পবিত্র শবেবরাত ২১ এপ্রিল (১৪ শাবান) দিবাগত রাতেই বলে সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মো. আবদুল্লাহ।
মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) বিকেল ৪টায় সচিবালয়ের নিজ দফতরে শাবান মাসের চাঁদ দেখার বিষয়ে বিশিষ্ট আলেমদের সমন্বয়ে গঠিত ১১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির সুপারিশ প্রকাশকালে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান ধর্ম প্রতিমন্ত্রী।
এ সিদ্ধান্তের ফলে শবেবরাতের তারিখ নিয়ে সৃষ্ট ধুম্রজালের অবসান হলো। এর আগে ৬ এপ্রিল সন্ধ্যায় জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির বৈঠকের পর ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মো. আবদুল্লাহ জানিয়েছিলেন, (৬ এপ্রিল) দেশের কোথাও শাবান মাসের চাঁদ দেখা যায়নি। এ কারণে ৮ এপ্রিল থেকে শাবান মাস গণনা শুরু হবে এবং ২১ এপ্রিল দিবাগত রাতে পবিত্র শবেবরাত পালিত হবে।
ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর ঘোষণার পর ‘মজলিসে রুইয়াতুল হিলাল’নামের একটি সংগঠন দাবি করে, ৬ এপ্রিল খাগড়াছড়িতে চাঁদ দেখা গেছে ৬টা ৩৫মিনিটে, যা স্থানীয় পর্যায়ে অনেকে দেখেছেন। তাদের দাবি, মুন্সিগঞ্জেও সেদিন চাঁদ দেখা গেছে।
সংগঠনটি আরও দাবি করে, চাঁদ দেখার বিষয়টি আমরা সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসন ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনকে জানিয়েছিলাম। কিন্তু তারা কেউ আমলে না নিয়ে শাবান মাস ও শবেবরাতের তারিখ ঘোষণা করেন।
পরে মজলিসে রুইয়াতুল হিলালের পক্ষে সংবাদ সম্মেলন করা হলে এটা নিয়ে বিতর্ক এড়াতে ১৩ এপ্রিল জরুরি বৈঠক ডাকে সরকার। বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সভাকক্ষে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে ভিন্নমত প্রদানকারীরাও যোগ দেন। দীর্ঘ আলোচনার পর শাবান মাসের চাঁদ দেখা নিয়ে বিতর্কের অবসান ঘটাতে ১১ সদস্যের সাব-কমিটি গঠন করে করা হয়। কমিটিকে শবেবরাতের আগে ১৭ এপ্রিলের মধ্যে তাদের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানোর জন্য বলা হয়।
কমিটির প্রধান হিসেবে ছিলেন মিরপুর মারকাজুদ দাওয়ার শিক্ষাপরিচালক মাওলানা মুফতি আব্দুল মালেক। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- শোলাকিয়া ঈদগাহের ইমাম আল্লামা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ, বেফাকের মহাসচিব মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস, গোপালগঞ্জ গওহরডাঙ্গা মাদরাসার মুহতামিম মুফতি রুহুল আমীন, শায়খ যাকারিয়া (রহ.) ইসলামিক রিসার্চ সেন্টারের মহাপরিচালক মুফতি মিজানুর রহমান সাঈদ, মসজিদুল আকবর কমপ্লেক্সের মুহতামিম মুফতি দিলাওয়ার হোসাইন, তেজগাঁও মদিনাতুল উলুম কামিল মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক আল আজহারি, লালবাগ মাদরাসার মুহাদ্দিস মুফতি মো. ফয়জুল্লাহ, লালবাগ মাদরাসার প্রধান মুফতি মাওলানা ইয়াহ্ইয়া, মোহাম্মদপুর জামেয়া রাহমানিয়ার প্রিন্সিপাল মুফতি মো. মাহ্ফুজুল হক ও বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম মুফতি মাওলানা মুহাম্মদ মিজানুর রহমান।
তবে মজলিসে রুইয়াতুল হিলালের প্রেসিডেন্ট এবিএম রুহুল হাসানের দাবি, ওই বৈঠকে তাদের বক্তব্য ঠিকমতো শোনা হয়নি। তাই বিষয়টির সমাধান চেয়ে সোমবার (১৫ এপ্রিল) হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন তারা।
তখন ২০ এপ্রিল দিবাগত রাতে শবেবরাত ঘোষণার নির্দেশনা চেয়ে রিট দায়েরের অনুমতি বিষয়ক শুনানিতে সোমবার (১৫ এপ্রিল) বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ বলেন, ‘এটা ধর্মীয় সেনসেটিভ ইস্যু। এটা আদালতের বিষয়বস্তু না করাই ভালো। আপনাদের (আবেদনকারীদের) বক্তব্য আপাতত ইসলামিক ফাউন্ডেশনে লিখিত আকারে জমা দেন। তারা যদি আমলে না নেন, ১৭ তারিখে। তাহলে আমাদের কাছে আসবেন। আমরা তখন ব্যবস্থা নেবো।’