বিন্দু পরিমাণ হারাম সন্তানের ওপর মন্দ প্রভাব ফেলে

আমল, ইসলাম

ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম | 2023-09-01 08:30:46

যেকোনো ধরনের ইবাদত-বন্দেগি কবুল হওয়ার জন্য রিজিক হালাল হওয়া খুবই জরুরি। হালাল রিজিকের প্রভাব শুধু নিজের দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণের জন্যই যে জরুরি তা নয়, নিজের সন্তানের ওপরও এর মন্দ প্রভাব ফেলে। রুজি-রোজগারের মধ্যে খুব সামান্য ও এমনকি বিন্দু পরিমাণ হারাম এবং সুদের প্রভাব সন্তানের মধ্যে প্রকাশ পায়। এ জাতীয় অনেক ঘটনা ইতিহাসে স্থান পেয়েছে।

তেমনি একটি ঘটনা হলো। একজন বিশ্বখ্যাত আলেম তার শিশুপুত্রকে মসজিদে নিয়ে আসেন। ওই শিশুকে অজুখানার কাছে বসিয়ে তিনি নামাজ আদায় করতে মসজিদে যান। ফিরে এসে দেখেন, তার ছেলে মুসল্লিদের অজুর পানি তোলার পাত্রটি পেরেক জাতীয় কোনো কিছু দিয়ে ফুটো করে দিয়েছে। ওই আলেম দুঃখিত ও বিস্মিত হয়ে ভাবতে লাগলেন কেন এমন হলো? ঘরে ফিরে স্ত্রীকে তিনি এ ঘটনা জানালে স্ত্রী বলেন, আমি বুঝতে পেরেছি কেন সে এই মন্দ কাজ করেছে। আসলে এ জন্য আমিই দায়ী। ও যখন আমার গর্ভে ছিল তখন আমি অনুমতি না নিয়ে এক ব্যক্তির বাগানের একটি ডালিমের মধ্যে সুঁই দিয়ে খোঁচা দিয়েছিলাম এবং সুঁইয়ে লেগে থাকা ডালিমের রস জিভে লাগিয়েছিলাম! এর প্রভাব তার মাঝে দৃশ্যমান।

অন্যের কোনো কিছু না বলে ভোগ করার ঘটনা অনেকের জীবনেও রয়েছে। এক্ষেত্রে করণীয় হলো- প্রকৃত মালিকের সন্তুষ্টি অর্জনের চেষ্টা করা। যদি মালিক জীবিত না থাকেন, তাহলে তার উত্তরাধিকারদের কাছে ক্ষমা চাওয়া। আর যদি তাদের কাউকেই পাওয়া না যায়, তাহলে তাদের নামে ওই পরিমাণ সম্পদ সদকা দেওয়া।

ইসলামের শিক্ষা হলো- আল্লাহতায়ালার প্রতি দৃঢ়বিশ্বাস ও ভরসা করা। এটা খাঁটি মুমিনের বৈশিষ্ট্যও বটে। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘তোমরা মন ভাঙা হয়ো না, হীনবল হয়ো না, তোমরাই বিজয়ী হবে যদি তোমরা মুমিন হও।’

কোরআনে কারিমের সূরা ইবরাহিমে আরও ইরশাদ হয়েছে, ‘যদি কৃতজ্ঞতা স্বীকার করো, তবে তোমাদেরকে আরও দেব এবং যদি অকৃতজ্ঞ হও তবে নিশ্চয়ই আমার শাস্তি হবে কঠোর।’ -আয়াত: ৭

মনে রাখতে হবে, মনে দৃঢ় বিশ্বাস রেখে আমরা যদি আন্তরিকভাবে আল্লাহতায়ালাকে সন্তুষ্ট করার উদ্দেশ্যে কোনো আমল করে দোয়া করি, তাহলে আল্লাহতায়ালা আমাদের সমস্ত বৈধ দোয়া কবুল করবেন। এটা আল্লাহতায়ালার ঘোষণা।

মানুষের যাবতীয় সমস্যার সমাধান দিতে পারেন আল্লাহ, এই বিশ্বাসও আমাদের রাখা উচিত। আমাদের জীবনের সব সমস্যার মূল কারণ হলো, আমরা এসব বিষয়ে আল্লাহতায়ালার কাছে সাহায্য প্রার্থনা করি না। আন্তরিকভাবে আল্লাহতায়ালার সাহায্য চাইলে আল্লাহ অবশ্যই তা কবুল করবেন। যা ঘটা আপাতদৃষ্টিতে অসাধ্য বলে মনে হয়, তাও আল্লাহর সহায়তায় সাধন করা সম্ভব।

অনেক খোদাভীরু ব্যক্তির কথা জানা যায়, যারা ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’ বলে নদীর পানির ওপর দিয়ে এমনভাবে হেঁটে নদী পার হয়েছেন যেভাবে আমরা পার হই মাটির রাস্তা। আমরা এসব অলৌকিক ঘটনা শুনে বলি, এসব কী করে সম্ভব? আসলে এসব সম্ভব। আল্লাহর প্রিয়পাত্রদের জন্য এসব খুবই সাধারণ ঘটনা। আর আল্লাহর প্রিয়পাত্র হওয়ার জন্য হালাল খাদ্য, হালাল পোষাক ও হালাল আয়-রোজগারের কোনো বিকল্প নেই।

এ সম্পর্কিত আরও খবর