ইসলামিক ফাউন্ডেশনের (ইফা) মহাপরিচালক (ডিজি) সামীম মোহাম্মদ আফজাল অফিস থেকে প্রায় ৫০টি ফাইল নেওয়ার চেষ্টা করেছেন বলে জানিয়েছেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মো. আবদুল্লাহ।
মঙ্গলবার (১৮ জুন) দুপুরে সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বিশ্বস্ত সূত্রে জানতে পেরেছি তিনি শনিবার (১৫ জুন) অফিসে এসে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সচিবকে জানিয়েছেন তিনি পদত্যাগ করবেন। আমাকেও সেটি জানিয়েছিলেন। পরে শুনি তিনি ৫০টি ফাইল নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন। তিনি ফাইগুলো কেন নিতে চেয়েছিলেন সেটা বোধগম্য নয়। কিন্তু তিনি পদত্যাগ করেননি। অব্যহতি দেওয়ার অনুরোধ জনিয়েছেন।
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের অচলাবস্থা কাটাতে সংস্থাটির মহাপরিচালক নিজেই পদত্যাগ করবেন বলে আশা প্রকাশ করে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ডিজিকে পদত্যাগ করতে বলা হবে না। শুভবুদ্ধির উদয় হলে, আশা করি তিনি নিজেই পদত্যাগ করবেন।’
তিনি বলেন, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক ভালো মানুষ, তিনি আমাদের লোক। ১০ বছর তিনি এখানে দায়িত্বে ছিলেন। তিনি বড় রোগে ভুগছেন। তার শারিরিক অবস্থাও ভালো না। কিছুদিন আগে তার ছেলে আত্মহত্যা করে মারা গেছেন। সেটা নিয়েও তিনি মানসিকভাবে ভালো নেই।
শেখ মো. আব্দুল্লাহ বলে, সবকিছু মিলে তিনি বলেছেন শনিববার তিনি পদত্যাগ করে চলে যাবেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত তিনি পদত্যাগ করেননি। কেন করেননি তা জানি না। আশা করি, তিনি ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ক্ষতি করবেন না। সংস্থাটির মঙ্গল কামনা করে তিনি সিদ্ধান্ত নেবেন। ইসলামিক ফাউন্ডেশনে যা চলছে সেটি অনাকাঙ্খিত, অনভিপ্রেত। সবার প্রতি আহ্বান জানাব যাতে কোনো বিশৃঙ্খলা না হয়। এটা ডাইভার্ট হয়ে অন্যদিকে চলে না যায়। সেই মোতাবেক ব্যবস্থা নিতে হবে।
তিনি জানান, পরিচালকরা সোমবার (১৭ জুন) মিটিং করে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি একজন অক্ষম-অসুস্থ মানুষ। তাকে এখন নিজে থেকে অব্যহতি নিয়ে চলে যাওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। সকল পরিচালক এ বিষয়ে একমত হয়েছেন সে বিষয়ে তাকে অবহিত করা হবে। এ সময় ইফার অচলাবস্থা মোটেও কাম্য নয় বলে মন্তব্য করেছেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘সংস্থাটিতে অনিয়ম ও বিশৃঙ্খলা হলে তা তদন্ত করবে মন্ত্রণালয়।’
ইসলামিক ফাউন্ডেশনে পলিটিক্যাল মোটিভেশনের চেয়ে রিলিজিয়াস মোটিভেশনটা কাজে লাগানোর কথা জানিয়ে শেখ মো. আবদুল্লাহ বলেন, ‘রিলিজিয়াস মোটিভেশনটা কিন্তু ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মূল এবং প্রধান কাজ। জঙ্গি, মাদকাসক্তি নিরসনে তৎপরতা, সন্ত্রাসবাদ এগুলো সম্পর্কে কোরআন-হাদিসে এত সুন্দর সুন্দর ব্যাখ্যা এবং এত নির্দেশনা আছে সেগুলো যদি একজন মুসলমান গ্রহণ করে তাহলে কোনো দেশে কিন্তু সন্ত্রাসবাদ হতে পারে না।’
১০ জুন ইফার ডিজিকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় ধর্ম মন্ত্রণালয়। ক্ষমতার অপব্যবহারসহ নানা অভিযোগে কেন তার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করা হবে না, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের দেওয়া এমন নোটিশের পর থেকেই ইসলামিক ফাউন্ডেশনে সৃষ্টি হয়েছে অচলাবস্থা। আবার সংস্থাটির কর্মকর্তারাও চাচ্ছেন, সামীম মোহাম্মদ আফজাল ইফার ডিজির পদ থেকে পদত্যাগ করুক।