নারী কেবল নারী নয়। নারী মানেই অবলা এই ধারণাও যথার্থ নয়। সভ্যতার ক্রম বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে তাল মিলিয়ে সমাজের তাবৎ বিবর্তনে নারীর প্রয়োজনীয়তা, উপস্থিতি ও ভূমিকা এটাই প্রমাণ করে।
নারী মানেই সার্থক কারিগর ও অনুপ্রেরণা। কবি কাজী নজরুল ইসলাম নারীর মহিমায় বলেছেন, ‘এ পৃথিবীর যত মহান কীর্তি, অর্ধেক তার গড়িয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর।’
তবে এটাও সত্য নারীর জন্য যুদ্ধ-বিগ্রহ, হানাহানি ও রক্তারক্তিও কম ঘটেনি পৃথিবীতে। যেভাবেই বিবেচনা করা হোক না কেন, বিশ্ব সৃষ্টি থেকে আজ অবদি পুরুষের প্রেম-প্রেরণা, মোহ-ভালোবাসা, সুখ-দুঃখ, যন্ত্রণা-হিংস্রতার প্রধান এবং অন্যতম কারণ হিসেবে বিবেচিত হয়েছে নারী।
এবার বিশ্ববাসী অন্য এক নারীর রূপ দেখল। যে তার স্বামীর রেখে যাওয়া অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করে স্বামীর স্বপ্নপূরণে এগিয়ে এলেন।
তুরস্কের সাকরিয়া প্রদেশের সুগৎলু জেলা শহরে এক নবনির্মিত মসজিদে অলঙ্করণের কাজ করছিলেন এক আরবি ক্যালিগ্রাফার। তার সুনিপুণ শৈল্পিক হাতে মসজিদের দেয়াল, দরজা এক অনন্য দৃষ্টিনন্দন স্থাপনায় রূপ নিচ্ছিল। দেয়ালে দেয়ালে ফুটে উঠছিল পবিত্র কোরআনের আয়াত ও আরবি হরফের দৃষ্টিনন্দন কারুকাজ। কিন্তু হঠাৎই ওই ক্যালিগ্রাফার মারা যান। নতুন নিযুক্ত ক্যালিগ্রাফার ওই মানের কাজ করতে অপারগতা প্রকাশ করলে এতে চিন্তিত হয়ে পড়েন মসজিদ কর্তৃপক্ষ।
এ সময় ওই ক্যালিগ্রাফারের স্ত্রী মসজিদ কর্তৃপক্ষকে জানান, তিনি তার স্বামীর মতোই কাজ করতে সক্ষম। এরপর কর্তৃপক্ষ তার হাতে তুলে দেয় মসজিদ অলঙ্করণের কাজ। পরে তিনি স্বামীর অসমাপ্ত কাজটি বেশ দক্ষতার সঙ্গে শেষ করেন।
মসজিদ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, স্বামীর অসমাপ্ত কাজ অসামান্য দক্ষতার সঙ্গে সম্পন্ন করেছেন ওই নারী। মৃত ক্যালিগ্রাফারের মতোই তার স্ত্রীর কাজগুলো বেশ আকর্ষণীয় ও দৃষ্টিনন্দন হয়েছে বলে জানান তারা।
তুরস্কের জনপ্রিয় পত্রিকা শাফাক ও আনাদোলুর খবরে বলা হয়েছে, মসজিদ অলঙ্করণের কাজ অসমাপ্ত অবস্থায় মারা যান এক ক্যালিগ্রাফার। তার মৃত্যুর পর স্ত্রীর হাতে আঁকা কোরআনের আয়াতের ক্যালিগ্রাফি ও আলপনাগুলোতে যেন মৃত স্বামীরই অনন্য প্রতিভা ফুটে ওঠে। তবে পত্রিকাটি তাদের পুর্ণ পরিচয় প্রকাশ করেনি।