ্ন উত্থাপন করে আসছে। কিছুদিন আগে এয়ার ইন্ডিয়ায় হালাল ফুড পরিবেশনকে কেন্দ্র করে প্রশ্ন তুলে এক কংগ্রেস নেতা।
সোশ্যাল সাইটে তিনি বলেন, খাবারের আবার হিন্দু-মুসলিম কি? খাবার তো খাবারই হয়? তাতে হালাল লেবেল ঝুলিয়ে কেন ধর্মীয় মেরুকরণের পথ প্রশস্ত করে দিচ্ছে এয়ার ইন্ডিয়া কর্তৃপক্ষ? তাহলে কি এয়ার ইন্ডিয়া আরএসএস দখলে চলে গেল? ফ্লাইটের খাবারের স্ক্রিনশট সমাজ মাধ্যমে দিয়ে প্রশ্ন করেছিলেন, খাবারের মধ্যে কী করে এই ধরনের বিভাজন হতে পারে?
কংগ্রেস নেতার এমন পোস্ট হিন্দুত্ববাদীদের ‘খাবার জিহাদ’ আন্দোলনে বাড়তি অক্সিজেন দেয়। তার পোস্ট শেয়ার করে অভিযোগ শুরু করেন, হিন্দু ও শিখদের ওপরও হালাল ফুড চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তারা কেন হালাল ফুড খাবে? কেন তারা পছন্দসই খাবার খেতে পারবে না? শুরু হয় কদর্য ভাষায় আক্রমণ। এমন বিতর্কের মাঝে চাপে পড়ে এই সিদ্ধান্ত নিল এয়ার ইন্ডিয়া কর্তৃপক্ষ।
বরাবরই ফ্লাইটে হালাল ফুড পরিবেশন করা হয়। কারও কোনো আপত্তি হয়নি। কিন্তু বর্তমানে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসে ‘ধর্মীয় মেরুকরণের’ ট্যাগ লেগে গেছে। বিশেষ করে পোশাক ও খাবারে। আর জুন মাসে কংগ্রেস এমপির হালাল ফুড নিয়ে সোশ্যাল সাইটে লম্বা পোস্টের পর পাল্লা ভারী হয় পদ্ম-শিবিরের।
এয়ার ইন্ডিয়া কর্তৃপক্ষ এদিন জানান, ঠিক হয়েছে এমওএমএল (মুসলিম মিল)-এর জন্য স্টিকার বা লেবেলযুক্ত খাবার ‘বিশেষ’ বলে বিবেচিত হবে। এমওএমএল-এ নথিভুক্ত ব্যক্তিদেরই কেবলমাত্র হালাল খাবার পরিবেশন করা হবে। হিন্দুদের এই খাবার পরিবেশন করা হবে না। এয়ার ইন্ডিয়ার যেসব ফ্লাইট মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে যাবে সবকটি ফ্লাইটে হালাল খাবার পরিবেশন করা হবে। তবে এয়ার ইন্ডিয়ার এ পদক্ষেপের কথা সামনে আসতেই খুশির হাওয়া বইছে পদ্মমহলে। নিজেদের উচ্ছ্বাস গোপন না করেই এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে তারা।