চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১০ আগস্ট হজ অনুষ্ঠিত হতে পারে। চলতি বছর পবিত্র হজ পালন করতে বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজযাত্রী সৌদি আরব যাবেন। তার মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৭ হাজার ১৯৮ জন ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ১ লাখ ২০ হাজার হজযাত্রী যাবেন।
বাংলাদেশ থেকে হজপালনে আগ্রহীদের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার কারণে ই-হজ পদ্ধতিতে প্রাক-নিবন্ধন থেকে চূড়ান্ত নিবন্ধন পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। প্রাক-নিবন্ধিতদের মধ্য থেকে নির্দিষ্ট টাকা ব্যাংকে জমা দিয়ে চূড়ান্ত নিবন্ধন করতে হয়। কিন্তু তা চলছে খুব ধীরগতিতে। ধীরগতির পেছনে অনেকগুলো কারণ বিদ্যমান। এর অন্যতম হলো- পাসপোর্টের সঙ্কট ও যথাযথ প্রচারের অভাব।
বাংলাদেশি হজযাত্রীদের হজযাত্রা নিষ্কণ্টক করতে সরকার দ্বিতীয় বারের মতো হজ ক্যালেন্ডার প্রকাশ করেছে। এমতাবস্থায় যথাযথ প্রচারের অভাব আর হজযাত্রীদের যথাসময়ে পাসপোর্ট না পাওয়ার কারণে হজের চূড়ান্ত নিবন্ধন কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। বেসরকারি হজ এজেন্সিসহ হজ পালনেচ্ছুদের প্রত্যাশা, হজযাত্রীদের পাসপোর্ট সহজে ও দ্রুত পাওয়ার ব্যবস্থা করতে যথাযথ কর্তৃপক্ষ উদ্যোগ নেবেন।
১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে সরকারি ব্যবস্থাপনায় নিবন্ধন শুরু হওয়ার পর গত ১৯ দিনে মাত্র অর্ধেক কোটা পূরণ হয়েছে। এ কারণে নিবন্ধনের সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রীদের নিবন্ধন আগামী ১২ মার্চ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। সোমবার (৪ মার্চ) ধর্ম মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বার্তা২৪.কমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। সরকারি ব্যবস্থাপনায় নিবন্ধনের সময়সীমা ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ৫ মার্চ পর্যন্ত ছিল।
সরকারি নিবন্ধনের মতো ১৭ ফেব্রুয়ারি বেসরকারি ব্যবস্থাপনার হজ নিবন্ধন চলছে আরও ধীরগতিতে। গত ১৬ দিনে মাত্র চার হাজার জন নিবন্ধন করেছেন। নির্দিষ্ট সময় আগামী ১০ মার্চ পূরণ হতে আর মাত্র ছয় দিন বাকি আছে। এ সময়ের মধ্যে প্রাক-নিবন্ধনের ৪ লাখ ৭৯ হাজার ৮১৫ নম্বর ক্রমিক পর্যন্ত হজযাত্রীরা নিবন্ধনের সুযোগ পাবেন। এই ৬ দিনে নিবন্ধন করতে হবে আরও প্রায় এক লাখ ১৬ হাজার ব্যক্তিকে। অর্থাৎ প্রতিদিন নিবন্ধন করতে হবে ১৯ হাজার ৩২৬ জনকে; যা প্রায় অসম্ভব।
সুতরাং সরকারি ব্যবস্থাপনার মতো বেসরকারি ব্যবস্থাপনার হজ নিবন্ধনে যে সময় বাড়ানো হবে, এটা প্রায় নিশ্চিত। তবে এ ক্ষেত্রে প্রাক-নিবন্ধনের ৪ লাখ ৭৯ হাজার ৮১৫ নম্বর ক্রমিকের মধ্যে থাকা হজযাত্রীরা আর সুযোগ পাবেন না।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নির্দিষ্ট ক্রমিকের মধ্যে থাকা প্রাক-নিবন্ধিতরা যথাসময়ে হজ নিবন্ধন সম্পন্ন না করলে তারা এ বছর হজ পালনে আগ্রহী নন মর্মে বিবেচনা করে পরবর্তী ক্রমিকের প্রাক-নিবন্ধিত ব্যক্তিদের নিবন্ধনের জন্য আহ্বান জানানো হবে।
তবে বেসরকারি হজ এজেন্সির মালিকরা আশা করছেন, সময়মতো কোটা পূরণ হয়ে যাবে। তারা বলছেন, নিবন্ধনের শুরুতে গতি কিছুটা কম থাকে। নিবন্ধনের ঘোষণার পর হজযাত্রীদের টাকা সংগ্রহ করতে কিছুটা সময় লাগে। এরপর শেষ দিকে গতি অনেক বেড়ে যায়। আশা করছি, সময়মতো হজযাত্রীরা নিবন্ধন সম্পন্ন করবেন।
এ বছর সরকারি ব্যবস্থাপনায় প্যাকেজ-১ এ চার লাখ ১৮ হাজার ৫০০ টাকা এবং প্যাকেজ-২ তে তিন লাখ ৪৪ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় সর্বনিম্ন প্যাকেজ নির্ধারণ করা হয়েছে তিন লাখ ৪৫ হাজার ৮০০ টাকা নির্ধারণ করেছে।
নিবন্ধনের জন্য যোগ্যতা অর্জনকারী হজ এজেন্সির সংখ্যা ৪১৩টি। এর বাইরে কোনো এজেন্সির সঙ্গে হজের লেনদেন করতে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
সরকারি ও বেসিরকারি উভয় ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রীদের নিবন্ধনের জন্য এমআরপি পাসপোর্ট থাকতে হবে এবং পাসপোর্টের মেয়াদ হজের দিন থেকে পরবর্তী ৬ মাস অর্থাৎ ২০২০ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।
এদিকে আসন্ন হজকে সামনে রেখে হজযাত্রী নিবন্ধন সংক্রান্ত বুলেটিন প্রকাশনা শুরু করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। মঙ্গলবার (৫ মার্চ) থেকে প্রতিদিন নিয়মিতভাবে এ বুলেটিন প্রকাশিত হবে। বুলেটিনে হজ নিবন্ধনের সর্বশেষ তথ্য থাকবে।