বেসরকারি হজ এজেন্সির মালিকরা মক্কা-মদিনায় এতদিন অফিসিয়াল ভিসা (স্টিকার) ব্যবহার করলেও আসন্ন হজে সেটি পাবেন না বলে জানিয়েছে সৌদি সরকার।
মক্কাস্থ দক্ষিণ এশীয় মোয়াল্লেম সংস্থা মোয়াচ্ছাছার বরাত দিয়ে বাংলাদেশের ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় রোববার (২৮ এপ্রিল) এ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করেছে। জারিকৃত নির্দেশনায় দেশের হজ এজেন্সি মালিকদের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
তারা বলছেন, এর ফলে এজেন্সি মালিকদের সাধারণ হাজীদের মতো ভিসা নিতে হবে। ফলে মক্কায় গিয়ে তাদের পাসপোর্ট স্থানীয় মোয়াল্লেমের কাছে জমা রাখতে হবে। এতে তাদের যাতায়াত নিয়ন্ত্রিত হবে। তাদের অধীনে নিয়ে যাওয়া সাধারণ হাজীরা মক্কা-মদিনা ও জেদ্দায় কোনো সমস্যায় পড়লে তারা কোনো ভূমিকা রাখতে পারবেন না।
তাছাড়া সাধারণ হজযাত্রী হওয়ায় তাদেরকেও এক হাজার ৮৯ রিয়াল বা সাড়ে ২৪ হাজার টাকা অতিরিক্ত দিতে হবে। এতে ব্যাপক অসুবিধায় পড়তে হবে তাদের।
বাংলাদেশ থেকে এ বছর এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজযাত্রী সৌদি আরব যাবেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় সাত হাজার ১৯৮ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় যাবেন এক লাখ ২০ হাজার হজযাত্রী। সরকারি ব্যবস্থাপনার হাজীরা সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে গেলেও বেসরকারি হাজীরা এ বছর মোট ৫৯৯টি এজেন্সির মাধ্যমে সৌদি আরবে যাবেন। এ জন্য গাইড ও মোনাজ্জেম যাবেন মোট চার হাজার ৫৮৮ জন।
২০০১ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত সময়ে মোনাজ্জেমরা (এজেন্সি মালিক বা তাদের প্রতিনিধি) হজের আগে ও হজের সময় অফিসিয়াল ভিসা (স্টিকার) নিয়ে সৌদিতে যেতেন। এতে তাদের পাসপোর্ট সৌদির মোয়াল্লেম অফিসে জমা রাখা হয় হতো না। তারা পাসপোর্ট সঙ্গে নিয়ে ঘুরতে পারতেন। এতে তারা মক্কা-মদিনায় চলাচলে সুবিধা পেতেন। তাদের কোনো হাজী সমস্যায় পড়লে তারা দ্রুত ছুটে যেতে পারতেন। কিন্তু সাধারণ হজযাত্রীরা জেদ্দায় পৌঁছানোর পর স্থানীয় মোয়াল্লেম অফিসে তাদের পাসপোর্ট জমা রাখা হয়। কিন্তু এবার নতুন আইন করেছে সৌতি কর্তৃপক্ষ।
বিষয়টি গত ১৯ মার্চ মক্কাস্থ দক্ষিণ এশীয় মোয়াল্লেম সংস্থা (মোয়াচ্ছাছা) বাংলাদেশের ধর্ম মন্ত্রণালয়কে চিঠির মাধ্যমে জানিয়েছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, আসন্ন হজে বেসরকারি এজেন্সি মালিকেরা আর অফিসিয়াল ভিসা ব্যবহার করতে পারবেন না। তাদেরকে সাধারণ হাজীদের মতো ভিসা গ্রহণ করতে হবে। মোয়াচ্ছাছা এক মাসেরও বেশি আগে বিষয়টি ধর্মমন্ত্রণালয়কে জানালেও ধর্মমন্ত্রণালয় গত ২৮ এপ্রিল এজেন্সি মালিকদের জানিয়েছে। আর এ খবরে এজেন্সি মালিকদের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন এজেন্সির মালিক জানিয়েছেন, সাধারণ ভিসায় সৌদি গেলে হজের সময় তাদের অনেক অসুবিধায় পড়তে হবে। হাজীরা কোনো সমস্যায় পড়লে তখন সমাধান করা কঠিন হয়ে যাবে। তাছাড়া তাদের অতিরিক্ত সাড়ে ২৪ হাজার টাকাও ব্যয় করতে হবে।
ধর্মমন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সৌদি সরকার প্রতি বছর নতুন নতুন বিষয় পরীক্ষা করে থাকে। এ বিষয়টি এ বছর নতুন সংযোজন করেছে তারা। এটি সব দেশের জন্যই প্রযোজ্য। কিন্তু তারপরও অসুবিধার কথা জানিয়ে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সৌদি আরবকে এ পদ্ধতি বাতিলের আহ্বান জানানো হবে।